Advertisement
০৪ মে ২০২৪

নিরাপত্তায় নজর খড়্গপুর রেলের

মাওবাদী প্রভাবিত এলাকা সহ-বেশ কয়েকটি বড় স্টেশনের নিরাপত্তায় বাড়তি জোর দিল রেল সুরক্ষা বাহিনী (আরপিএফ)। শনিবার খড়্গপুরে রেলের ডিভিশনাল অফিসে এক সাংবাদিক বৈঠক ডেকে কর্তৃপক্ষ জানালেন, গত ১৬ জুন থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত বিশেষ অভিযান চালিয়ে রেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজছে খড়্গপুর রেল।

খড়্গপুর ডিআরএম অফিসে সাংবাদিক বৈঠক। নিজস্ব িচত্র।

খড়্গপুর ডিআরএম অফিসে সাংবাদিক বৈঠক। নিজস্ব িচত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৬ ০১:১৯
Share: Save:

মাওবাদী প্রভাবিত এলাকা সহ-বেশ কয়েকটি বড় স্টেশনের নিরাপত্তায় বাড়তি জোর দিল রেল সুরক্ষা বাহিনী (আরপিএফ)। শনিবার খড়্গপুরে রেলের ডিভিশনাল অফিসে এক সাংবাদিক বৈঠক ডেকে কর্তৃপক্ষ জানালেন, গত ১৬ জুন থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত বিশেষ অভিযান চালিয়ে রেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজছে খড়্গপুর রেল। ইতিমধ্যে যাত্রীদের সহায়তায় টোল-ফ্রি নম্বর চালু হয়েছে। সেই সঙ্গে মাওবাদী প্রভাবিত জঙ্গল এলাকার স্টেশনগুলিতে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন খড়্গপুরের ডিআরএম রাজকুমার মঙ্গলা, সিনিয়র ডিভিশনাল সিকিউরিটি কমিশনার মহেশ্বর সিংহ প্রমুখ। মহেশ্বর বলেন, “আমরা যাত্রীদের জন্য ১৮২ টোল-ফ্রি নম্বরটি চালু করেছি। এই নম্বরে একসঙ্গে তিনজন একইসময়ে কথা বলতে পারবেন। একমাসের বিশেষ অভিযানে আমরা রেল সুরক্ষা বাহিনীকে মানবিক হওয়ার প্রশিক্ষণও দিয়েছি। কোনও যাত্রী দুর্ব্যবহার করলেও সংঘাতে না জড়িয়ে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’

ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে খড়্গপুর ডিভিশনের রেলপথ। এই ডিভিশন দিয়েই উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতের সব ট্রেন যাতায়াত করে। এই শাখায় কখনও ঝাড়খণ্ডে টাটানগরগামী ট্রেনে মাওবাদী হামলা তো কখনও ওড়িশার কটক-সহ বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেনের কামরায় আগুন জ্বালিয়ে নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া চলন্ত ট্রেনে শ্লীলতাহানি, লুঠ, চুরির মতো দুষ্কর্মও হচ্ছে। তাই যাত্রী সুরক্ষায় নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করছে খড়্গপুর ডিভিশন।

এই ডিভিশনের অধীনেই ঝাড়গ্রাম, গিধনি, ঘাটশিলা, রাখামাইনস-সহ বেশ কয়েকটি স্টেশন রয়েছে যা মাওবাদী প্রভাবিত এলাকার মধ্যে প়ড়ে। কিছুদিন আগে এই শাখায় একটি ট্রেনকে আটকে গার্ড, চালককে মারধর করা হয়। এ দিন রেল কর্তারা জানান, স্টেশনগুলির নিরাপত্তায় আরও জোর দেওয়া হবে। ঝাড়গ্রাম, মেচেদার মতো বড় স্টেশনে সিসিটিভি বসানো হবে। টাটানগর শাখার প্রতিটি ট্রেনে ২০ জন করে আরপিএফ দেওয়া হবে। ভদ্রক শাখার ট্রেনেও ৮ থেকে ১০জন করে আরপিএফ দেওয়া হচ্ছে। মহিলাদের নিরাপত্তায় বেশি সংখ্যক মহিলা বাহিনীও মোতায়েন করা হচ্ছে।

রয়েছে অনুপ্রবেশের সমস্যাও। রেল সূত্রে খবর, গত ৬ মাসে এই ডিভিশনে ২৭ জন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে পাকড়াও করা হয়েছে। এ প্রবণতা ঠেকাতে বালেশ্বর, বেলদা, মেদিনীপুর, পাঁশকুড়া, মেচেদা, উলুবেড়িয়া, আন্দুল, সাঁতরাগাছি, টিকিয়াপাড়া-সহ বেশ কয়েকটি বড় স্টেশনে নিরাপত্তা জোরদার করা হচ্ছে। সিনিয়র ডিএসসি মহেশ্বর বলেন, ‘‘আমরা টাটা নগর শাখার বেশ কয়েকটি স্টেশনে বারবার নাশকতা দেখেছি। তাই এই ধরনের স্টেশনগুলি-সহ বড় স্টেশনগুলিতে বাড়তি নজরদারি চালানোর কাজ শুরু করেছি।’’ বৈঠক শেষে খড়্গপুরের ডিআরএম রাজকুমার মঙ্গলার বক্তব্য, ‘‘আমরা নিরাপত্তার দিকটি যেমন গুরুত্ব দিচ্ছি, তেমনই যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যেও নজর দিচ্ছি। বিনা টিকিটের যাত্রী, টিকিটে দালালচক্র বন্ধে ক্রমাগত অভিযান চলছে। ডিভিশনের অধিকাংশ স্টেশনে মোবাইল অ্যাপে অসংরক্ষিত টিকিট কাটার ব্যবস্থাও চালু করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

strengthen kharagpur railway
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE