মাথা ফাটল বাম সমর্থকের। বৃহস্পতিবার শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে। নিজস্ব চিত্র
মাথা ফাটল বাম সমর্থকের। বৃহস্পতিবার শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে। নিজস্ব চিত্র
বামেদের মনোনয়ন জমা দেওয়াকে ঘিরে অশান্তি ছড়াল তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক অফিস এলাকায়।
বৃহস্পতিবার বিডিও অফিসের কাছে তৃণমূলের হামলায় দুই মহিলা সহ ৮ জন বামফ্রন্ট কর্মী আহত হয়েছে বলে অভিযোগ। ক্ষুদ্ধ বামফ্রন্ট কর্মী-সমর্থকরা হলদিয়া–মেচেদা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে। অবরোধ তুলতে গেলে কোলাঘাট থানার ওসি কাশীনাথ চৌধুরীকে বাম কর্মী-সমর্থকরা হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে।
সিপিএমের অভিযোগ, আহতদের তমলুক জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ভর্তি নেওয়া হয়নি। আক্রমণের অভিযোগ অস্বীকার করে ব্লক তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, সিপিএম বাইরে থেকে লোক এনে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের সমস্ত পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির আসনে মনোনয়ন জমা দিতে এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বাম নেতা ও কর্মী-সমর্থকরা মিছিল করে বিডিও অফিসের দিকে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, বিডিও অফিসের সামনে কয়েক’শ তৃণমূল কর্মী-সমর্থক লাঠিসোটা ও হকি স্টিক নিয়ে তাদের মারধর করে। দুই মহিলা সহ ৮ বাম কর্মী-সমর্থক জখম হন। তিনজনের মাথা ফেটে যায়। এর পর ক্ষুদ্ধ বাম-কর্মী-সমর্থকরা পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে রাস্তা অবরোধ শুরু করে। কোলাঘাট থানার ওসি কাশীনাথ চৌধুরী অবরোধ তুলতে গেলে বাম সমর্থকেরা তাঁকে হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। প্রায় এক ঘণ্টা পর পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে।
সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির অভিযোগ, ‘‘আমাদের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে গেলে পুলিশের সামনেই তাদের মারধর করে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি।’’ ওসি আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। তাঁর দাবি, ‘‘পুলিশ থাকা সত্ত্বেও হামলা হওয়ায় ক্ষুদ্ধ স্থানীয় লোকজন ওসিকে ঘিরে প্রতিবাদ জানায়।’’
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক তৃণমূল আহ্বায়ক শরৎ মেট্যা বলেন, ‘‘এদিন মনোনয়ন জমা দেওয়ার অজুহাতে সিপিএম বহিরাগতদের নিয়ে বিডিও অফিসের কাছে আমাদের সমর্থকদের উপর হামলা চালায়। আমাদের তিনজন সমর্থক আহত হন।’’
মনোনয়ন ঘিরে এ দিন নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে বিজেপি কর্মীদের মিছিলের উপর সশস্ত্র হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ৫ জন জখম হন। বিজেপি সূত্রে দাবি, এদিন নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির সব আসনে মনোনয়ন জমা দিতে তাঁরা মিছিল করে বিডিও অফিস যাচ্ছিলেন। টেঙ্গুয়ার কাছে নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুদীপ খাঁড়ার নেতৃত্বে তাঁদের উপর লাঠি ও লোহার রড নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। এ দিন হলদিয়াতেও মহকুমা শাসকের দফতরে ঢুকে বিরোধীদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। জেলাপরিষদের কয়েকটি আসনে মনোনয়ন জমা দিতে এসেছিলেন এসইউসি প্রার্থীরা। সেখানে তাদের তিন কর্মীকে আটকে রাখা হয়। প্রতিক্ষেত্রেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
এ দিন নন্দীগ্রাম-২ ব্লকে তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। তৃণমূলের অভিযোগ, তাঁদের প্রার্থীরা মনোনয়ন দিতে এলে বিডিও অফিসের সামনে বিজেপির লোকজন তাদের মারধর করে। পুলিশ বিজেপির ৪ জন কর্মীকে আটক করেছে। অভিযোগ অস্বীকার করে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা তাপস পাঁজা রায়ের দাবি, ‘‘ আমাদের কর্মীদের হোটেলে খেতে দেবে না বলে হুইপ জারি করেছিল তৃণমূল। তার প্রতিবাদ করায় আমাদের মারধর করা হয়। আমাদেরও ৫ জন সমর্থক জখন হয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy