Advertisement
০৪ মে ২০২৪

ভাঙাচোরা বাড়ি, দিদিকে বলে বিডিও-র নজরে

বিষয়টিকে সাফল্য হিসাবে দেখছে তৃণমূল। আর বিরোধীরা পাল্টা বলছে, যে সমস্যা পঞ্চায়েতের সমাধান করার কথা, তার সুরাহা করতে ‘দিদিকে বলো’র দ্বারস্থ হতে হচ্ছে।

এই বাড়ি নিয়েই অভিযোগ জমা পড়েছে। নিজস্ব চিত্র

এই বাড়ি নিয়েই অভিযোগ জমা পড়েছে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১৯
Share: Save:

আমজনতার কাছে পৌঁছতে, তাঁদের অভাব-অভিযোগ শুনতে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই কর্মসূচির নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে পাঁশকুড়ার বাহারপোতা গ্রামের এক বিড়ি শ্রমিকের ভাঙা বাড়ির কথা জানিয়েছিলেন তৃণমূলেরই স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য। তার প্রেক্ষিতে ব্লক অফিস থেকে ডাক পেলেন মহাদেব বেরা নামে ওই গ্রামবাসী।

বিষয়টিকে সাফল্য হিসাবে দেখছে তৃণমূল। আর বিরোধীরা পাল্টা বলছে, যে সমস্যা পঞ্চায়েতের সমাধান করার কথা, তার সুরাহা করতে ‘দিদিকে বলো’র দ্বারস্থ হতে হচ্ছে। এতে বোঝা যাচ্ছে তৃণমূলের কী হাল!

‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে সরকারের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি তৃণমূলের জন প্রতিনিধিরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের সমস্যার কথা শুনছেন। সেই মতো গত ২৭ অগস্ট খণ্ডখোলা এলাকায় যান বিধায়ক ফিরোজা বিবি। কর্মসূচিতে বাহারপোতার বাসিন্দা মহাদেব বেরার বেহাল বাড়ির ছবি তুলে ‘দিদিকে বলো’র ওয়েবসাইটে আপলোড করে অভিযোগ করেন খণ্ডখোলা অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি জয়দেব মাইতি এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য শচীপ্রিয়া মাইতি। মঙ্গলবার পাঁশকুড়া-১ নম্বর ব্লকের বিডিও অফিস থেকে ফোন পান মহাদেব। জায়গার রেকর্ড-সহ সমস্ত নথিপত্র নিয়ে তাঁকে দেখা করতে বলা হয় ব্লক অফিসে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, বিড়ি শ্রমিক মহাদেবের বাড়ির সদস্য সংখ্যা পাঁচ। অথচ বাড়ি বলতে বাঁশের খুঁটির ওপর টালির ছাউনি। বর্ষায় বাড়ির সামনে জমে যায় জল। মহাদেব জানাচ্ছেন, বাড়ির ভগ্নদশা নিয়ে পঞ্চায়েতে আবেদন করেছিলেন। সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরির আর্জি জানান তিনি। কিন্তু এ বার খণ্ডখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতে সাধারণ বিভাগে ৭৭ জনের নাম বরাদ্দ হয়েছে। তার মধ্যে নেই মহাদেবের নাম। তবে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির দৌলতে বর্তমানে আশার আলো দেখছেন মহাদেব।

এ দিন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে মহাদেব দেখা করেন পাঁশকুড়ার বিডিও ধেনধুপ ভুটিয়ার কাছে। তিনি বলেন, ‘‘বিডিও বলেছেন, তালিকায় নাম না থাকলে বরাদ্দ পেতে সময় লাগবে। তবে উনি আমার সমস্ত নথিপত্র নিয়েছেন। এতে আশায় আলো দেখছি।’’ এ ব্যাপারে বিডিও বলেন, ‘‘জেলা থেকে ওই ব্যক্তির জায়গার কাগজপত্র দেখে যাচাই করতে বলে হয়েছে। আবাসন প্রকল্পে যদি ওঁর নাম না এসে থাকে, তাহলে আমরা সমস্ত নথি-সহ জেলায় বিষয়টি রিপোর্ট আকারে জানিয়ে দেব।’’

অভিযোগ জানানোর সাত দিনের মধ্যে নথি চেয়ে ডাক পড়ায় খুশি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বও। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য শচীপ্রিয়া মাইতি বলেন, ‘‘দিদিকে জানিয়ে যে সত্যি সমস্যার সমাধান হতে পারে, তা এখন বুঝতে পারছি।’’ যদিও পাঁশকুড়ার বিজেপি নেতা সিন্টু সেনাপতি বলেন, ‘‘খণ্ডখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতটি তৃণমূলের দখলে। অথচ সেই দলের নেতাদেরই এখন সমস্যার সমাধানে দিদিকে বলতে হচ্ছে। তার মানে এটা পরিষ্কার স্থানীয় পঞ্চায়েত এলাকার সার্বিক উন্নয়নে ব্যর্থ।’’

শচীপ্রিয়ার অবশ্য ব্যাখ্যা, ‘‘আবাসন প্রকল্পে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে প্রাপকের নামের তালিকা আসে। প্রথমের তালিকায় মহাদেবের নাম ছিল না। তাই আমার উদ্যোগী হয়ে ‘দিদিকে বলো’য় জানিয়েছিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Didi-ke Bolo Panskura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE