‘গুড মর্নিং ঝাড়গ্রাম’— আর এক দিন পরেই রেডিও বার্তায় ঘুম ভাঙতে চলেছে ঝাড়গ্রামবাসীর। কাল, শনিবার বিকেলে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ এফএম রেডিও স্টেশন আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু হতে চলেছে অরণ্যশহরে। নতুন জেলা ঝাড়গ্রামের মুকুটে পালক জুড়তে চলেছে এই ‘রেডিও মিলন ৯০.৪ এফএম’।
রাজ্যে কলকাতা, শিলিগুড়ি ও আসানসোলে এফএম স্টেশন রয়েছে। তবে মেদিনীপুরের তিন জেলায় এমন উদ্যোগ এই প্রথম। পশ্চিম মেদিনীপুরে আগে কমিউনিটি রেডিও চালু চেষ্টা হলেও প্রকল্প অনুমোদন পায়নি। তবে পূর্ব মেদিনীপুরে এফএম স্টেশন না থাকলেও ময়নায় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিচালিত পরিষেবামূলক কমিউনিটি রেডিও ব্যবস্থা রয়েছে। সে দিক থেকে জঙ্গলমহলের প্রাণকেন্দ্র ঝাড়গ্রাম শহরে এফএম রেডিও চালুর আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।
মেদিনীপুর-খড়্গপুর বাদ দিয়ে কেন ঝাড়গ্রামে এফএম রেডিও-র ভাবনা? রেডিও মিলন যাঁদের প্রকল্প, সেই ‘মিলন সৃজন’ গোষ্ঠীর কর্মকর্তা মিলন চক্রবর্তী জানালেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবনাকে সম্মান জানাতেই তাঁদের এই উদ্যোগ। এই রেডিও স্টেশন থেকে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানের মধ্যে ৬০ শতাংশই হবে ‘লাইভ’ এবং সেখানে থাকবে ঝাড়গ্রামের নিজস্ব সংস্কৃতির ছোঁয়া। স্থানীয় যুবক-যুবতীদের ‘রেডিও জকি’ হিসেবে বেছে কর্মসংস্থানের দিকটিও ভাবা হয়েছে।
২০১২ সালে জঙ্গলমহল উৎসবে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কিছুটা দায়িত্বে ছিলেন মিলনবাবু। ওই সময় মুখ্যমন্ত্রী জানান, ঝাড়গ্রামের স্থানীয় সংস্কৃতির প্রচারে রেডিও স্টেশন হলে খুব ভাল হয়। তার পরই এগিয়ে আসেন মিলনবাবুরা। ওই বছরেই মিলনবাবুদের সংস্থা ১০০ কিলোমিটার পরিসীমার মধ্যে এফএম চালুর অনুমোদন চেয়ে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকে আবেদন করে। মাওবাদী প্রভাবিত এলাকা হওয়ায় অনুমোদন দেওয়ার আগে নিরাপত্তার নানা বিষয় খতিয়ে দেখতে হয়। তাই অনুমোদন পেতে চার বছর গড়িয়েছে।
ঠিক ছিল গত অক্টোবরে মুখ্যমন্ত্রী রেডিও স্টেশনটির উদ্বোধন করবেন। কিন্তু তখনও ছাড়পত্র আসেনি। এখন ঝাড়গ্রাম শহরের সিএফ এন্ড্রুজ মেমোরিয়াল স্কুল লাগোয়া ভবনের দোতলায় ঝাঁ চকচকে স্টুডিয়ো ও সম্প্রচার কেন্দ্র তৈরি। কাল, শনিবার বিকেলে তার উদ্বোধন করবেন পুরপ্রধান দুর্গেশ মল্লদেব। ট্যামি, মৌ, সৌরভ, সোমা, কোয়েলের মতো রেডিও জকিদের সঙ্গে সরাসরি ফোনে কথা বলতে পারবেন শ্রোতারা। শোনা যাবে পছন্দের গান। রেডিও কেন্দ্রের স্থানীয় উপদেষ্টা প্রভাস নিয়োগী জানালেন, একশো কিলোমিটার এলাকা জুড়ে শোনা যাবে অনুষ্ঠান। পশ্চিম মেদিনীপুর ও বাঁকুড়ার কিছু এলাকাতেও এফএম শোনা যাবে। জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিনামূল্যে এফএম রেডিও সেট দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy