Advertisement
২৯ মার্চ ২০২৩
হলদিয়া মহকুমা হাসপাতাল

বন্ধ বিশ্রামাগার, বারান্দাই ভরসা রোগীর পরিজনদের

স্ত্রী মোমেনা বিবি অসুস্থ হওয়ায় হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করেছিলেন ব্রজলালচকের বাসিন্দা বৃদ্ধ শেখ বুলু। হাসপাতাল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে বাড়ি। হাসপাতাল চত্বরে রাতে থাকার ব্যবস্থা না পেয়ে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হয়েছেন।

এ ভাবে তালা বন্ধ পড়ে বিশ্রামাগার। নিজস্ব চিত্র।

এ ভাবে তালা বন্ধ পড়ে বিশ্রামাগার। নিজস্ব চিত্র।

আনন্দ মণ্ডল
হলদিয়া শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:০৪
Share: Save:

স্ত্রী মোমেনা বিবি অসুস্থ হওয়ায় হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করেছিলেন ব্রজলালচকের বাসিন্দা বৃদ্ধ শেখ বুলু। হাসপাতাল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে বাড়ি। হাসপাতাল চত্বরে রাতে থাকার ব্যবস্থা না পেয়ে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হয়েছেন। ওই বৃদ্ধ বলেন, ‘‘অসুস্থ রোগীকে রাতে ছেড়ে যেতে মন চায় না। কিন্তু হাসপাতালে তো আমাদের থাকার ব্যবস্থা নেই। তাই বাধ্য হয়ে ফিরে যাচ্ছি।’’

Advertisement

কিন্তু ওই বৃদ্ধ জানতে না পারলেও হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে রোগীর পরিজনদের থাকার জন্য বিশ্রামাগার রয়েছে। দু’ বছর আগে বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে কয়েক লক্ষ টাকা বরাদ্দে তৈরি হয়েছে বিশ্রামাগার। যদিও সেই বিশ্রামাগারের তিনটি ঘরই তালা বন্ধ পড়ে। ফলে হাসপাতালে রোগীর পরিবার-পরিজনদের থাকার ব্যবস্থা চালু হয়নি। হাসপাতালের প্রবেশ পথের বারান্দার মেঝেই ভরসা তাঁদের। হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার সুমনা দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘হাসপাতালের চত্বরে রোগীর পরিজনদের জন্য বিশ্রামাগার তৈরি হলেও সেটি এখনও আমাদের কাছে হস্তান্তর হয়নি। এ বিষয়ে যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলবে।’’

হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনের চত্বরেই রয়েছে বিশ্রামাগারটি। চালু না হওয়ায় নতুন ভবনটিও বেহাল। তিনটি ঘরই তালা বন্দি, ঘরের বৈদ্যুতিক সংযোগের তার কেউ খুলে নিয়েছে। সুইচ বোর্ড ভেঙে ঝুলছে। আর বিশ্রামাগারের বারান্দা নোংরা-আবর্জনায় ভর্তি। এক ঝলক দেখলে মনে হবে যেন ভুতুড়ে বাড়ি। জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দু’য়েক আগে তৎকালীন হলদিয়ার বিধায়ক শিউলি সাহা এই বিশ্রামগার তৈরির জন্য বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে কয়েক লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিলেন। সেই অর্থ বরাদ্দে তিনটি ঘর ও শৌচাগার-সহ নতুন এই বিশ্রামাগার তৈরি হয়।

স্থানীয় খঞ্জনচক গ্রামের বাসিন্দা দেবু দাস বলেন, ‘‘পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে রাতও কাটাতে হয়। কিন্তু একটা থাকার জায়গা নেই!’’ হাসপাতালের এক কর্মী জানান, প্রতিদিন রাতে ৫০-৬০ জন রোগীর পরিজন হাসপাতালের ইনডোর বিভাগের প্রবেশ পথের বারান্দায় মেঝেতে কাগজ বা পলিথিনের উপর বিছানা পেতে ঘুমোতে বাধ্য হন। শীত এবং বর্ষায় ভোগান্তি বাড়ে।

Advertisement

সব শোনার পর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা হলদিয়ার মহকুমাশাসক পূর্ণেন্দু নস্কর বলেন, ‘‘ওই বিশ্রামাগার কেন চালু হয়নি, সেই বিষয়টি খোঁজ
নিয়ে দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.