রেলশহরে পথ অবরোধ।
পুরভোটে জিতেছিলেন বিজেপি-র টিকিটে। দল পাল্টে তৃণমূলে যোগদানের পরে এ বার কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের অধীন রেলের বিরুদ্ধে অনুন্নয়নের অভিযোগ তুলে পথে নামলেন খড়্গপুরের কাউন্সিলর পূজা নায়ডু। রেল-মাফিয়া শ্রীনুর স্ত্রী পূজার নেতৃত্বে সোমবার খড়্গপুরের নিউ সেটলমেন্ট এলাকায় ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা নিমপুরা যাওয়ার রাস্তা অবরোধ করেন। সকাল দশটা থেকে টানা পাঁচ ঘন্টার অবরোধে তীব্র যানজটে ভোগান্তি বাড়ে পথ চলতি মানুষের। রেলের আধিকারিকেরা এলেও অবরোধ তোলা হয়নি। শেষে রেলের এডিআরএম-এর সঙ্গে দেখা করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস মেলায় অবরোধ ওঠে।
২০১০ সাল থেকে রেলের এলাকা খড়্গপুর পুরসভার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তবে পুরসভার মাধ্যমে রেল এলাকার উন্নয়নে রেল কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট সহযোগিতা করেন না বলে বারবার অভিযোগ উঠেছে। পুরভোটের আগে এ নিয়ে রেলের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিল বিগত কংগ্রেস পুরবোর্ড। কিন্তু অবস্থা বদলায়নি। রেলের বস্তি এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ আসেনি। অধিকাংশ ওয়ার্ডে পুরসভার নলবাহিত জলও পৌঁছয়নি। এমনকী রেলের কোয়ার্টারে অধিকাংশ সময়ে নলবাহিত পানীয় জল মেলে বলে অভিযোগ। কোয়ার্টারগুলিও বেহাল। চারিদিকে জমে থাকে আবর্জনা, অবরুদ্ধ নিকাশি। গরম পড়তেই আবার দেখা দিয়েছে জলের সমস্যা।
গত এক সপ্তাহ ধরে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে রেলের জল না পাওয়ায় জলসঙ্কট তীব্র হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কাউন্সিলর পূজার কাছে অভিযোগ জানান স্থানীয়রা। এরপরই স্থানীয়দের একাংশকে নিয়ে অরোরা গেট থেকে নিমপুরা যাওয়ার রাস্তায় অবরোধে নামেন পূজা। রেল কোয়ার্টার সংস্কার, সুষ্ঠু পানীয় জল, পরিচ্ছন্নতার দাবিতে সরব হন অবরোধকারীরা। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসা পূজার জন্য এ ভাবে রেলের বিরুদ্ধাচরণ করা কার্যত রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা বলেই মনে করছেন জেলা রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা। যদিও পূজা বলেন, “এলাকার মানুষ রেলের উদাসীনতায় দুর্ভোগে পড়েছেন। সাত দিন ধরে এলাকায় জল নেই। আমি ওয়ার্ডের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। এখানে বিজেপি বা তৃণমূলের প্রশ্ন নেই। আমরা তো কোনও ঝান্ডাও ব্যবহার করিনি।” এলাকার তৃণমূল নেতা প্রাক্তন কাউন্সিলর শিবাজি রাওয়ের অবশ্য বক্তব্য, “কারা, কেন অবরোধ করছে আমি কিছু জানিনা।”
খড়্গপুরের নতুন পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার কিন্তু পূজার পাশেই দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, “পূজা আমাকে এই বিষয়ে কিছু জানায়নি। তবে রেল এলাকার মানুষ বঞ্চিত হয়ে দুর্ভোগে পড়ে থাকলে যে কেউ আন্দোলন করতেই পারে।” আর এ প্রসঙ্গে রেলের ডিআরএম গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “রেল এলাকার ধারাবাহিক উন্নয়নে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy