মুখ্যমন্ত্রীর সভায় প্ল্যাকার্ড হাতে পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র
সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে মেদিনীপুরে এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনিক সভা করলেন। সভা থেকে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা প্রদান করলেন। উন্নয়নের খতিয়ান পেশ করলেন। রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা ছিল, এই সভা থেকে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারের ঘণ্টা বাজিয়ে দিতে পারেন মমতা। সভায় প্রায় ৩২ মিনিট বক্তৃতা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায় অবশ্য উহ্যই থাকল পঞ্চায়েত ভোট প্রসঙ্গ।
বিরোধীদের মতে, পুলিশ দিয়ে ভোট লুট করবে তৃণমূল। জয় নিশ্চিত, এটা ধরেই নিয়েছে শাসক দল। তাই তৃণমূলনেত্রী এ নিয়ে আর কথা বাড়াননি! বিজেপির রাজ্য সহ- সভাপতি শমিত দাশের কথায়, ‘‘তৃণমূল কি চায় ভোট হোক? পুলিশ দিয়ে ভোট করানো মানেই তো ভোট লুট!’’ শমিতের দাবি, ‘‘এ বার ভোট লুটের চেষ্টা হলে মানুষ জবাব দেবে।’’ বিরোধীদের আশঙ্কা অমূলক, দাবি তৃণমূলের। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো- অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, ‘‘প্রশাসনিক সভা ছিল। সভা থেকে লক্ষ্মীর ভান্ডার, কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথীর কথাই বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। উন্নয়নের কথাই বলেছেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘প্ররোচনার রাজনীতি বন্ধ করে ওরা (বিরোধী) বরং মাঠে ময়দানে যাক, লড়াই করুক। আমরা বলছি, পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা হবে না।’’
বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে কলেজ- কলেজিয়েট স্কুল মাঠে এই সভা হয়েছে। সব ঠিক থাকলে মে মাসেই ভোট হতে পারে। সম্প্রতি কেশপুরে এসে সেই ইঙ্গিতও দিয়েছেন সাংসদ তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর এ বারের জেলা সফর প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। একাধিক মহলের মতে, এ দিনের সভা থেকে প্রত্যক্ষ ভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর ততটাও চড়াননি মমতা। যেমনটা তিনি প্রায় প্রত্যেক সভায় চড়িয়ে থাকেন। তবে কখনও মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘গ্রামীণ রাস্তা খারাপ হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার করছে না। বাংলার বাড়িতে টাকা দিচ্ছে না। আমাদের টাকা জিএসটি থেকে তুলে নিয়ে যায়। সেই টাকার ভাগটা আমাদের দেয় না।’’ কখনও বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিচ্ছে না। বঞ্চনা করছে। মিথ্যা কথা বলছে। বিজেপির নেতারা গিয়ে বলছে, রাস্তায় টাকা দিও না। জলে টাকা দিও না। বাড়িতে টাকা দিও না। একশো দিনের কাজে টাকা দিও না। তাহলে মানুষ উপকৃত হবে। আমরা কী করে ভোট চাইব!’’
মমতার কথায় পঞ্চায়েত ভোটের প্রসঙ্গ না থাকায় হতাশ সভায় আসা লোকজনেদের একাংশ। কেশপুর থেকে আসা এক তৃণমূল সমর্থকের কথায়, ‘‘সামনে পঞ্চায়েত ভোট। কিন্তু দিদি তো ভোটের কথা কিছুই বললেন না। এ নিয়ে কোনও বার্তাও দিলেন না। কেন কিছু বললেন না, বুঝলাম না!’’ শালবনি থেকে আসা এক তৃণমূল সমর্থকের কথায়, ‘‘আশা ছিল, পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে দিদি কিছু বলবেন। সেটা তো হল না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy