হোটেলে গিয়ে মিক্সড চাউমিন, চিলি চিকেন, মোগলাই- এ সব তো সারা বছরই খাওয়া হয়। চাইনিজ, মোগলাই ছেড়ে পুজোর ক’টা দিন পাত পেড়ে খাঁটি বাঙালি রান্না পেলে কেমন হয়। খড়্গপুরে অবশ্য চাইলেই খাঁটি বাঙালি রান্না মেলা ভার। কারণ একটাই, বাঙালি রান্না পরিবেশন করতে নিমরাজি রেলশহরের অধিকাংশ রেস্তোরাঁ।
খড়্গপুর শহরে নয় নয় করে প্রায় চার লক্ষ লোকের বাস। ‘মিনি ইন্ডিয়া’ রেলশহরে তামিল, তেলুগু সম্প্রদায়ের মানুষের পাশাপাশি রয়েছেন অনেক বাঙালিও। উত্তর ভারতের রকমারি পদ হোক বা দক্ষিণ ভারতীয় ইডলি সম্বর— চাইলেই ভিন্ রাজ্যের নানা খাবার মেলে রেলশহরে। যদিও লুচি, বেগুনভাজা বা ভাত, সোনা মুগের ডাল, আলু পোস্ত— শহরে পছন্দের বাঙালি রান্না পেতে কালঘাম ছুটবে।
ইন্দার বিদ্যাসাগরপল্লির বাসিন্দা গৃহবধূ চন্দ্রস্পর্শা ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘পুজোর চারদিন বাড়ির হেঁশেল সামলাতে কার আর ভাল লাগে বলুন। কিন্তু এখানে ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই। খড়গপুরে নামকরা জনপ্রিয় হোটেল বা রেস্তোরাঁগুলিতে কোনও বাঙালি রান্না পাওয়া যায় না।’’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘ভিন্ রাজ্যের মানুষ পুজোর এই চারদিন বাঙালি থালির সন্ধান করে। আর আমরা বাঙালি হয়েও নিজেদের সংস্কৃতি হারাতে বসেছি।’’
শহরের আর এক বাসিন্দা তপোব্রত হালদার বলেন, ‘‘পুজোর ক’দিন তো বাইরেই খাওয়াদাওয়া। অষ্টমীর অঞ্জলির পর ফুলকো লুচি, বেগুন ভাজা, ছোলার ডাল হোক বা নবমীর দিন ইলিশ, পাঁঠার মাংস— খড়গপুরে এ সব পদ মেলে না বললেই চলে। তাই ওই চাইনিজ খেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়।’’
বাঙালি পদ রান্নায় রেস্তোরাঁগুলির অনীহা কেন? খড়গপুরের ছোট ট্যাংরা এলাকার এক রেস্তোরাঁর শেফ ওম বাহাদুর থাপা বলছিলেন, ‘‘এ বছর পুজোর চার দিন চাইনিজ, সি ফুড ও মোগলাই খাবারই রান্না হবে। বাছাই করা কিছু মেনুই পুজোর সময় পাওয়া যাবে।’’ খড়গপুরে রূপনারায়ণপুরের এক নামী হোটেল কর্তৃপক্ষেরও বক্তব্য, ‘‘বাঙালি রান্না করার হ্যাপা অনেক বেশি। তাই পুজোর চার দিন চাইনিজ, তন্দুর বা মোগলাই খাবারই থাকবে মেনু তালিকায়। ভিড়ের জন্য অন্য কিছু করার ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy