Advertisement
১৯ জুন ২০২৪
ফেসবুক মন্তব্যে অস্বস্তি তৃণমূলে

দ্বন্দ্ব বেআব্রু, হুমকি এ বার মামলা রুজুর

শনিবার দিনভর মেদিনীপুর শহরের এই বিষয়টি নিয়ে জেলা তৃণমূলের অন্দরে চর্চা হয়েছে। দলের এক সূত্রে খবর, বিষয়টি নিয়ে দলের শহর সভাপতি তথা বিধায়ক আশিস চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা হয়েছে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৭ ০১:১০
Share: Save:

রাশ টানা দূর অস্ত্, যুবনেতার ফেসবুক-মন্তব্য ঘিরে তৃণমূলের কোন্দল আরও বেআব্রু হল মেদিনীপুর শহরে। সৌরভ বসু নামে ওই যুবনেতার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর অনিলচন্দ্র দলবেরা। শনিবার অনিলবাবু বলেন, “আমার নামে মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে। এতে দলের ভাবমূর্তিও নষ্ট হয়েছে। আমি মানহানির মামলা করব।’’ মাঠ ছাড়তে রাজি নন সৌরভও। তাঁর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘মামলা হলে আমিও লড়ব।’’

শনিবার দিনভর মেদিনীপুর শহরের এই বিষয়টি নিয়ে জেলা তৃণমূলের অন্দরে চর্চা হয়েছে। দলের এক সূত্রে খবর, বিষয়টি নিয়ে দলের শহর সভাপতি তথা বিধায়ক আশিস চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা হয়েছে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির। মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতির নজরেও বিষয়টি আনা হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিতবাবু বলেন, “কেউ দলীয় শৃঙ্খলার উর্ধ্বে নয়। দল এ ক্ষেত্রে উপযুক্ত ব্যবস্থাই নেবে।”

ঠিক কী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে? দলের এক সূত্রের দাবি, এ নিয়ে এখনও আলোচনা হয়নি। জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “আচমকা কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক নয়। সব দিক দেখেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে।” তিনি মনে করিয়ে দেন, সপ্তাহ কয়েক আগে ২২ নম্বর ওয়ার্ডেও দলের কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছিল। সেই ক্ষেত্রে আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করা গিয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত গত ৪ অক্টোবর। ওই দিন তৃণমূল কাউন্সিলর অনিলচন্দ্র দলবেরাকে তোলাবাজ বলে গালমন্দ ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন মেদিনীপুরের যুবনেতা সৌরভ বসু। অনিলচন্দ্রবাবু শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। সৌরভও এই ওয়ার্ডের বাসিন্দা। বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে শহরে। চরম অস্বস্তিতে পড়েন জেলা তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বও। দলের এক সূত্রের দাবি, ওই যুবনেতাকে সতর্ক করা হয়েছে। সৌরভের অবশ্য দাবি, বাধ্য হয়েই তিনি ওই পোস্ট করেন। কারণ, দলের সবস্তরে কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। যদিও তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিতবাবু বলেন, “আমি আগে বিষয়টি জানতাম না।’’

এ দিকে, অনিলবাবুর অনুগামীরা দাবি করছেন, যে ঘটনাকে তোলাবাজি বলা হচ্ছে, সেটি একেবারে অন্য ব্যাপার। এলাকায় একটি বিদ্যুতের খুঁটি সরানো প্রয়োজন। তার জন্য বিদ্যুৎ দফতরে টাকা জমা দিতে হয়। তাই ইচ্ছুক এলাকাবাসীর কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিবেকানন্দনগর (ধর্মা) উন্নয়ন কমিটি। এর পিছনে কাউন্সিলরের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদতও ছিল না। ওই কমিটি এ ভাবে চাঁদা সংগ্রহ করে আগেও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্ম করেছে। অনিলবাবু এ দিন বলেন, “উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবেই আমার নামে কুত্সা-অপপ্রচার করা হয়েছে। নেতৃত্বকে জানিয়েছি। আশা করব, শীঘ্রই দল উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।’’

দলের এক সূত্রে খবর, এই কোন্দলে রাশ টানতে শীঘ্রই বৈঠকে বসতে পারেন জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। পাশাপাশি জানা গিয়েছে, জেলা তৃণমূলের আগামী বর্ধিত সভায় ফেসবুকে উল্টোপাল্টা মন্তব্য করা থেকে দলের কর্মীদের বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হবে বলে। জানানো হবে, কেউ শৃঙ্খলাভঙ্গ করলে, কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Group clash TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE