হাসপাতালে মমতা। নিজস্ব চিত্র
রাস্তায় স্ত্রী এবং শাশুড়িকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে পটাশপুর-১ব্লকের সাঁইয়া গ্রামে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর ১১ আগে সাঁইয়া গ্রামের বাসিন্দা মমতা পণ্ডার সঙ্গে মির্জাপুরের বাসিন্দা সন্তোষ রাউতের বিয়ে হয়। অভিযোগ, বিয়ের দু’বছরের পর থেকেই মমতার উপরে স্বামী এবং শ্বশুর বাড়ির লোকেরা অত্যাচার করত। ওই সমস্যা সমাধানে একাধিক বার গ্রামে সালিশি বসেছিল। তবে সুরাহা হয়নি। পরে মমতা দুই সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসেন। সন্তোষ কাজের সূত্রে ভিন্ রাজ্যে থাকে। কয়েকদিন আগে সে মির্জাপুর গ্রামে ফেরে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ সাইকেলে সাঁইয়া গ্রামে যায় সন্তোষ। শ্বশুর বাদল পণ্ডার বাজারে গেলে সে শ্বশুর বাড়িতে ঢোকে। মমতাকে বাড়ি ফিরে যেতে বলে। মমতা রাজি না হলে তাঁকে টানতে টানতে বাড়ি থেকে বার করে আনে সন্তোষ। চিৎকার শুনে মেয়েকে জামইয়ের হাত থেকে ছাড়াতে যান শাশুড়ি নমিতা পণ্ডা। অভিযোগ, সে সময় সন্তোষ হাঁসুয়া দিয়ে নমিতার ডান হাতে কব্জি কেটে দেয়। কনুই-পিঠেও দু’টি কোপ মারে সে। তার পরে মমতার গলায়, পিঠে, পায়ে এলোপাথাড়ি ভাবে কোপায় সন্তোষ।
মমতা ও তাঁর মায়ের চিৎকারে স্থানীয়েরা ছুটে এলে সন্তোষ পালিয়ে যায়। সংজ্ঞাহীন রক্তাক্ত অবস্থায় নৈপুর গ্রামীণ সড়কের ধারে পড়ে থাকে দু’জনে। পরে পটাশপুর থানার পুলিশ গিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে দু’জনকে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের কলকাতার এক হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ঘটনার পরেই মির্জাপুর পেরিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ের এক জঙ্গলে আত্মগোপন করে সন্তোষ। খবর পেয়ে পটাশপুর থানার পুলিশ দুপুরে সেখান থেক সন্তোষকে গ্রেফতার করে।
নৈপুর গ্রামের পঞ্চায়েতের এক সদস্যার স্বামী পঙ্কজ পাহাড়ী বলেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরে দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। একাধিক বার আলোচনা করা হলেও সমস্যা মেটেনি। সেই রাগেই হয়তো সন্তোষ ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে।’’ সন্তোষের শ্বশুর বাদলের কথায়, ‘‘জামাই এবং তার পরিবারের লোকেরা আমার মেয়েকে মারধর করত। সেই কারণে চার মাস আগে মেয়ে আমার কাছে চলে আসে। আজ সন্তোষ সেই রাগে ওকে খুন করতে চেয়েছিল।’’
পটাশপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, নারায়ণগড়ের জঙ্গল থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy