—প্রতীকী চিত্র।
জেলায় মদের দোকান আগের থেকে বেড়েছে। আরও বাড়তে পারে! আবগারি দফতর সূত্রের খবর, জেলায় আর কোথায় কোথায় নতুন করে মদের দোকান খোলা যেতে পারে, ইতিমধ্যেই না কি তা দেখা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে এমন বেশ কয়েকটি জায়গাও চিহ্ণিত করা হয়েছে। আয় বাড়িয়ে সরকারি কোষাগার ভরতে এই পদক্ষেপ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
জেলার আবগারি কর্তারা অবশ্য এ নিয়ে কিছু বলতে নারাজ। আরও কি মদের দোকান খোলা হতে পারে? এক আবগারি কর্তার জবাব, ‘‘কয়েকটি জায়গা চিহ্ণিত করা হয়েছে। এর বেশি এখনই কিছু বলব না।’’ একাধিক মহলের অনুমান, আগামী দিনে পশ্চিম মেদিনীপুরেও মদ বিক্রির ফ্র্যাঞ্চাইজি দেওয়া হতে পারে। রিটেল শপের ধাঁচে। যেখানে দেশে তৈরি হওয়া বিদেশি ব্র্যান্ডের মদ ও দেশি মদ মিলবে। ফ্র্যাঞ্চাইজি পাওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি শর্ত বাঁধা হতে পারে। একাধিক মহল মনে করিয়ে দিচ্ছে, জিএসটি চালু হওয়ার পরে সরকারের কাছে নিজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য মূলত দু’টি রাস্তা খোলা রয়েছে এ রাজ্যে।
মদ আর লটারি।
চোলাই মদের বিক্রি ঠেকাতে কড়াকড়ি করেছে রাজ্য সরকার। ফলে, বৈধ দেশি মদের বিক্রি বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবে বেড়েছে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও। একাধিক মহল মনে করিয়ে দিচ্ছে, জিএসটি পরবর্তী সময়ে রাজ্যের নিজস্ব রোজগারের অন্যতম পথ হল মদ বিক্রিই। আগে মদের উপর আবগারি শুল্ক ছাড়াও অতিরিক্ত বিক্রয়কর আদায় করত সরকার। এখন সেই বিক্রয়কর তুলে দিয়ে আবগারি শুল্কের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে বিক্রি বেড়েছে, দোকান বেড়েছে,
শুল্ক বেড়েছে।
ক’বছর ধরেই কর্পোরেট কায়দায় বছরের শুরুতে কোন জেলায়, কত পরিমাণ মদ বিক্রি করা যাবে, কত আয় হবে, তার একটা পরিকল্পনা ছকে ফেলে আবগারি দফতর। জেলাওয়াড়ি আবগারি রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়। জেলা ভিত্তিক মদ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেওয়া হয়। এরপর জেলা আবগারি দফতর লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকানদারদের মধ্যে সেই লক্ষ্যমাত্রা ভাগ করে দেয়।
পশ্চিম মেদিনীপুরে মদ বিক্রির বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে। চলতি বছরে (২০২৩- ’২৪) এই লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৯৮০ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা! জানা গিয়েছে, এর মধ্যে এপ্রিলে ৭৭ কোটি টাকার মদ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। মে মাসে ৮৫ কোটি টাকার মদ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। অন্যদিকে, সেপ্টেম্বরে মদ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৯ কোটি টাকার, অক্টোবরে ছিল ৮৭ কোটি টাকার, নভেম্বরে রয়েছে ৮২ কোটি টাকার, ডিসেম্বরে রয়েছে ৭৮ কোটি টাকার।
পশ্চিম মেদিনীপুরে আবগারির ৪টি রেঞ্জ রয়েছে। যথাক্রমে মেদিনীপুর (সদর), খড়্গপুর, ঘাটাল এবং বেলদা। আর সার্কেল রয়েছে ১৩টি। এর মধ্যে মেদিনীপুর (সদর) রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে ৩টি সার্কেল। যথাক্রমে মেদিনীপুর (সদর), শালবনি এবং গোয়ালতোড়। খড়্গপুর রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে ৪টি সার্কেল। যথাক্রমে খড়্গপুর শহর, খড়্গপুর গ্রামীণ, ডেবরা এবং সবং। ঘাটাল রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে ৩টি সার্কেল। যথাক্রমে ঘাটাল, চন্দ্রকোনা এবং গড়বেতা।
বেলদা রেঞ্জের মধ্যেও রয়েছে ৩টি সার্কেল। যথাক্রমে বেলদা, নারায়ণগড় এবং দাঁতন। জানা গিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলায় মদ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৮৪ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা। সেখানে মদ বিক্রি হয়েছে ৪৭৪ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকার। পশ্চিম মেদিনীপুরে সরকার অনুমোদিত মদের দোকান ছিল ৩২৮টি। অন- শপ এবং অফ- শপ মিলিয়ে। ক’মাস আগে নতুন করে আরও ৪টি অন- শপ চালুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ফলে, মদ দোকানের সংখ্যা এখন বেড়ে হয়েছে ৩৩২টি। গড়বেতা, চন্দ্রকোনা টাউন, দাসপুর, বেলদা- এই চারটি এলাকায় নতুন একটি করে অন-শপ চালুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
মদের দোকান খোলা যেতে পারে, প্রাথমিকভাবে এমন ক’টি জায়গা চিহ্ণিত করা হয়েছে? জানা গিয়েছে, সংখ্যাটা খুব কম নয়। জেলার বিভিন্ন এলাকায় সবমিলিয়ে না কি প্রায় ৪৭টি জায়গা চিহ্ণিত করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে না কি দেখা হয়েছে, কোথায় কোথায় ২-৩ কিলোমিটারের মধ্যে মদের দোকান নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy