নতুন জেলা হয়েছে ঝাড়গ্রাম। কিন্তু জেলাসদরের স্টেশনে দূরপাল্লার গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনগুলি থামে না। এ বার দূরপাল্লার ট্রেনের স্টপ দেওয়ার দাবিতে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীকে চরমপত্র দিল ২০টি গণ সংগঠনের সমন্মবয়ে গঠিত যৌথ কমিটি। অবিলম্বে দাবি পূরণ না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
নয়াদিল্লি, মুম্বই, নাগপুর, পুণে, আমদাবাদ, পুরী, হরিদ্বার যাওয়ার বিভিন্ন ট্রেন ঝাড়গ্রামের উপর দিয়ে যাতায়াত করছে। অথচ ওই ট্রেনগুলি ঝাড়গ্রামে থামে না। এই প্রেক্ষিতে নিউদিল্লি পুরুষোত্তম এক্সপ্রেস, পুরী-হরিদ্বার উৎকল এক্সপ্রেস, হাওড়া-আমদাবাদ এক্সপ্রেস, আজাদ হিন্দ এক্সপ্রেস, হাওড়া-মুম্বই মেলএই পাঁচটি ট্রেনের স্টপেজ দাবি করেছেন এলাকাবাসী। গত এক দশক ধরে বিভিন্ন মহল থেকে এই ট্রেনগুলির স্টপেজের দাবিতে রেল কর্তৃপক্ষকে অসংখ্যবার স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। রেলের তরফে কোনও সদর্থক বার্তা না পেয়ে গত ডিসেম্বরে ২০টি গণ সংগঠন একযোগে ঝাড়গ্রাম স্টেশনে জমায়েত বিক্ষোভ করেছিল। বিক্ষোভের জেরে ওই দিন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর ডিভিশনের শীর্ষকর্তারা ঝাড়গ্রামে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। ট্রেনের স্টপ সংক্রান্ত দাবিটি রেল বোর্ডের বৈঠকে বিবেচনার জন্য পেশ করা হবে বলে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কর্মাশিয়্যাল ম্যানেজার এ থাঙ্গাবালন। তারপর প্রায় চার মাস হল, রেলের তরফে জবাব মেলেনি।
গত ৪ এপ্রিল নতুন জেলা হয়েছে ঝাড়গ্রাম। আলাদা জেলা ও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ঝাড়গ্রামের গুরুত্ব অনেক বেড়ে গিয়েছে। দক্ষিণপূর্ব রেলের টাটা-খড়্গপুর শাখার ঝাড়গ্রাম স্টেশনে প্রতিদিনই কয়েক হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। দূরপাল্লার গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন গুলির স্টপেজ না থাকায় সমস্যায় পড়তে হয় এলাকাবাসী ও পর্যটকদের। খড়্গপুর অথবা টাটানগর স্টেশনে গিয়ে ওই ট্রেনগুলি ধরতে হয়। ঝাড়গ্রামকে কেন্দ্র করে ট্যুরিজম সার্কিট হচ্ছে। অথচ ঝাড়গ্রাম থেকে দিঘা যাওয়ারও সরাসরি ট্রেন নেই।
স্টিল এক্সপ্রেস, ইস্পাত এক্সপ্রেস, কুরলা এক্সপ্রেসের মতো হাতেগোনা কয়েকটি ট্রেন প্রতিদিন ঝাড়গ্রামে স্টপেজ দেয়। সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে চলে এমন কয়েকটি ট্রেনও ঝাড়গ্রামে থামে। এ ছাড়া খড়্গপুর-টাটা শাখার লোকাল ও প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলি ঝাড়গ্রামে থামে। ঝাড়গ্রাম শহরের বর্তমান জন সংখ্যা ৯০ হাজারের কাছাকাছি। বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রতিদিন এই শহরের বহু মানুষ পেশাগত নানা প্রয়োজনে এবং বেড়ানোর জন্য দুরপাল্লার ট্রেনে সফর করেন। কিন্তু ওই ট্রেনগুলি ঝাড়গ্রামে না থামায় খড়্গপুর অথবা টাটানগরে গিয়ে তাঁদের দুরপাল্লার ট্রেন ধরতে হয়।
২০টি গণ সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক তথা প্রবীণ সমাজসেবী বিষ্ণুপদ রায় ও বিদ্যুৎ প্রতিহার জানান, তিন মাস অপেক্ষা করা হয়েছে। এবার রেলমন্ত্রীর দফতর থেকে কোনও সদুত্তর না পেলে আগামী মাসে ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন স্টেশনের সামনে জমায়েত-বিক্ষোভ করা হবে। প্রবীণ নাগরিকরাও অনশনে বসবেন। বিষ্ণুপদবাবু বলেন, “রেলের স্থানীয় কর্তারা কোনও রকম উচ্চবাচ্য না করায় সরাসরি রেল মন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। এবার দূরপাল্লার পাঁচটি ট্রেনের স্টপ দেওয়ার দাবিতে গাঁধীগিরির পথে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy