Advertisement
E-Paper

আলোচনাতেও বরফ গলেনি, নির্দল কাঁটা পদ্ম, ঘাসফুলেও

আলোচনাতেও বরফ গলেনি। বিক্ষুব্ধদের নিয়ে অস্বস্তি রয়েই গেল গেরুয়া শিবিরে। নির্দল প্রার্থী নিয়ে অস্বস্তিতে শাসক দলও। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, পুর নির্বাচনে প্রতিবারই ভোট কাটাকাটি হয়।

দেবমাল্য বাগচি

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৫ ০১:১৫

আলোচনাতেও বরফ গলেনি।

বিক্ষুব্ধদের নিয়ে অস্বস্তি রয়েই গেল গেরুয়া শিবিরে। নির্দল প্রার্থী নিয়ে অস্বস্তিতে শাসক দলও। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, পুর নির্বাচনে প্রতিবারই ভোট কাটাকাটি হয়। এর আগেও খড়্গপুরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, খড়্গপুর বিকাশ মঞ্চের সমর্থনে নির্দল প্রার্থী দাঁড়ানোর নজির রয়েছে। তবে এ বার গোঁজ প্রার্থীরা জয় ছিনিতে নিতে পারবে, না-কি শুধুই অন্য প্রার্থীর রণে ভঙ্গ দেবে, তা অবশ্য সময়ই বলবে।

গত লোকসভা নির্বাচনে খড়্গপুর বিধানসভা কেন্দ্রে প্রথম স্থানে ছিল বিজেপি। পুরভোটেও গেরুয়া ঝড় অব্যাহত থাকার বিষয়ে আশাবাদী বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। তবে খড়্গপুরে পুরভোটে বিজেপির প্রার্থী তালিকা প্রত্যাহারের দাবিতে একাংশ বিজেপি কর্মী-সমর্থকের বিক্ষোভ দেখানোয় তাল কাটে। বিক্ষুব্ধরা বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ ও দলের শহর সভাপতি প্রেমচাঁদ ঝাঁর কুশপুতুল পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখান। নির্দল হিসেবে পৃথকভাবে ভোটে লড়াই করার হুঁশিয়ারিও দেন বিক্ষোভকারীরা। সেই মতো শহরের ১৮টি ওয়ার্ড থেকে নির্দল হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দেন বিক্ষুব্ধ কর্মীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে নামে দলের জেলা নেতৃত্ব। চার জন বিক্ষুব্ধ মনোনয়ন তুল নেন। যদিও শহরের ১৪টি ওয়ার্ডে নির্দল কাঁটা নিয়ে অস্বস্তি অব্যাহত।

খড়্গপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান তৃণমূলের জহরলাল পাল ও দলের শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীর মধ্যে বিবাদ মিটিয়ে শহরে পুরভোটের প্রার্থী তালিকা তৈরি করতে হিমশিম খেতে হয়েছে শাসক দলকেও। প্রার্থী পদ না পেয়ে শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মালা কুণ্ডু, ২৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সোমা সরেন ও ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মালবিকা সেনের মতো বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীরা নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রয়াত কাউন্সিলর কমল কুণ্ডুর স্ত্রী মালা কুণ্ডু উদীয়মান সূর্য প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ওই ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী সুকদেব সাহা। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি সোমাদেবীও।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার মালাদেবীর বাড়ি গিয়ে তাঁকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করার কথা জানান শহরের যুব নেতা আশিস সেনগুপ্ত ওরফে বাবলা। শনিবার সকালে তাঁর বাড়ি যান দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষও। মালা কুণ্ডুর দাবি, তাঁকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিয়েছিলেন আশিস সেনগুপ্ত। তবে তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে না চাওয়ায় আশিসবাবু তাঁকে ৩ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন। তিনি বলেন, “আমি আমার স্বামীর মর্যাদা রাখতে এই ওয়ার্ডের মানুষের বিশ্বাস ভাঙতে চাইনি। তাই ভোটের ময়দান থেকে সরার প্রশ্ন নেই।”

মালাদেবীর সঙ্গে কেন দেখা করতে গিয়েছিলেন?

নির্মল ঘোষ বলেন, “কমল কুণ্ডু আমাদের দলের ভাল কর্মী ছিল। তাই কমলবাবুর মৃত্যুর পরে দলের উদ্যোগে তাঁর স্ত্রীর চাকরির ব্যবস্থা করা হয়।” প্রশ্ন উঠছে, তাহলে মালাদেবীকে ভোটে লড়ার ছাড়পত্র দেওয়া হল না কেন? নির্মলবাবুর ব্যাখ্যা, “মালা আমাদের কাছে কখনও প্রার্থী হওয়ার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেননি। কিন্তু তিনি নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন। তাই তাঁকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য বুঝিয়েছিলাম।” তবে মালাদেবী মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলেও দলীয় প্রার্থীর জয়ের বিষয়ে তিনি নিশ্চিত বলেই দাবি করেন নির্মলবাবু।

দলীয় সূত্রে খবর, দলের অনুরোধ মেনে ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মী মালবিকা সেন। এ দিন মালবিকাদেবী বলেন, “দল আমাকে প্রার্থী না করে অপূর্ব ঘোষের স্ত্রীকে প্রার্থী করায় ক্ষোভ ছিল। তাই নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলাম।” মনোয়ন প্রত্যাহারের কারণ কী? উত্তরে তিনি বলেন, “নির্মলদা আমাকে বোঝানোয় মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছি।”

দলীয় প্রার্থী অপছন্দ। তাই নির্দল হিসেবে শহরের ১৮টি ওয়ার্ডে মনোনয়ন জমা দেন বিক্ষুব্ধ বিজেপির নেতা-কর্মীরা। পরে অবশ্য ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ঊষা সাহু, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের তারকেশ্বর রাও, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে রাজীব শর্মা- সহ চার জন বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। যদিও শহরের ১৪টি ওয়ার্ডে নির্দল কাঁটা নিয়ে অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে অজয় চট্টোপাধ্যায় ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডে বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীর মতো নির্দল প্রার্থীরা ভোটে ভাল প্রভাব ফেলতে পারেন। মনোনয়ন প্রত্যাহারের বিষয়ে মহকুমাশাসক সঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন, “মনোনয়ন প্রত্যাহারের আগে আমি নিজে সকলের পরিচয়পত্র দেখেছি। শেষ দিন পর্যন্ত মোট পাঁচ জন নির্দল প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন।”

municipal election Rahul Sinha Loksava Mala Kundu tmc trinamool Kharagpur BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy