নজরদারি: ঝাড়গ্রামে মাংসের দোকানে অভিযান। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
পায়ের লোমে কালো রং করে ভেড়াই মাংসই বিকোচ্ছে খাসির মাংস বলে! দেদার বিক্রি মরা মুরগিরও!
শুধু মাংস দোকান নয়, রেস্তরাঁর ফ্রিজারেও থরে থরে জমানো বাসি মাংসের কাটলেট থেকে ছত্রাক জমে যাওয়া পনির!
ফুড ইন্সপেক্টর না থাকায় ভাগাড় কাণ্ডের পরেও অভিযান নিয়ে কার্যত উদাসীন ছিল ঝাড়গ্রাম পুরসভা। এই নিয়ে আনন্দবাজারে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। তারপরেই টনক নড়ে প্রশাসনের। ঝাড়গ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান দুর্গেশ মল্লদেবের নির্দেশে শনিবার শহরে মাংসের মান পরীক্ষা করতে পথে নামে পুরসভা। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন পুরসভার স্বাস্থ্য ও জনস্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই কাউন্সিলর সিদ্ধার্থ দুবে ও কল্লোল তপাদার। পুরসভার জনস্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিক বংশীধর জানা নিজে দু’হাতে গ্লাভস পরে মাংসের মান পরীক্ষা করেন।
একটি মাংসের দোকানে ভেড়ার মাংসের পায়ের লোমে কালো রং করে খাসির মাংস বলে বিক্রি করার সময় হাতেনাতে ধরা হয় অভিযানে। হাতেনাতে মরা কাটা মুরগির মাংসও বাজেয়াপ্ত করা হয়। জেরায় মুরগি দোকানি জানান, শহরের একটি হোটেল কম দামে মরা মুরগি কেনে। মেন রোডের ধারে একাধিক খাবার হোটেলের রান্নাঘরে অভিযান চালিয়ে পাওয়া যায় ফ্রিজে রাখা বাসি মাংস। কয়েকটি হোটেলে অভিযান চালিয়ে বাজেয়াপ্ত করা হয় ফ্রিজারে থাকা কয়েকদিনের বাসি তড়কা ও অন্যান্য খাবার।
শহরের উড়ালপুল লাগোয়া একটি রেস্তোরাঁয় ফ্রিজে থাকা বাসি মাংস রান্নার করার সময় হাতে নাতে বাজেয়াপ্ত করা হয়। পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকার হোটেল ও রেস্তোরাঁ গুলির ফ্রিজে পাওয়া যায় বাসি কাটলেট, বাসি মাংস কষা, বাসি চিকেন পকোড়া, রান্না করা বাসি চাউমিন, বাসি ফ্রায়েড রাইস, বাসি ভাত, ছত্রাক জমে যাওয়া পনির। রাস্তার ধারের একটি বিরিয়ানির দোকানে হানা দিয়ে বাজেয়াপ্ত করা হয় বাসি মুরগির মাংস ও নষ্ট হয়ে যাওয়া রান্নার উপকরণ। হোটেলগুলি কোথা থেকে মাংস কিনছে, সেই সংক্রান্ত কোনও রসিদ বা নথি মেলেনি।
পুরসভার তরফে মাংস ব্যবসায়ী ও হোটেল মালিকদের সতর্ক করে জানিয়ে দেওয়া হয়, বাসি-পচা মাংস বিক্রি করলে এবং বাসি খাবার বিক্রি করা হলে সংশ্লিষ্ট দোকানের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করা হবে। এ দিন খাবার হোটেলগুলিতে অভিযান চালিয়ে দেখা যায়, কোনও রাঁধুনির মেডিক্যাল সার্টিফিকেট নেই। রাঁধুনিদের কোনও সংক্রামক অসুখ আছে কি-না তা খতিয়ে দেখার জন্য সব খাবার হোটেলগুলিকে মেডিক্যাল সার্টিফিকেট দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুরপ্রধান দুর্গেশ মল্লদেব বলেন, “প্রথম দিন ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হল। এরপর বাজে মাংস ও খারাপ খাবারের নমুনা মিললে ওই ব্যবসায়ীর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করা হবে। খাবারের মানের সঙ্গে কোনও আপোষ করা চলবে না। আচমকা এমন অভিযান প্রায়ই চালানো হবে।” পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজেয়াপ্ত করা মাংসের নমুনা পরীক্ষা করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy