Advertisement
১৭ মে ২০২৪

রোগী মৃত্যুতে ৫ লক্ষ ক্ষতিপূরণ

চিকিত্সার গাফিলতিতে মৃত্যু হয়েছিল নাসিমা বিবি নামে বছর আঠাশের এক রোগীর। ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায় জেনে খুশি নাসিমার স্বামী সাদেক আলি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:০৪
Share: Save:

চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগে এক চিকিত্সককে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। সম্প্রতি এই নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আদালত জানিয়েছে, ওই চিকিত্সককে আগামী এক মাসের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে হবে।

চিকিত্সার গাফিলতিতে মৃত্যু হয়েছিল নাসিমা বিবি নামে বছর আঠাশের এক রোগীর। ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায় জেনে খুশি নাসিমার স্বামী সাদেক আলি। সাদেক বলেন, “ভুল চিকিত্সার জন্যই স্ত্রীকে হারাতে হয়েছিল। যে চিকিত্সকের গাফিলতিতে স্ত্রীকে হারাতে হয়েছিল, তার বিরুদ্ধে লড়াইতে জিতে ভাল লাগছে। আশা করি, ওই চিকিত্সক এমন ভুল আর আগামী দিনে করবেন না।” সাদেকের আইনজীবী সুব্রত দাসও বলেন, “ওই চিকিত্সককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে চিকিত্সায় গাফিলতি ছিল। চিকিত্সায় গাফিলতি না থাকলে এ ভাবে রোগীর মৃত্যু হত না।”

স্ত্রীর মৃত্যুর বিচার চেয়ে মেদিনীপুরের টি কে বিশ্বাস নামে এক চিকিত্সকের বিরুদ্ধে চিকিত্সায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছিলেন মেদিনীপুর সদর ব্লকের পাঁচখুরির মহারাজপুরের বাসিন্দা সাদেক। ২০১৫ সালে জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে ক্ষতিপূরণের মামলা দায়ের করেন তিনি। ঘটনাটি ঠিক কি? ২০১৩ সালের জুলাইয়ের ঘটনা। ওই সময় পেটে যন্ত্রণা নিয়ে ওই চিকিত্সকের কাছে আসেন নাসিমা। চিকিত্সক জানান, অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন রয়েছে। চিকিত্সকের পরামর্শে মেদিনীপুরের এক নার্সিংহোমে ভর্তি হন ওই রোগী। সেপ্টেম্বরে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। অস্ত্রোপচারের পরে বাড়ি ফিরে যান। পরে ফের পেটে যন্ত্রণা হতে শুরু করে। ফের ওই চিকিত্সকের কাছে আসেন। অন্য এক নার্সিংহোমে আবারও অস্ত্রোপচার হয়। অবশ্য যন্ত্রণা কমেনি।

পরে চিকিত্সার জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন নাসিমা। হাসপাতালের চিকিত্সক শুরুতেই জানিয়ে দেন, রোগীর পরিস্থিতি ভাল নয়। কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিত্সা করানো প্রয়োজন। সেই মতো নাসিমাকে কলকাতার এক হাসপাতালে নিয়ে যান পরিজনেরা। সেখানে ভর্তিও হন। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে কলকাতার হাসপাতালেই মৃত্যু হয় এই রোগীর। জানা গিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে টি কে বিশ্বাস নাসিমাকে চিকিত্সার জন্য তিন দফায় ৭০ হাজার টাকাও দিয়েছেন।

রোগীর পরিজনেদের অভিযোগ, চিকিত্সার গাফিলতিতেই এই মৃত্যু। তাঁদের দাবি, অস্ত্রোপচারের সময় ভুল হয়েছিল। ভুল অস্ত্রোপচারের কারণেই পেটের যন্ত্রণা কমেনি। বরং দিনে দিনে তা বেড়েছে। অভিযোগ দায়েরের পরে মামলার বিচারপর্ব শুরু হয়। জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে দুই সদস্যের বেঞ্চে এই মামলার বিচার হয়। বেঞ্চে ছিলেন পুলককুমার সিংহ এবং সাগরিকা সরকার। সম্প্রতি মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে। চিকিত্সককে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE