Advertisement
E-Paper

রাস্তায় গাড়ি রেখেই দোকানে

গাড়ির দখলে রাস্তা। চলার পথ নেই শহরবাসীর। পুজোর বাজার জমে উঠতেই আরও খারাপ হয়েছে পরিস্থিতি। যানজটের ফাঁসে দশ মিনিটের পথ পেরোতে লেগে যাচ্ছে ঘণ্টা খানেক। মেদিনীপুর হোক বা খড়্গপুর— ছবিটা কমবেশি একই। রাস্তার ধারে গাড়ি রেখেই দোকানে শপিং করতে ঢুকছেন ক্রেতারা।

বরুণ দে ও দেবমাল্য বাগচী

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:৩৯
রাস্তার মাঝেই বাইকের সারি। মেদিনীপুরের রাজাবাজারে (বাঁ দিকে)। খড়্গপুরের মালঞ্চ রোডেও গাড়ির দখলে রাস্তা। চলা দায় (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

রাস্তার মাঝেই বাইকের সারি। মেদিনীপুরের রাজাবাজারে (বাঁ দিকে)। খড়্গপুরের মালঞ্চ রোডেও গাড়ির দখলে রাস্তা। চলা দায় (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

গাড়ির দখলে রাস্তা। চলার পথ নেই শহরবাসীর। পুজোর বাজার জমে উঠতেই আরও খারাপ হয়েছে পরিস্থিতি। যানজটের ফাঁসে দশ মিনিটের পথ পেরোতে লেগে যাচ্ছে ঘণ্টা খানেক।

মেদিনীপুর হোক বা খড়্গপুর— ছবিটা কমবেশি একই। রাস্তার ধারে গাড়ি রেখেই দোকানে শপিং করতে ঢুকছেন ক্রেতারা। সেই গাড়ির পিছনে মুহূর্তের মধ্যে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ছে আরও অনেক গাড়ি। ব্যস, গাড়ির লাইনে গোটা রাস্তা অবরুদ্ধ। যানজটের ফাঁসে নাভিশ্বাস উঠছে বাকিদের।

গোলবাজার, খরিদা বাজার, গেটবাজার, মালঞ্চর মতো বড় বাজার রয়েছে খড়্গপুরে। প্রতিদিন কয়েক হাজার লোক এই বাজারগুলিতে আসেন। অথচ বাজারে গাড়ি পার্কিংয়ের কোনও ব্যবস্থা নেই। বাজারের রাস্তা একেই সঙ্কীর্ণ, তার উপরে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকায় অবস্থা আরও খারাপ হয়। শহরের রেল এলাকায় রয়েছে গোলবাজার ও গেটবাজার। এই দুই বাজার এলাকায় যত্রতত্র গাড়ি রাখার প্রবণতা বেশি।

অনেকক্ষেত্রে পার্কিংয়ের কোনও ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে অনেককে রাস্তার ধারে গাড়ি রাখতে হয়। গোলবাজার হকার্স মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী শ্যামল সাহার অভিযোগ, “বাজারের রাস্তা এমনিতেই সঙ্কীর্ণ। তার ওপরে দোকানের সামনে দীর্ঘক্ষণ গাড়ি-মোটরবাইক দাঁড়িয়ে থাকলে সমস্যা আরও বাড়ে। রেলকে বারবার বলেও লাভ হয়নি।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘শহরের অন্যত্রও গাড়ি রাখার জায়গা নেই। এ বিষয়ে পুরসভা উদ্যোগী হলে ভাল হয়।”

শুধু বাজার এলাকা নয়, পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় যানজট বাড়ছে রেলশহরের খরিদা, কৌশল্যা, পুরাতনবাজার, মালঞ্চর মতো এলাকাতেও। রাস্তার দু’ধারে জবরদখলের দাপটে ক্রমে সঙ্কীর্ণ হচ্ছে কৌশল্যা মোড় থেকে পুরাতনবাজার মোড় পর্যন্ত ওড়িশা ট্রাঙ্ক রোড। জবরদখলে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কৌশল্যা মোড়ে। তার উপর রাস্তার ধারে গাড়ি রাখার প্রবণতা বাড়ায় ব্যস্ত সময়ে দুর্ভোগ প্রতিদিনের ঘটনা। কৌশল্যার বাসিন্দা শিক্ষক অনুপম মাইতি বলেন, “কৌশল্যা মোড়ে যে যেখানে পারছে গাড়ি রেখে বাজার করছে। পার্কিংয়ের জায়গা না থাকায় উপায়ও নেই। যানজটে সাধারণ মানুষকে প্রতিদিন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।”

মালঞ্চ রোড সম্প্রসারিত হলেও পার্কিংয়ের জায়গা না থাকায় দোকানের সামনেই দাঁড়িয়ে থাকে গাড়ি। অবস্থা কমবেশি একই খরিদা বাজারে। বাজারের ব্যবসায়ী রাজেশ গুপ্ত বলেন, “যানজটের ফাঁসে ব্যবসা করাই দায়। জমির অভাব রয়েছে এটা ঠিকই। তবে পুরসভা চাইলে কোনও জমি কিনে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করতেই পারে।” এ বিষয়ে খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “শহরের বাজার এলাকায় জমির অভাব রয়েছে। পুরনো বাজার সরিয়ে নতুন করে বাজার গড়ে তোলা সম্ভব নয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘পুরসভার পক্ষ থেকে যেখানে নতুন করে মার্কেট কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হচ্ছে সেখানে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”

জেলার সদর শহর মেদিনীপুরেও নেই কোনও পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। শহরের কেরানিতলা, কালেক্টরেট মোড়, এলআইসি মোড়, স্কুলবাজার, বড়বাজার, রাজাবাজার, সিপাইবাজার এলাকায় রাস্তার ধারে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকায় প্রায়ই যানজট সমস্যা দেখা দেয়। শহরে কেন পৃথক পার্কিং জোন তৈরি হচ্ছে না? পুরসভার এক সূত্রের দাবি, পার্কিংয়ের পৃথক ব্যবস্থা গড়ে তোলার মতো জায়গা শহরে নেই। শহরের উপ পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাস বলেন, “সমস্যার কথা অজানা নয়। দেখছি এ বার কিছু একটা করতেই হবে!”

শহরের এক বিরোধী কাউন্সিলর বলেন, “বেআইনি পার্কিং দিনে দিনে বাড়ছে। আগামী দিনে শহরের কী হবে তার আঁচ এখনই পাওয়া যাচ্ছে!” পুলিশের এক সূত্রে খবর, পুজোর সময় যানজট এড়াতে অস্থায়ী ভাবে শহরের কিছু এলাকায় পার্কিং জোন করা হতে পারে। বেশ কিছু এলাকায় নো-এন্ট্রিও করা হতে পারে।

Traffic Jam Kharagpur Midnapore Life Hampered
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy