Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Panskura

Panskura: নেতাজির স্মৃতিধন্য বাড়ি সংরক্ষণের দাবি

১৯৩৮ সালের ১১ এপ্রিল তমলুকে একটি জনসভায় যোগ দেওয়ার জন্য রেলপথে হাওড়া থেকে রওনা দেন নেতাজি।

নেতাজির স্মৃতিবিজড়িত সেই বাড়ি। ছবি: দিগন্ত মান্না

নেতাজির স্মৃতিবিজড়িত সেই বাড়ি। ছবি: দিগন্ত মান্না

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২২ ০৮:২২
Share: Save:

১৯৩৮ সালের ১১ এপ্রিল পাঁশকুড়ায় এসেছিলেন নেতাজি। স্বাধীনতা সংগ্রামী ইন্দুমতি ভট্টাচার্যের বাড়ির সামনে করেছিলেন সভা। বাড়ির মালিকানা বদল হলেও পাঁশকুড়ার জোড়াপুকুর এলাকায় তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের পাশে আজও অক্ষত রয়েছে সেই বাড়ি। নেতাজির ১২৬ তম জন্মদিনে সেই বাড়ির সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করলেন পাঁশকুড়ার কিছু বুদ্ধিজীবী। দাবি উঠল সরকারি উদ্যোগে বাড়িটি সংরক্ষণের।

১৯৩৮ সালের ১১ এপ্রিল তমলুকে একটি জনসভায় যোগ দেওয়ার জন্য রেলপথে হাওড়া থেকে রওনা দেন নেতাজি। পাঁশকুড়া স্টেশনে নেমে তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়ক ধরে নেতাজির কনভয় এগোতে থাকে। পাঁশকুড়ার জোড়াপুকুর এলাকায় তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের পাশেই স্বাধীনতা সংগ্রামী ইন্দুমতি ভট্টাচার্যের বাড়ি। ইন্দুমতির ছেলে শ্যামদাস ভট্টাচার্যও ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। তমলুক যাওয়ার পথে গ্রামবাসীদের অনুরোধে ইন্দুমতির বাড়ির সামনে একটি ছোট জনসভা করেছিলেন নেতাজি। কোনও কোনও ঐতিহাসিকের মতে সেদিন ইন্দুমতির বাড়িতে কয়েকজন স্বাধীনতা সংগ্রামীর সাথে গোপন বৈঠকও করেছিলেন নেতাজি।

শুধু নেতাজি নন। ইন্দুমতি ভট্টাচার্যের বাড়িতে অজয়কুমার মুখোপাধ্যায়, সুশীলকুমার ধাড়া, প্রফুল্ল চন্দ্র সেন, রজনীকান্ত প্রামাণিকের মতো বহু নামকরা স্বাধীনতা সংগ্রামীর যাতায়াত ছিল। সে সময় জোড়াপুকুরের ভট্টাচার্য বাড়ি এবং তার অদূরে চৈতন্যদিঘির কংগ্রেস ঘরকে ঘিরে গড়ে উঠেছিল বিপ্লবতীর্থ। ইন্দুমতি তাঁর দুই ছেলেকে নিয়ে আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় ব্রিটিশ সরকার তাঁর বাড়ির একাংশ বাজেয়াপ্ত করেছিল। গাঁধী-আরউইন চুক্তির পর ব্রিটিশরা বাধ্য হয় ঘরের দখল ছেড়ে দিতে। ২০১৩ সালের বন্যায় চৈতন্যদিঘির কংগ্রেস ঘরটি ধ্বংস হয়ে গেলেও আজও অক্ষত রয়েছে জোড়াপুকুরে নেতাজির স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটি। বাড়ির বর্তমান মালিক গৌতম মাইতি নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি। ২০১২ সালে তিনি বাড়িটি সংস্কার করেন।

এদিন পাঁশকুড়ার কয়েকজন বুদ্ধিজীবীর উদ্যোগে সেই বাড়ির সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। ওই বাড়ি ছাড়া পাঁশকুড়া এলাকায় স্বাধীনতা আন্দোলনের আর কোনও নিদর্শন অক্ষত নেই। সরকারি উদ্যোগে বাড়িটিকে হেরিটেজ ঘোষণা করে সংরক্ষণের দাবি তুলেছেন পাঁশকুড়ার মানুষ। ঐতিহাসিক সুধাংশুশেখর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘স্বাধীনতা সংগ্রামী ইন্দুমতি ভট্টাচার্যের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে সভা করেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। ওই বাড়িতে বহু স্বাধীনতা সংগ্রামীর যাতায়াত ছিল। সরকারের উচিত বাড়িটিকে অবিলম্বে হেরিটেজ ঘোষণা করে সংরক্ষণ করা।’’

এই বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panskura Netaji Subhas Chandra Bose
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE