রিট্টু দত্ত ও শিবরাম মাণ্ডি। —নিজস্ব চিত্র।
প্রতিকূলতা ছিলই। তবে সেই পাহাড় ডিঙিয়েছে রিট্টু দত্ত, শিবরাম মাণ্ডি, সৌরভ ঘোড়ইরা। অভাবকে হারিয়ে ভাল নম্বর পেয়ে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়েছে ওরা সকলেই। আরও এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন ওদের প্রত্যেকেরই। কেউ হতে চায় ইঞ্জিনিয়ার, কেউ শিক্ষক। কিন্তু সামনে যে আরও বড় বাধা, তাও অজানা। তবে ইচ্ছে আর মনের জোরটুকু রয়েছে।
গড়বেতা হাইস্কুলের ছাত্র রিট্টু দত্ত মাধ্যমিকে ৬৩২ নম্বর পেয়েছে। বাবা তপন দত্ত পেশায় ভ্যান চালক। সামান্যই আয়। টেনেটুনে কোনও রকমে সংসার চলে। মা দিপালীদেবী গৃহবধূ। রিট্টু বাংলায় পেয়েছে ৮০, ইংরেজীতে ৮২, গণিতে ৯২, জীবনবিজ্ঞানে ৯৫, ভৌতবিজ্ঞানে ৯৯, ইতিহাসে ৯৪, ভূগোলে ৯০। রিট্টু বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। ছেলের সাফল্যে গর্বিত হলেও কপালে চিন্তার ভাঁজ পরিবারের। ছেলের পড়াশোনার খরচ কোথা থেকে আসবে? গড়বেতা হাইস্কুলের এই কৃতী ছাত্র অবশ্য বলছে, “একদিন আমি ইঞ্জিনিয়ার হবই। এতদিন লড়াই করেছি। আরও করব।” পাশে থাকার জন্য শিক্ষকদের কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুলছে না সে।
ভাদুতলা হাইস্কুলের ছাত্র শিবরাম মাণ্ডি মাধ্যমিকে ৫৭২ নম্বর পেয়েছে। বাবা মোহনবাবু ক্ষুদ্র চাষি। মা দুলিদেবী গৃহবধূ। খড় ছাওয়া মাটির ঘরে দুই ভাই, বাবা-মা মিলে চারজনের সংসার। নিদারুণ আর্থিক দুর্দশার মধ্যে থেকেও যে একাধিক বিষয়ে লেটার পাওয়া সম্ভব, প্রমাণ করেছে এই কৃতী। শিবরাম অঙ্ক, জীবনবিজ্ঞান, ভৌতবিজ্ঞানে ৯৪, বাংলায় পেয়েছে ৮৩, ইংরেজীতে ৫৪, ইতিহাসে ৬৯, ভূগোলে ৮৪ পেয়েছে। শিবরাম বলছে, “বড় হয়ে শিক্ষক হতে চাই। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। কী হয় তাই ভাবছি।” ভাদুতলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিতেশ চৌধুরী বলছিলেন, “শিবরামদের মতো ছাত্ররা যদি আর্থিক সাহায্য পায়, তাহলে আরও বেশি বিকাশ ঘটাতে পারে।”
আগামীতে শিক্ষক হতে চায় গুড়গুড়িপাল হাইস্কুলের ছাত্র সৌরভ ঘোড়ইও। এ বার মাধ্যমিকে সে পেয়েছে ৫৮৩। সৌরভের বাবা ঝন্টুবাবু চাষের কাজ করেন। সামান্য জমি রয়েছে। মা কবিতাদেবী গৃহবধূ। সৌরভ অবশ্য আশাবাদী, “কিছু সমস্যা রয়েছে। সকলে পাশে থাকলে পড়াশোনাটা নিশ্চয়ই চালিয়ে নিতে পারব ঠিকই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy