পুজো মিটতেই হাতির দলকে দ্রুত ঝাড়খণ্ড পাঠাতে তৎপর হল বন দফতর। বৃহস্পতিবার থেকেই কেন্দ্রীয়ভাবে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে পথ দিয়ে হাতি যাবে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের সহযোগিতা পেতে লালগড় ও পিড়াকাটায় বুধবার বৈঠকও করে বন দফতর। স্থানীয় নিার্বচিত পঞ্চায়েত সদস্য, বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যদের পাশাপাশি গ্রামের মানুষকেও বৈঠকে ডাকা হয়। মেদিনীপুর ডিভিশনের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “জঙ্গল লাগোয়া গ্রামবাসীর সাহায্য ছাড়া অভিযান চালানো কঠিন। বিষয়টি বোঝাতেই বৈঠক। তাছাড়াও দুর্ঘটনা এড়াতে অভিযান চালানোর সময় গ্রামের মানুষ যাতে সতর্ক থাকেন, জঙ্গলে না যান, সেটিও জানানো হল।”
বর্তমানে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় প্রায় ১৩০টি হাতি রয়েছে। মাঠে পাকা ধান। হাতির দল ধান খেয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে চাষিদের। বাড়বে ক্ষোভও। তাছাড়াও পুজোর সময় হাতির দল জঙ্গলে থাকায় অঘটনের আশঙ্কাও ছিল। তাই পুজোর আগেই হাতি তাড়াতে দক্ষিণবঙ্গে চারটি অত্যাধুনিক গাড়ি ‘ঐরাবত’ দেয় সরকার। ঐরাবত পেয়ে অভিযানও শুরু করেছিল বন দফতর। মানিকপাড়ায় থাকা ৮০টি হাতির দলকে নিয়ে আসে চাঁদড়ায়। আগে থেকেই চাঁদড়া ও পিঁড়াকাটাতে প্রায় ৫০টি হাতির দল ছিল। দু’টি দলকে এক জায়গায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা ছিল বন দফতরের। কিন্তু মানিকপাড়ার দলটিকে চাঁদড়াতে নিয়ে আসা গেলেও চাঁদড়া থেকে হাতির দলকে সরানো যায়নি।
বন দফতর জানিয়েছে, গ্রামবাসীর সঙ্গে আলোচনা করে অভিযান শুরুর পরেও আউসাবাঁধি, মৌরা-সহ কয়েকটি গ্রামের কিছু মানুষ বাধা দেন। বন দফতর বোঝানোর চেষ্টা করেছিল, অভিযান চালানোর সময় যে সামান্য ক্ষতি হবে, সেই ক্ষতিপূরণও দেবে বন দফতর। কিন্তু হাতি জঙ্গলে থেকে গেলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে। কারণ, হাতির দল খেতের পাকা ধান খেয়ে সাবাড় করবে। যদিও গ্রামবাসীরা সহমত না হওয়ায় বাধ্য হয়ে অভিযান বন্ধ রাখা হয়। পুজোর সময় অঘটন ঘটলে বিক্ষোভের আশঙ্কায় বন দফতরও জোর করে হাতি তাড়াতে ঝুঁকি নেয়নি। ফলে ওই এলাকায় প্রায় ২০০ বিঘের মতো জমির শস্যহানিও ঘটেছে বলে বন দফতর জানিয়েছে। তারই সঙ্গে হাতির একটি দল বিনা অভিযানেই পৌঁছে গিয়েছে মৌপালে। এ বার পুজো পেরোতেই ফের উদ্যোগী হয়েছে বন দফতর।
বর্তমানে বিভিন্ন জঙ্গলে ছোট ছোট ভাগে ছড়িয়ে রয়েছে হাতির দল। চাঁদড়া রেঞ্জের ডুমুরকোটাতে রয়েছে ৫০-৬০টির একটি দল, ভালুকখুনিয়াতে ২০-২৫টির দল, মৌপালে ৩৫-৪০টি, লালাগড়ের ঝিটকায় ১টি ও হেতাশোলে ১টি করে। বন দফতর জানিয়েছে, বুধবার অভিযান চালিয়ে মৌপালে থাকা হাতির দলকে পিঁড়াকাটায় নিয়ে যাওয়া হবে। তারপর আজ, বৃহস্পতিবার চাঁদড়া থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে অভিযান চালানো হবে। চাঁদড়া থেকে হাতির দলটিকে নিয়ে যাওয়া হবে পিঁড়াকাটায়। সেখানে দু’টি দলকে এক করে ভেদুয়া হয়ে লালগড়, মালাবতী দিয়ে ঝাড়খণ্ড সীমানায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ডিএফও বলেন, “আমরা প্রথমে চেষ্টা করব যত দ্রুত হাতির দলকে লালগড়ে পৌঁছে দেওয়ার। তারপর ঝাড়খণ্ড সীমানা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy