E-Paper

বন্যার জমা জলে দুর্গন্ধ, বাড়ছে দূষণ

প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ঝাড়খণ্ডের গালুডি জলাধার থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়ার কারণে সুবর্ণরেখা নদীর জল উপচে যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৫ ০৯:০৩
জমে জল।

জমে জল। —ফাইল চিত্র।

প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে সুবর্ণরেখা নদীর জলে ‘বন্দি’ এগরার সাহাড়া-সহ একাধিক গ্রাম। সেই জলে ভেসেছে মাছের ভেড়ি, পুকুর, রাস্তাঘাট থেকে আস্তাকুড়। এত দিন ধরে জল জমে থাকায় মাছ মরে পচেছে। এছাড়া, অন্য পচনশীল সামগ্রীরও একই হাল হয়েছে। ফলে এলাকার জমা জল থেকে ছড়াচ্ছে দূষণ-দুর্গন্ধ। দিনে দিনে এলাকায় টেকা দুষ্কর হচ্ছে গ্রামবাসীর কাছে। তাঁরা দাবি করছেন, প্রশাসনের তরফে প্রত্যেক বাড়িতে চুন ও ব্লিচিং ছড়ানো এবং ত্রাণ দেওয়া হোক।

এগরায় জলবন্দি এলাকার ছবিটা যখন এ রকম, তখন সুবর্ণরেখার জলেই ডুবে যাওয়া রামনগর-১ ব্লকের একাধিক গ্রামে মিলছে ত্রাণ। সেখানে স্থানীয় বিধায়ক অখিল গিরির উদ্যোগে গ্রামবাসীদের ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে।

প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ঝাড়খণ্ডের গালুডি জলাধার থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়ার কারণে সুবর্ণরেখা নদীর জল উপচে যায়। তাতে এগরার সাহাড়া, চকমুরারি, পল্লিশ্রী, রামনগর-১ ব্লকের বারবাটিয়া, বাখারপুর, কাণ্ডপসরা -সহ কয়েকটি গ্রামে জল ঢুকে যায়। এগরার গ্রামগুলিতে ভেসে গিয়েছে পুকুর ও জলাশয়। তাতে প্রচুর মাছ মরেছিল। মাঝে বৃষ্টি থামায় কিছুটা জল নেমেছিল। কিন্তু এরপর লাগাতার নিম্নচাপের বৃষ্টিতে আবার এলাকায় জলবন্দি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সাহাড়া ও চকমুরারি গ্রামের রাস্তায় হাঁটু সমান জল দাঁড়িয়ে। সাহাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়া রাস্তায় কোমর সমান জল জমেছে। এগরা-১ ব্লক প্রশাসনের তরফে ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে যাতায়াতের জন্য টিউবের ভেলা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, জলবন্দি পরিস্থিতিতে লতাপাতা, আবর্জনা, মরা মাছ পচে এলাকায় পচা দুর্গন্ধ। জল দূষণের কারণে চর্মরোগ ও পেটের রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। তাই দূষণ নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে চুন ও ব্লিচিং ছড়ানোর দাবি উঠছে। সাহাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের অবশ্য দাবি, তিন দফায় জলবন্দি এলাকাগুলিতে শিবির করে চুন ছড়ানো-সহ ত্রাণের চাল ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। গ্রামীন সম্পদ কর্মীদের মাধ্যমে জলবন্দি এলাকাগুলি জীবানুনাশক ছেটানো হয়েছে। এগরা-১ এর বিডিও দুর্গাপ্রসাদ ঘোষ বলেন, ‘‘জলবন্দি এলাকায় যোগাযোগের জন্য টিউবের ভেলা দেওয়া হয়েছে। তিন দফায় চুন ও ব্লিচিং ছড়ানো, ত্রাণের চাল ও ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে আরও ব্লিচিং ছড়ানো হবে।’’

রামনগর-১ ব্লকের বারবাটিয়া, বাখারপুর, কাণ্ডপসরা গ্রামগুলিতে মূল রাস্তা, চাষের জমি, পান বরজও এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে জলের তলায়। সেখানে বৃহস্পতিবার থেকে অখিলের উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। তিনি নিজে মোটরবাইকে চেপে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ত্রাণ তুলে দেন। শুক্রবারও বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল, আলু, পেঁয়াজ, সরষে তেল ভর্তি প্যাকেট বিতরণ করা হয়। এ দিন ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে অখিল বলেন, ‘‘সুবর্ণরেখার জল যাতে ঢুকতে না পারে, সে জন্য স্লুসগেট নির্মাণ করা হবে। রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় রাস্তা তিন থেকে চার ফুট উঁচু করার জন্যজেলা পরিষদকে বলেছি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Egra Ramnagar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy