পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পূর্ণাঙ্গ বোর্ড গঠনের আগে নতুন মোড়। স্থায়ী সমিতি থেকে পদত্যাগ করতে পারেন নির্মল ঘোষ-সহ একাধিক সদস্য। এক বা একাধিক স্থায়ী সমিতি পুনর্গঠিত হতে পারে। তারপরই কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন হবে। তৃণমূল সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার কলকাতায় জেলার চার নেতাকে নিয়ে বৈঠক করেছেন সুব্রত বক্সী। ওই বৈঠকের পরে এই সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
নতুন করে কি এক বা একাধিক স্থায়ী সমিতি গঠন হতে পারে? তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সহ- সভাধিপতি অজিত মাইতির জবাব, ‘‘কিছু রদবদল হতে পারে। এ সবই অভ্যন্তরীণ ব্যাপার!’’ এ তো তাহলে নতুন এক সঙ্কট? তৃণমূলের জেলা সভাপতির দাবি, ‘‘এখানে সঙ্কটের কোনও ব্যাপার নেই!’’ কিন্তু জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতিগুলো আগেই গঠন হয়ে গিয়েছে। তাহলে স্থায়ী সমিতিগুলি পুনর্গঠনের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে কেন? তৃণমূল সূত্রের খবর, দলীয়স্তরে কর্মাধ্যক্ষদের নাম চূড়ান্ত করতে গিয়ে এই সম্ভাবনা সামনে এসেছে। ওই সূত্র জানাচ্ছে, শেষ মহূর্তে পরিবর্তন না হলে জেলার নতুন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হতে চলেছেন নির্মল ঘোষ। দলের বৈঠকে না কি তাই ঠিক হয়েছে। কিন্তু নির্মল পূর্ত স্থায়ী সমিতির সদস্যই নন। তিনি কৃষি-সেচ স্থায়ী সমিতির সদস্য। বিদায়ী বোর্ডে নির্মল কৃষি-সেচ কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। তাই সাধারণ ফর্মুলা মেনে তাঁকে ওই সমিতির সদস্য করা হয়েছিল। তাই সে ক্ষেত্রে নির্মলকে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ করতে হলে তাঁকে আগে ওই স্থায়ী সমিতির সদস্য করতে হবে। কৃষি- সেচ স্থায়ী সমিতি থেকে পদত্যাগ করবেন নির্মল। একই ভাবে পূর্ত স্থায়ী সমিতি থেকে পদত্যাগ করবেন সেই সমিতির কোনও এক সদস্য। স্থায়ী সমিতি পুনর্গঠনের সময়ে ওই সদস্য কৃষি- সেচে আসবেন। নির্মল পূর্তে যাবেন। এরপরই তিনি পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হিসেবে নির্বাচিত হবেন।
তলব পেয়ে বৃহস্পতিবার কলকাতায় বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন অজিত মাইতি, দীনেন রায়, প্রদ্যোত ঘোষ এবং আশিস চক্রবর্তী। অজিত ছাড়া বাকি তিনজন ওই দিন কলকাতাতেই ছিলেন। কারণ, বিধানসভার অধিবেশন চলছে। সেখানেই যোগ দিতে গিয়েছিলেন ওই তিন বিধায়ক। তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে স্থায়ী সমিতির পুনর্গঠন, কর্মাধ্যক্ষ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। কে থাকবেন, কে বাদ পড়বেন শাসক দলের অন্দরে তাই নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। সূত্রের খবর, সূর্যকান্ত অট্ট, কাবেরী চট্টোপাধ্যায়- সহ চারজনের ফের কর্মাধ্যক্ষ পদে ফিরে আসা কঠিন। তপন দত্তও না কি, কর্মাধ্যক্ষ থেকে বাদ পড়তে পারেন। তবে সেই ক্ষেত্রে তাঁকে ‘সম্মানজনক’ পদ দেওয়া হবে। জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ করা হতে পারে তাঁকে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, যাঁরা পুনরায় কর্মাধ্যক্ষ হতে চলেছেন, তাঁদের প্রায় সকলেরই দফতর বদল হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তৃণমূলের অনেকে মনে করছেন, আগের সমিতি থেকে পদত্যাগ, ফের নতুন করে অন্য সমিতির সদস্য হওয়া, কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন— এ সব কম ঝক্কির নয়! পরিকল্পনায় কোথাও কি ঘাটতি ছিল? তৃণমূলের জেলা সভাপতির জবাব, ‘‘দলের রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মতোই সব পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’ কে কোন কর্মাধ্যক্ষ হবেন তা কি জেলা থেকেই ঠিক হবে? জেলা তৃণমূলের এক প্রথমসারির নেতার কথায়, ‘‘জেলা থেকে প্রস্তাব যাবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রাজ্য নেতৃত্বই নেবেন। রাজ্য নেতৃত্বের তরফে যে নাম জানানো হবে তা সকলকে মানতে হবে।’’