ছেলে হায়দরাবাদ যাবে। তাই সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ খড়্গপুর স্টেশনে গিয়েছিলেন তুষারকান্তি দত্ত। টিকিট কাউন্টারের বাইরে ফুটব্রিজের নীচে বাইক রাখতে গেলে তাঁকে বাধা দেন এক আরপিএফ কর্মী। অগত্যা স্টেশনের পাঁচিলের বাইরে রাস্তার ধারে বাইক রেখেই তুষারবাবু স্টেশনে ঢোকেন। কিন্তু ঠিক নিশ্চিন্ত হতে পারছিলেন না। তুষারবাবুর কথায়, “টিকিট কাউন্টারের কাছে গাড়ি রেখে অনেকেই স্টেশনে ঢুকছেন। অথচ মোটরসাইকেল রাখতেই যত বাধা। বাধ্য হয়েই সিসি ক্যামেরার নজরদারির বাইরের এলাকায় বাইক রাখতে হল। এই বৈষম্য ঠিক নয়।”
তুষারবাবুর মতো ক্ষোভ খড়্গপুর স্টেশনের অনেক যাত্রীরই। রেল সূত্রে খবর, এই স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২১ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। দিনে গড়ে ১৬ লক্ষ টাকার টিকিট বিক্রি হয়। অনেকেই ট্রেনের সংরক্ষিত টিকিট কাটতে, বন্ধু-পরিজনদের ট্রেনে তুলতে অথবা নিয়ে যেতে স্টেশনে আসেন। তাঁদের অনেকেই ব্যবহার করেন বাইক। অথচ রেলের নিজস্ব কোনও বাইক পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। একমাত্র ভরসা স্টেশনের বাইরে সাইকেল স্ট্যান্ড। রেলের জমিতে লিজে থাকা ওই সাইকেল স্ট্যান্ডে আবার ছাউনি নেই। ফলে, শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা খোলা আকাশের নীচেই বাইক-সাইকেল রাখতে হয়। কিন্তু সামান্য সময়ের জন্য স্টেশনে আসা লোকজন টাকা খরচ করে স্ট্যান্ডে সাইকেল, বাইক রাখতে নারাজ। তাঁদের দাবি, চার চাকার মতো মোটবাইক পার্কিংয়েরও ব্যবস্থা করতে হবে রেলকে। খড়্গপুরের শ্রীকৃষ্ণপুরের বাসিন্দা সৌমেন দাস বলেন, “স্টেশনে অনেক সময় দাদাকে ছাড়তে যাই। শহরে এমনিতেই বাইক চুরির চক্র সক্রিয়। সিসি ক্যামেরার নজরদারির বাইরে বাইক রাখলে তাই চিন্তা হয়। অথচ রেল উদাসীন।”
নতুন বছরে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে খড়্গপুর স্টেশনের বোগদা চত্বরকে নতুন করে সাজাচ্ছে রেল। কয়েক দিনের মধ্যেই স্টেশনের বাইরে পাঁচিল ঘেরা অংশে ছাউনি বসতে চলেছে। এখন স্টেশনের দক্ষিণ অংশে টিকিট কাউন্টারের বাইরে ফুটব্রিজের কাছে ছাউনি রয়েছে। কিন্তু একটা বড় অংশ জুড়ে কোনও ছাউনি না থাকায় সমস্যা হয়। কিন্তু বাইক পার্কিয়ের বিষয়ে রেলেন কোনও ভাবনা নেই। সে কথা মেনে খড়্গপুরের এডিআরএম মনোরঞ্জন প্রধান বলেন, “এটা ঠিক বাইক পার্কিংয়ের বিষয়টি আমরা এখনও ভাবিনি। তবে ভবিষ্যতে যাতে সেই ব্যবস্থা করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy