তমলুক ব্লকের জয়কৃষ্ণপুর ব্লকের বুথ ভিড় মহিলা ভোটারদের (বাঁ দিকে) মারিশদা পঞ্চায়েতের একটি বুথে ভোটারদের লাইন (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনার ছাড়া শান্তিতেই মিটল পূর্ব মেদিনীপুরের পঞ্চায়েত উপ-নির্বাচন। এ দিন জেলার বিভিন্ন এলাকায় মোট ২০ টি গ্রামপঞ্চায়েত ও ৪ টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন দাবি করেছে। জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের আধিকারিক দীননারায়ণ ঘোষ বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত উপ-নির্বাচনে জেলার সব কটি বুথে নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে। জেলায় গড়ে ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে।’’
সিপিএমের দলীয় বুথ অফিস তৈরির সময় বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ১০ জন। শনিবার ভোররাতে চণ্ডীপুর ব্লকের নন্দপুর-বরাঘুনি এলাকার শুকলালচক গ্রামের ঘটনা। সংঘর্ষে তৃণমূল সমর্থকদের আক্রমণে সিপিএম প্রার্থীর ইলেকশন এজেন্ট বিমল বেরা ও তাঁর ভাই সুবল বেরা-সহ সিপিএমের মোট ৫ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ। তৃণমূলেরও এক সমর্থক আহত হয়েছে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে চণ্ডীপুর থানার পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ভোটকেন্দ্রে দাঁড়িয়েই খেলায় মত্ত তিন খুদে। দাসপুর-২ ব্লকে তোলা নিজস্ব চিত্র।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চণ্ডীপুর ব্লকের নন্দপুর-বরাঘুনি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার একটি পঞ্চায়েত সমিতি আসনে ভোট ছিল। শনিবার ওই এলাকায় ভোট গ্রহণের আগে স্থানীয় শুকলালচক প্রাথমিক বিদ্যালয় বুথের কাছে দলীয়ভাবে সিপিএমের ক্যাম্প অফিস তৈরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন স্থানীয় সিপিএম কর্মী বিমল বেরা ও তাঁর ভাই সুবল বেরা সহ ৫-৬ জন দলীয় সমর্থক। সেই সময় একদল তৃণমূল কর্মী-সমর্থক লাঠি, রড নিয়ে তাঁদের উপর হামলা চালিয়ে মারধর করে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে চণ্ডীপুর থানার পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির অভিযোগ, ‘‘ওই এলাকার বিরোধীদলের সমর্থকদের ভোটগ্রহণে বাধা দিতে এদিন তৃণমূল কর্মীরা আমাদের দলের কর্মীদের উপর আক্রমণ করেছে।’’ চণ্ডীপুরের তৃণমূল বিধায়ক অমিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দু’পক্ষের সমর্থকদের সামান্য গোলমালের ঘটনা ঘটেছিল। এতে আমাদের কয়েকজন আহত হয়েছেন। সিপিএমের সমর্থকদের উপর আক্রমণের অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’
এগরা মহকুমার মোট পাঁচটি গ্রাম সংসদ ও পটাশপুরে একটি পঞ্চায়েত সমিতির উপ-নির্বাচন মিটল নির্বিঘ্নেই। সকাল ৭ টা থেকে কেন্দ্রগুলিতে শুরু হয় ভোট। তবে পুরো এলাকায় বাম শিবিরের লাল পতাকা নজরেই পড়েনি। ছিল না বামেদের কোনও বুথ ক্যাম্পও।সিপিআইএম জেলা কমিটির সদস্য ও জেলা সিটু নেতা সুব্রত মহাপাত্রের অভিযোগ, ‘‘বিরোধীদের ভয় দেখিয়ে ওরা বুথ থেকে বের করে দিয়েছে। সারা রাজ্যে সকলেই এই ভোটে তৃণমূলের সন্ত্রাসের চিত্র সকলেই দেখেছেন। ওরা গণতন্ত্র মানে না।’’ অভিযোগ উড়িয়ে পটাশপুরের বিধায়ক ও রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী জ্যোতির্ময় করের উত্তর, ‘‘কিছু বুথে বামেদের এজেন্ট ছিল। আমরা কাউকেই সরিয়ে দিই নি। তবে পটাশপুরে ওদের জন্য এখন সমর্থন নেই। তাই এই অবস্থা।’’
কাঁথি মহকুমায় ৬টি আসনে উপ নির্বাচন মিটল শান্তিতেই। এ দিন সকাল থেকেই কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের তিনটি আসনে-কুশবনি, বাঁকিপুট, রামচক-গোপালচক, ভগবানপুর-২ ব্লকে ডুমুরদাঁড়ি, কাঁথি-৩ ব্লকের মারিশদা পূর্ব ও রামংনগর -২ ব্লকে দেপাল-শাসনবাড় কেন্দ্রে ভোট দিতে যান এলাকার বাসিন্দারা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁথি মহকুমার ভোটকেন্দ্রে দুপুর ১টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ।
মহিষাদলের পঞ্চায়েত সমিতির উপ-নির্বাচনে প্রায় ৭৬ শতাংশ। শনিবার মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে নির্বাচন ছিল। ৪টি বুথের মধ্যে এদিন সকালে ৮৩ নম্বর বুথে ইভিএমে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেওয়ায় কিছুক্ষন ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল। পরে ইঞ্জিনিয়াররা গিয়ে ইভিএম সারিয়ে দেন।এর ফলে প্রায় আধঘন্টা মত ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। মহিষাদলের বিডিও তন্ময় বন্দোপাধ্যায় জানান মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে নির্বাচন ছিল। ভোট হয়েছে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy