দীর্ঘ পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে খালের উপর রয়েছে জীর্ণ কংক্রিটের সেতু। সেই সেতু পার হতে গিয়ে গ্রামবাসী থেকে শুরু করে আশেপাশের স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা যাচ্ছেন পড়ে। হচ্ছেন আহত। বিধায়ক থেকে জেলা ও ব্লক প্রশাসনকে সেতু সারানোর আর্জি জানিয়ে মিলেছে শুধুই আশ্বাস। শেষমেশ সেতু মেরামতির দাবিতে স্কুলের ছাত্রছাত্রী এবং গ্রামবাসী মঙ্গলবার রাজ্য সড়ক অবরোধ করলেন।
এগরা-১ ব্লকের অদূরে হামারজিতা গ্রামে চম্পা খালের উপর কংক্রিটের সেতু রয়েছে। সেটি এলাকার মানুষের যোগাযোগের অন্যতম উপায়। হামারজিতা এবং একাধিক গ্রামের মানুষদের এই খালের উপর সেতু পেরিয়ে যাতায়াত করতে হয়। জীর্ণ সেতুর গার্ডওয়াল ভেঙে পড়েছে। ফলে সেতু পেরোতে সামান্য অসতর্ক হলেই খালে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচলতি মানুষ। এ দিকে, সেতু মেরামতির জন্য একে অন্যের উপর দায় ঠেলাঠেলি করেছে জেলা ও ব্লক প্রশাসন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, গত রবিবার হামারজিতা গ্রামের বাসিন্দা তপন ঘোড়াইয়ের স্ত্রী ছোট ছেলেকে নিয়ে কুদি বাজারে আসার সময় সেতু থেকে খালের জলে পড়ে যান। ঘটনায় মায়ের হাত ও ছেলের পা ভেঙে গিয়েছে। সেতু সারানো এবং ওই ঘটনায় প্রতিবাদে হামারজিতা গ্রামের বাসিন্দারা কুদি ব্রিজের কাছে এগরা-রামনগর রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন এ দিন। কোলের শিশুকে নিয়ে এদিন মহিলাদের রাস্তায় বসে থাকতে দেখা যায়।
সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত রাজ্য সড়ক অবরোধের জেরে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে এগরা থানার পুলিশ গিয়েও পথ অবরোধ তুলতে ব্যর্থ হয়। এক গ্রামবাসী দিপু ওঝা বলেন, ‘‘১৫ বছরের বেশি সময় ধরে এই জীর্ণ ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ। বিধায়ক ও জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। বাধ্যে হয়ে পথে নামতে হয়েছে।’’
শেষ পর্যন্ত বিডিও গিয়ে অবরোধ কারীদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়ায় অবরোধ তুলে নেয় বিক্ষোভকারীরা। প্রতিশ্রুতি পূরণ না হলে আগামীদিনে ফের রাজ্য সড়ক অবরোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গ্রামবাসী। এগরা-১ এর বিডিও দূর্গাপ্রসাদ ঘোষ বলেন, ‘‘অবরোধ কারীদের সঙ্গে দেখা করে কথা হয়েছে। গুরুত্ব সহকারে দ্রুত সেতু মেরামতির জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে আমরা আবেদন জানাব।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)