Advertisement
১৯ মে ২০২৪

পুনর্নির্বাচন নয়, বিরোধীদের দাবি ওড়ালেন জেলাশাসক

লোকসভা উপ-নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও স্বতঃস্ফূর্ত হয়েছে, আগেই দাবি করেছিলেন শাসক-নেতারা। পুলিশ প্রশাসনও সেই সুরেই সুর মিলিয়েছে। অথচ বিরোধীদের অভিযোগ হলদিয়া, নন্দীগ্রাম-সহ বিভিন্ন এলাকায় হুমকি দিয়ে রিগিং‌ করেছে তৃণমূল।

কেটিপিপি হাইস্কুলেই রয়েছে ইভিএম। নিজস্ব চিত্র।

কেটিপিপি হাইস্কুলেই রয়েছে ইভিএম। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৬ ০০:২৩
Share: Save:

লোকসভা উপ-নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও স্বতঃস্ফূর্ত হয়েছে, আগেই দাবি করেছিলেন শাসক-নেতারা। পুলিশ প্রশাসনও সেই সুরেই সুর মিলিয়েছে। অথচ বিরোধীদের অভিযোগ হলদিয়া, নন্দীগ্রাম-সহ বিভিন্ন এলাকায় হুমকি দিয়ে রিগিং‌ করেছে তৃণমূল। কংগ্রেস রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে পুনর্নির্বাচনের দাবি তুলেছে। কিন্তু জেলাশাসক রশ্মি কমল সেই দাবি নস্যাৎ করে বলেন, ‘‘এমন কোনও আবেদনপত্র হাতে পাইনি।’’

বিরোধী নেতারা প্রায় হতাশার সুরেই স্বীকার করে নিয়েছেন, ‘কিছুই করা যাচ্ছে না’। কংগ্রেস নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন হলদিয়া ও নন্দীগ্রাম বিধানসভার গণনা কেন্দ্রে তাঁদের কোনও প্রতিনিধি থাকবেন না। রবিবার প্রার্থীদের নিয়ে করা বৈঠকেও যোগ দেয়নি কংগ্রেস। ওই বৈঠকে সিপিএম এবং বিজেপি-র পক্ষ থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু জেলাশাসক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা সন্তুষ্ট। তাঁদের রিপোর্ট অনুযায়ী কাজ হবে। পুনর্নির্বাচনের পরিস্থিতি নেই।’’

উপ-নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী, দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি পার্থ বটব্যাল বলেন, ‘‘হলদিয়া ও নন্দীগ্রামে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারেননি। আমরা পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি। লাভ হয়নি। তাই এই বয়কট। হলদিয়া ও নন্দীগ্রাম বিধানসভার গণনা কেন্দ্রেও আমাদের দলের কোন প্রতিনিধি থাকবে না।’’ যদিও এই সিদ্ধান্তকে বিঁধছে শাসকদল। তৃণমূলের এক নেতা সরাসরি বলেন, ‘‘কংগ্রেসের কোনও অস্তিত্বই নেই। ওরা এল কি এল না তাতে কি এসে যায়। ফল বদলাবে না।’’

সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহিও একই অভিযোগ করেছেন শাসকের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘‘হলদিয়ায় অধিকাংশ ভোটারকে ভোট দিতে দেয়নি তৃণমূলের লোকেরা। নন্দীগ্রামে ছাপ্পা পড়েছে। তমলুক, ময়নাতেও একই অবস্থা। একে কি ভোট বলে!’’ নিরঞ্জনবাবু কার্যত স্পষ্টই জানিয়েছেন ভাল ফলের আশা করছেন না তাঁরা।

নির্বাচনী প্রচার পর্বের মাঝেই প্রধানমন্ত্রীর নোট বদলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা প্রচারের মোড় ঘুরিয়ে দিয়ে দিয়েছিল। সাধারণ মানুষের অসুবিধাকে ইস্যু করে প্রচার চালায় তৃণমূল। বিজেপি নেতারাও পূর্ব মেদিনীপুরের নানা জায়গায় প্রচারে এসে সারদা এবং নারদ নিয়ে তৃণমূলকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি। ভোট বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, অনেকেই কালো টাকা রুখতে প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। এর প্রভাব বিজেপি-র ভোট বাক্সেও পড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা। সে ক্ষেত্রে বিজেপি দ্বিতীয় স্থান ধরে রাখতে পারে।

যদিও বিজেপি’র জেলা সভাপতি মলয় সিংহ বলেন, ‘‘নন্দীগ্রাম, হলদিয়া-সহ বেশিরভাগ এলাকায়ই মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে তৃণমূল। তবে আমাদের পক্ষে মানুষের সমর্থন রয়েছে। গতবারের চেয়ে আমাদের ভাল ফল হবে বলেই আশা করছি।’’

এ দিকে শনিবার ভোট পর্ব মেটার পর ফলাফল বিশ্লেষণ করা হয়ে গিয়েছে শাসকদলের। জেলা নেতৃত্ব জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত। শিশির অধিকারী রবিবার বলেন, ‘‘মানুষ শান্তিপূর্ণ ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে। জয় নিশ্চিত। খুব ভাল ফল হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Re-election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE