বিক্ষোভ ডিএসওর। তমলুকে তোলা নিজস্ব চিত্র।
মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ হতেই একাদশে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রায় সব স্কুলেই নম্বরের ভিত্তিতে সরাসরি ভর্তির ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু বেশ কিছু স্কুল অতিরিক্ত ভর্তি ফি নিচ্ছে বলে অভিযোগ একাধিক ছাত্র সংগঠনের। ছাত্র সংগঠন ডিএসও মেদিনীপুরে জেলার শিক্ষা ভবনে ডেপুটেশন দিয়ে অবিলম্বে অতিরিক্ত ভর্তি ফি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অমর শীল বলেন, “ফি ধার্য করে স্কুল। এখনও ভর্তি ফি নিয়ে তেমন কোনও অভিযোগ আসেনি। এলে সব দিক খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
মেদিনীপুরের এক-একটি স্কুলের ভর্তি ফি এক-এক রকম। কোথাও বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে ফি ২,৩০০ টাকা, আবার কোনও স্কুলে ওই একই বিভাগে ভর্তির ফি ১,১০০-১,৫০০ টাকা। কোনও স্কুলে কলা বিভাগে ভর্তি ফি ১,৬০০ টাকা। আবার কোনও স্কুলে ওই একই বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে ফি ৮০০-১,৩০০ টাকা। ডিএসও- র অভিযোগ, কলেজিয়েট স্কুল (বালক), বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ (বালক), বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ (বালিকা), অলিগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয়-সহ মেদিনীপুরের বেশ কিছু স্কুল অতিরিক্ত ভর্তি ফি নিচ্ছে। ডিএসও- র নেত্রী টুম্পা গোস্বামীর মতে, ‘‘এই বিপুল পরিমাণ ফি বহু ছাত্রছাত্রীকে স্কুলের আঙিনা থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে।’’ ছাত্র পরিষদের নেতা মহম্মদ সইফুলও বলেন, ‘‘বেশ কিছু স্কুল অতিরিক্ত ভর্তি ফি নিচ্ছে। এতে ছাত্রছাত্রীরা সমস্যায় পড়ছে।’’
বাড়তি ফি নেওয়ার ব্যাপারে পাল্টা যুক্তি রয়েছে স্কুল-কর্তৃপক্ষেরও। অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষেরই বক্তব্য, সারা বছর স্কুল দেখভালে আলাদা অর্থ বরাদ্দ হয় না। স্কুলের তহবিল থেকেই এই কাজ করতে হয়। চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের ভাতাও দিতে হয়। এ ছাড়া স্কুল চালাতে গেলে আরও কিছু খরচ হয়। ভর্তির সময় ফি না নিলে স্কুলের তহবিলে টাকা আসবে কী করে! মেদিনীপুর টাউন স্কুলের (বালক) প্রধান শিক্ষক বিবেকানন্দ চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘ক্লাসঘরগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়, মেরামত করতে হয়। এই সব স্কুল ফান্ড থেকেই হয়।’’ অলিগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি সুব্রত সরকারের বক্তব্য, “সব দিক খতিয়ে দেখেই ফি ধার্য করা হয়।’’ শহরের বিভিন্ন স্কুলের কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, ভর্তির সময় এককালীন যে ফি নেওয়া হয়, তারমধ্যে অনেক কিছুর ফি থাকে। যেমন, গেমস্, লাইব্রেরী, ম্যাগাজিন, পরীক্ষা, ডেভেলপমেন্ট প্রভৃতি।
এ দিন পূর্ব মেদিনীপুরেও বিক্ষোভ অভিযান করে ডিএসও। সংগঠনের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক অনুপ মাইতি জানান, ১৯৯৩ সালে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকা অনুযায়ী একাদশ শ্রেনীতে নির্ধারিত ভর্তি ফি শহরাঞ্চলে ছাত্র বা ছাত্রী পিছু ৯০ টাকা ও গ্রামাঞ্চল এলাকায় ৭৭ টাকা। এছাড়া ল্যাবেরেটরি ভিত্তিক প্রতি বিষয়ে বছরে ১২ টাকা করে নিতে পারে।
অনুপবাবুর অভিযোগ, ‘‘জেলার বেশ কিছু হাইস্কুল সরকারি এই নির্দেশিকাকে অমান্য করে অনেক বেশী টাকা নিচ্ছে। এমনকি কোনও স্কুলে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। ফলে জেলায় বহু দুঃস্থ পরিবারের ছাত্র-ছাত্রী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে সমস্যায় পড়ছে।’’ পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সুজিত কুমার মাইতি বলেন, ‘‘একটি ছাত্র সংগঠনের তরফে কিছু স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অতিরিক্ত টাকা নেওয়া নিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। ওই অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy