Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Train station

কেউ কথা রাখেনি, ফের ঠাঁই স্টেশনেই 

কিন্তু প্রতিশ্রুতিই সার! মহিলার অভিযোগ, তাঁদের হাসপাতাল থেকে চলে যেতে বলা হয়েছে।

মা ও ছেলে নিজস্ব চিত্র

মা ও ছেলে নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলদা শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২০ ০০:১০
Share: Save:

বিগত প্রায় চার বছরে বেলদা হাসপাতাল চত্বরই হয়ে উঠেছিল ওঁদের ঘর-বাড়ি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি কেমন যে এলোমেলো করে দিয়েছে সব কিছু। হাসপাতালে আশ্রয় নেওয়া যে মহিলার সন্তানের অন্নপ্রাশন এককালে ধুমধাম করে পালিত হয়েছিল, সেই মহিলারই আপাতত ঠিকানা বেলদা রেল স্টেশন। জনপ্রতিনিধিরা কথা দিয়েছিলেন, পাকা ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। কিন্তু প্রতিশ্রুতিই সার! মহিলার অভিযোগ, তাঁদের হাসপাতাল থেকে চলে যেতে বলা হয়েছে। যদিও সেই অভিযোগ মানতে নারাজ নারায়ণগড়ের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক।

পুরো ঘটনার শুরু ২০১৭ সালে। সে বছর ৮ জানুয়ারি বেলদা স্টেশনে প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকা রিঙ্কিকে হাসপাতালে ভর্তি করান বেলদা গ্রামীণ হাসপাতালের এক আশাকর্মী। ওই দিনই এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন রিঙ্কি। হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সেরা নবজাতকের নাম রাখেন রাহুল। এরপর তাঁদের পরিচর্যাতেই মা এবং সন্তান লালিত হতে থাকেন। নারায়ণগড় ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আশিস মণ্ডল দু’জনকেই হাসপাতালে রেখে দেন। সেই বছর ১২ অগস্ট ধুমধাম করে রাহুলের অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠানও আয়োজিত হয় হাসপাতালে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা, বিডিও মানিক সিংহ মহাপাত্র, জেলা মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ সূর্যকান্ত অট্ট-সহ অনেকেই।

জনপ্রতিনিধিরা সরকারি উদ্যোগে রিঙ্কিকে একটি বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। তবে তিন বছর কেটে গেলেও, প্রতিশ্রুতি বাস্তব রূপ পায়নি। তাই ফের রিঙ্কির ঠিকানা হয়ে দাঁড়িয়েছে বেলদা স্টেশন। আপাতত ছোট রাহুলকে নিয়ে সেখানেই রাত কাটাচ্ছেন রিঙ্কি। দিনের বেলায় কোলের শিশুকে নিয়ে ভিক্ষা করে পেটের জোগাড় করেন তিনি। হাসপাতাল থেকে কেন চলে এলেন? রিঙ্কি উত্তরে বলেন, ‘‘হাসপাতালে কয়েকজনের করোনা হওয়ার পর আমাকে বেরিয়ে যেতে বলা হয়। তাই চলে এসেছি। ওরা ঘর করে দেবে বলেছিল, কিন্তু এখনও দেয়নি। কেউ কথা রাখেনি। ছেলেকে নিয়ে কষ্টে আছি।’’ যদিও এই প্রসঙ্গে নারায়ণগড় ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘উনি না বলেই চলে গিয়েছেন। ওঁদের কেউ বের করে দেয়নি। যে ঘরে ওঁরা থাকতেন, সেটা খালি করে অন্য ঘরে থাকতে বলা হয়েছিল মাত্র।’’

এতদিন পরও রিঙ্কিকে একটা ঘর করে দেওয়া হল না কেন? এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য সূর্যকান্ত অট্ট বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে সে রকম করে আর কেউ ভাবেনি। সরকারি ভাবে কোনও অনুদান পাইয়ে দেওয়া যায় কি না, দেখতে হবে।’’ এই প্রসঙ্গে স্থানীয় বিধায়ক প্রদ্যোত ঘোষ বলেন, ‘‘আমার তরফ থেকে যতটা সম্ভব প্রশাসনিক সহযোগিতা করা যায়, তা করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Train station mother and son বেলদা
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE