জেলা জুড়ে কয়েক হাজার বাসিন্দা জৈব সার (কেঁচো সার) তৈরি করছেন। কিন্তু সেই সার বিক্রি হচ্ছে না বলে অভিযোগ। ফলে সমস্যায় পড়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জৈব সার উৎপাদকরা। তাঁদের অভিযোগ, জৈব সার ব্যবহারের উপকারিতা নিয়ে কৃষি দফতর চাষিদের মধ্যে সে ভাবে প্রচার করে না। ফলে এই সমস্যা। সার উৎপাদকদের দাবি, সার ব্যবহারের বিষয়ে কৃষকদের মধ্যে প্রচার আর সার বিপণণের ব্যবস্থা করলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।
পূর্ব মেদিনীপুরের উপকৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) সুশান্ত মহাপাত্র জানান, ‘‘যখন জৈব সার কেনার প্রকল্প থাকে তখন উৎপাদকদের কাছ থেকে জৈব সার কিনে কৃষকদের দেওয়া হয়। জৈব সারের উপকারিতা নিয়েও চার করা হয়। তবে জৈব সার বিক্রির সমস্যার বিষয়ে উৎপাদকরা আমাদের জানিয়েছেন। কোন এলাকায় কত জৈব সার জমা রয়েছে, তার তালিকা আমরা চেয়েছি। ওই তালিকা কৃষি দফতরের পোর্টালে তুলে দেওয়া হবে।’’
জৈব সার ব্যবহারের ফলে কী উপকার হয়? প্রশ্নের উত্তরে মহিষাদল ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা মৃণালকান্তি বেরা জানান, জৈব সার প্রয়োগের ফলে মাটির স্বাস্থ্য ভালো হয়। গাছ সহজেই তার খাদ্য উপাদান গ্রহণ করতে পারে। তাছাড়াও মাটির অম্লত্ব, ক্ষার কম বেশি হলে তা রোধ করা যায়। অনুখাদ্যর অভাব দূর করে। তাই সকলের জমিতে জৈব সার ব্যবহার করা উচিত।
পূর্ব মেদিনীপুর ফার্মার্স অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দুর্গাপদ ভট্টাচার্য জানান, জেলা জুড়ে প্রায় দু’হাজার লোক, বিশেষত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা জৈব সার তৈরির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। তিনি জানান, প্রায় ১২০০ জৈব সার উৎপাদকের কাছে প্রায় এক হাজার মেট্রিকটন কেঁচো সার পড়ে রয়েছে। জৈব সার বিক্রি না হওয়ার পিছনে তিনিও দুষেছেন ফের ওই কৃষি দফতরকে প্রচারহীনতাকে। দুর্গাপদবাবুর দাবি, ‘‘কৃষকরা রাসায়নিক সার বিক্রেতাদের কাছ থেকে বহুজাতিক সংস্থার তৈরি জৈব সার নিতেও বাধ্য হচ্ছেন। বহুজাতিক সংস্থার তৈরি জৈব সার না নিলে তারা রাসায়নিক সারও দিতে চাইছে না। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা কৃষি দফতরে জানিয়েছি।’’
ভগবানপুর-১ব্ল কের কালুরভেড়ি গ্রামের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য নির্মলা দাসের কথায়, ‘‘গোবর, কলাগাছ, লতাপাতা, সবজি ও খাবারের অবশিষ্ঠ অংশ দিয়ে আমরা কেঁচো সার তৈরি করি। পাঁচ বছর ধরে আমরা এই কাজে যুক্ত রয়েছি। এই মুহুর্তে আমাদের প্রায় ১০ টন কেঁচো সার পড়ে রয়েছে।’’ খেজুরি ১ব্লকের অজয়া গ্রামের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য সুতপা কলা বলেন, ‘‘সাত বছর ধরে জৈব সার তৈরি করছি। কিন্তু চাষিদের মধ্যে প্রচার না থাকায় জৈব সার প্রয়োগে তাদের আগ্রহ কম। ফলে জৈব সার বিক্রিও কম হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy