Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

তিতলির দাপট নন্দীগ্রামে

মিনিট দুয়েকের তাণ্ডব! আর তাতেই লন্ডভন্ড নন্দীগ্রাম। শুক্রবার রাতে ঘুর্ণিঝড় ‘তিতলি’র দাপটের সাক্ষী থাকল নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের একাধিক গ্রাম।

বিপর্যয়: ঝড়ে ভেঙে পড়েছে গাছ। —নিজস্ব চিত্র।

বিপর্যয়: ঝড়ে ভেঙে পড়েছে গাছ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৮ ০১:০৯
Share: Save:

মিনিট দুয়েকের তাণ্ডব! আর তাতেই লন্ডভন্ড নন্দীগ্রাম। শুক্রবার রাতে ঘুর্ণিঝড় ‘তিতলি’র দাপটের সাক্ষী থাকল নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের একাধিক গ্রাম।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যা ৫টা নাগাদ শুরু হয় ঝড়। তাতেই নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের খোদামবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ‘তিতলি’র প্রভাবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে কমপক্ষে ১০টি মাটির এবং পাকা বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। বেশ কয়েকটি বাড়ির চালার টিন এবং টালি উড়ে গিয়েছে। উপড়েছে রাস্তার পাশে থাকা বহু বড় গাছ। কয়েকটি জায়গায় বড় গাছ ভেঙে আমন ধানের জমিতে পড়েছে। এমনকী, প্রবল বাতাসে ধান গাছ শুয়ে গিয়েছে। এতে আমন চাষে ক্ষতির আশঙ্কা করছে চাষিরা।

বিক্রমচকের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘দোতলা মাটির বাড়ির ছাদে ছিলাম। আচমকা সোঁ সোঁ আওয়াজ করে ঝড় শুরু হয়। নীচ নেমে আসি। ঝড়ে বাড়ির দোতলার অংশ উড়ে গিয়েছে।’’ শুধু বিক্রমচক নয়, ঠাকুরচক, সিদ্ধেশ্বর বাজার এলাকা ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শনিবার স্থানীয়েরা উদ্যোগী হয়ে ভেঙে যাওয়া গাছপালা পরিষ্কার করা শুরু করেন। একাধিক জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গিয়েছে। তারে ছেঁড়া লাইন ধান জমি এবং রাস্তায় এ দিনও পড়ে রয়েছে। ফলে শুক্রবার থেকে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ন এলাকা বিদ্যুৎহীন। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যুৎ দফতরে খবর দেওয়া হলেও শনিবার দুপুর পর্যন্ত কোনও আধিকারিক বা কর্মীরা এলাকায় আসেনি।

এ দিন সকালে আকাশ একটু ফাঁকা হতেই খোদামবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ক্ষয়ক্ষতির খোঁজ খবর নেন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। নন্দীগ্রাম-২ এর বিডিও সুরজিৎ রায় বলেন, ‘‘বেশ কয়েকটি বাড়ি এবং ধান চাষের ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়েছি। ইতিমধ্যে আমাদের হাতে রিপোর্ট এসে পৌঁছেছে। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।’’

নন্দীগ্রামের পাশাপাশি পাঁশকুড়ার মাইশোরাতেও শুক্রবার ‘তিতলি’র দাপট দেখা যায়। শুক্রবার সন্ধ্যে ৬টা নাগাদ হঠাৎ সেখানে শুরু হয় ঘূর্ণির তাণ্ডব। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, পাশের কংসাবতী নদীর জল পাক খেতে খেতে নদী বাঁধের উপরে উঠে আসে। ভেঙে পড়ে একের পর এক গাছ। মাইশোরা বাজারের বেশ কিছু দোকানের ছাউনিও উড়ে যায় ঝড়ের দাপটে। মাইশোরা এলাকায় ঝড় চলে মিনিট পাঁচেকে। তবে বাজার এলাকার বাইরে ঝড়ের কোনও তাণ্ডব দেখা যায়নি। মাইশোরা বাজারের এক দোকানদার মানস সামন্ত বলেন, ‘‘এরকম ঝড় আমরা আগে দেখিনি। তবে ঝড় আরও কিছুক্ষণ স্থায়ী হলে বড়সড় ক্ষতি হতে পারত।’’

ঝড়ে ক্ষতি হয়েছে রামনগরের বিস্তীর্ণ অংশেও। রামনগর-১ ব্লকের তালগাছাড়ি-১ এবং তালগাছাড়ি-২ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সমুদ্র লাগোয়া বহু গ্রামে জল ঢুকেছে, অনেক কাঁচা বাড়ি ভেঙেছে, ভেঙেছে বিদ্যুতের খুঁটি, চাষজমিতেও জল দাঁড়িয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বিডিও আশিসকুমার রায়। ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। বিডিও বলেন, ‘‘প্রয়োজনের সব কিছু জিনিসপত্রই দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ব্লকের ৯ টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে ২৫০ টি ত্রিপল দিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE