মঙ্গলবার ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিল মেদিনীপুর শহরে। নিজস্ব চিত্র।
২৬ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকা সাধারণ ধর্মঘট। রাজ্যের প্রায় সর্বত্রই ধর্মঘটের পক্ষে প্রচার করেছে বামেরা। একদা বামদুর্গ বলে পরিচিত গড়বেতাতেও দেখা গিয়েছে এই প্রচার। সেই প্রচারে মানুষের ভিড় ও উৎসাহ দেখে গড়বেতার বাম নেতৃত্ব উজ্জীবিত। মেঘ সরে আঁধার কাটছে, বলছেন বাম নেতৃত্ব।
গড়বেতা বরাবরই শাসকের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি। বাম আমলে ছিল সিপিএমের, ২০১১ সালে পালাবদলের পর তৃণমূলের। যদিও সে বার প্রবল পরিবর্তনের হাওয়াতেও গড়বেতা কেন্দ্র থেকে জিতেছিল সিপিএম। যদিও তারপর যত নির্বাচন হয়েছে ততই ক্ষয়িষ্ণু হয়েছে বামেরা। গত বছর লোকসভা নির্বাচনে সকলকে চমকে দিয়ে তৃণমূল, বামেদের সরিয়ে পয়লা নম্বরে উঠে আসে বিজেপি। বদলাতে থাকে গড়বেতার রাজনীতির সমীকরণ। সঙ্কটে পড়তে থাকে বামেদের অস্তিত্ব।
লোকসভা নির্বাচনের পর পেরিয়ে গিয়েছে একবছর। পরিস্থিতির বদল ঘটেছে অনেকটাই। লকডাউন পরিস্থিতিতে অসহায়দের পাশে থাকা থেকে ২৬ শের ধর্মঘটের প্রচার। গড়বেতায় ক্রমেই ডালপালা মেলছে বামেরা। গড়বেতা বিধানসভা কেন্দ্রের ১৬ টি অঞ্চলেই ধর্মঘটের সমর্থনে প্রচার চালিয়েছেন সিপিএম, সিপিআই সহ বাম নেতৃবৃন্দ। জানা গিয়েছে, পুজোর পর থেকে গড়বেতা বিধানসভা কেন্দ্রে ২৫ টিরও বেশি মিছিল, ১২ টির মতো পথসভা, হয়েছে বাইক মিছিল। প্রতিটি অঞ্চলে দেওয়াল লিখন করেছে বামেরা। বামেদের সহযোগী শাখা সংগঠনগুলিও পৃথক পৃথকভাবে প্রচার চালিয়েছে।
ধর্মঘটের সমর্থনে এইসব প্রচারে শ্রমিক শ্রেণি তো বটেই, বহু সাধারণ মানুষও স্বতঃস্ফূর্তভাবে শামিল হয়ে ভিড় জমিয়েছেন বলে দাবি বাম নেতৃবৃন্দের। এতেই উজ্জীবিত তাঁরা। মিছিল, সভা গুলিতে মানুষের এগিয়ে এসে অংশগ্রহণে করাকে মেঘ সরিয়ে আঁধার কাটার ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন গড়বেতার বাম নেতৃবৃন্দ।
গড়বেতার সিপিএম নেতা দিবাকর ভুঁইয়া বলেন, ‘‘কে শত্রু, কে মিত্র - গড়বেতার মানুষ এখন বুঝতে পারছেন। তাই ভয়ভীতি অন্ধকারের দিন সরিয়ে মানুষ যোগাযোগ করছেন আমাদের সঙ্গে।’’
সিপিআই নেতা বলাই কর্মকারের বক্তব্য, ‘‘গড়বেতায় বামেদের কর্মসূচিগুলিতে মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ছে, এখানে আমরা ঘুরে দাঁড়াচ্ছি, মেঘ কাটছে।’’ সিপিএমের গড়বেতা বিধানসভা কেন্দ্র কমিটির আহবায়ক তপন ঘোষ বলেন, "লোকসভা ভোটে গড়বেতায় আমাদের যে পজিশন ছিল, তার চেয়ে এখন বহুগুণ বেশি ভালো পজিশনে আছি।’’ গড়বেতায় অচিরেই আঁধার কাটিয়ে আলো ফুটবে, বলছেন সিপিএমের এই শিক্ষক নেতা।
যদিও বামেদের এই উৎসাহকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। গড়বেতার বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গড়বেতায় বামেদের এখন অস্তিত্বের সঙ্কট, মানুষই নেই ওদের সঙ্গে।’’ বিজেপির জেলা সহ সভাপতি মদন রুইদাসের কটাক্ষ, ‘‘দিবাস্বপ্ন দেখছে বামেরা, গড়বেতায় এবার ফুটবে পদ্মফুল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy