রোগীদের দেওয়া হচ্ছে দুপুরের খাবার। — দেবরাজ ঘোষ।
কেউ বলছেন, রাতে ভাতের পরিমাণটা বাড়ানো দরকার। কেউ চান, আরও একটু বেশি তরকারি। আবার কারও নালিশ, মাছের পিস রোজ এক মাপের থাকে না।
এমনটাই বক্তব্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের। জেলায় এসে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহ নিয়ে অভিযোগ পাওয়ার পরে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেদিনীপুর মেডিক্যালে রোগীদের খাবার নিয়ে তেমন অসন্তোষ না থাকলেও কিছু সমস্যা রয়েছেই। তাই খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন এড়াতে হাসপাতালগুলোয় নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “হাসপাতালে সরবরাহ করা খাবারের উপর নজরদারি থাকে। এ বার নজরদারি আরও বাড়ানো হচ্ছে।’’
জেলার সব থেকে বড় সরকারি হাসপাতাল মেদিনীপুর মেডিক্যাল। এখানে পরিস্থিতিটা ঠিক কী?
মেদিনীপুর মেডিক্যালে ৬৬০টি শয্যা রয়েছে। রোগী ভর্তি থাকে তার থেকে বেশি। হাসপাতালের এক সূত্রে খবর, গড়ে রোজ ৬০০-৭০০ জন রোগীকে দিনে তিনবার খাবার দেওয়া হয়। ডায়েট চার্ট মেনে সকালে জলখাবারে পাঁউরুটি-কলা-ডিম-দুধ, দুপুরে ভাত-ডাল-সব্জি-মাছ আর রাতে ভাত-ডাল-সব্জি-ডিম দেওয়া হয়। কিন্তু দিনে মাথাপিছু মাত্র ৫০ টাকা বরাদ্দে কী ভাবে এই আয়োজন সম্ভব হয়? হাসপাতালের এক কর্তা বলছেন, ‘‘আসলে যাঁরা ভর্তি থাকেন, তাঁরা সকলেই এখানকার খাবার খান না। অনেকের জন্যই বাড়ি থেকে খাবার আসে। বিশেষ করে যাঁদের বাড়ি মেদিনীপুরের আশপাশে। ফলে, বাকিদের খাবার দিতে সমস্যা হয় না।’’
এখানেই উঠছে প্রশ্ন। চিকিৎসাধীন সব রোগী যে হাসপাতালের খাবার খাবেন না, এটা তো সরকারেরও জানা। তাহলে যতজন ভর্তি আছেন, সেই সংখ্যা ধরে টাকা বরাদ্দ না করে, যতজন খাবার খাচ্ছেন, ততজনের টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে না কেন? তাহলে তো মাথাপিছু বরাদ্দ বাড়ানোও যায়! এ নিয়ে স্বাস্থ্যকর্তাদের মুখে কুলুপ। তবে রোগী পিছু বরাদ্দ যে বাড়ানো দরকার, তা মানছেন ঠিকাদার সংস্থার কর্মীরা। মেদিনীপুর মেডিক্যালের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার এক কর্মীর কথায়, “এখন সব জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। ৫০ টাকায় তিনবার খাবার দেওয়া সহজ ব্যাপার নয়। এ ক্ষেত্রে আবার ডায়েট চার্টও মানতে হয়। ফলে সমস্যা হয়।”
যদিও খাবার সরবরাহের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার কর্তা চন্দন সেনগুপ্ত বলেন, “খাবারের পরিমাণের দিকে সব সময় নজর রাখা হয়। মানের দিকেও নজর রাখা হয়। মেদিনীপুরে যে খাবার সরবরাহ হয়, তাতে সমস্যা থাকার কথা নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy