Advertisement
০২ মে ২০২৪

বৃষ্টিতে বেহাল পূর্বের অধিকাংশ সড়ক

টানা বৃষ্টিতে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে বিভিন্ন ধান, পান, ফুল, সব্জি চাষের ক্ষতি হয়েছে। তবে শুধু ফসলই নয়, ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে জলে ডুবেছে জেলার গ্রামীণ রাস্তাঘাট ছাড়াও অধিকাংশ রাজ্য সড়কে খানাখন্দ তৈরি হয়ে বেহাল হয়ে পড়েছে।

টানা বৃষ্টিতে বেহাল তমলুক-হলদিয়া রাজ্য সড়ক। গর্ত বোজানো বয়েছে বালি ও ভাঙা ইট দিয়ে। পার্থপ্রতিম দাসের তোলা ছবি।

টানা বৃষ্টিতে বেহাল তমলুক-হলদিয়া রাজ্য সড়ক। গর্ত বোজানো বয়েছে বালি ও ভাঙা ইট দিয়ে। পার্থপ্রতিম দাসের তোলা ছবি।

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৫ ০০:৫২
Share: Save:

টানা বৃষ্টিতে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে বিভিন্ন ধান, পান, ফুল, সব্জি চাষের ক্ষতি হয়েছে। তবে শুধু ফসলই নয়, ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে জলে ডুবেছে জেলার গ্রামীণ রাস্তাঘাট ছাড়াও অধিকাংশ রাজ্য সড়কে খানাখন্দ তৈরি হয়ে বেহাল হয়ে পড়েছে। জেলা পরিষদের তরফে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় তৈরি গ্রামীণ পাকা রাস্তাও চলতি ভারী বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পূর্ত দফতরের (সড়ক) পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নির্বাহী বাস্তুকার চন্দন পানিগ্রাহী বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘একটানা ভারী বৃষ্টিতে জেলার প্রায় আড়াইশো কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ছোট-মাঝারি গর্ত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সড়কে বড়সড় কোনও ক্ষতি হয়নি। সড়কের যেসব অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা আপাতত অস্থায়ী ভাবে মেরামত শুরু করা হয়েছে। বর্ষাকাল কেটে গেলে স্থায়ীভাবে মেরামতির কাজ
করা হবে।’’

জেলার সবচেয়ে ব্যস্ত সড়ক গুলির মধ্যে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক,এগরা-শোলপাট্টা, এগরা-ভগবানপুর, মহিষাদল-তেরপেক্ষ্যা প্রভৃতি পাকা সড়ক বেহাল হয়ে পড়েছে। এরফলে ওইসব রাস্তায় বিভিন্ন রুটের যাত্রীবাস চালাতে গিয়ে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে বাস চালকদের অভিযোগ । আর বেহাল রাস্তায় বাস, ট্যাক্সি বিভিন্ন গাড়িতে যাতায়াত করতে গিয়ে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে সাধারণ বাসিন্দারা । জেলার বাসমালিক সংগঠনের তরফে দ্রুত ওইসব বেহাল হয়ে যাওয়া পাকা সড়ক মেরামতির দাবি জানানো হয়েছে।

জেলা পূর্ত দফতর (সড়ক) ও জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছর বর্ষাকালে সড়ক ও গ্রামীণ রাস্তা ও মোরাম রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। সাধারণভাবে বর্ষা পেরনোর পর দুর্গাপুজো শুরুর আগে ওইসব ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামতির কাজ করা হয়ে থাকে। কিন্তু চলতি বছরে সম্প্রতি কয়েকদিন ধরে টানা ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে জেলার অধিকাংশ এলাকা জলমগ্ন হয়ে জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। একটানা ভারী বৃষ্টির জেরে জেলার অধিকাংশ গ্রামীণ মোরাম ও কংক্রিট ঢালাই করা পাকা রাস্তা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় তৈরি পাকা পিচ রাস্তার ক্ষতি হয়েছে। ওইসব রাজ্য সড়কের বেশ কিছু অংশ এতটাই বেহাল হয়ে পড়েছে যে বাস, লরি, টাক্সি, মোটরসাইকেল প্রভৃতি যানবাহন চলাচল বেশ বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। জেলার মধ্যে থাকা রাজ্য সড়কের বেশীরভাগ পূর্ত দফতরের সড়ক বিভাগের অধীনে রয়েছে। এছাড়াও বেশ কিছু রাজ্য সড়ক পূর্ত দফতরের হাতে রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের এইসব সড়কগুলির মধ্যে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে মেচেদা থেকে তমলুকের নিমতলা, সুতাহাটা থেকে দুর্গাচক পর্যন্ত সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও তমলুক থেকে টেংরাখালি, মহিষাদল থেকে গেওখালি, তেরপেক্ষ্যা থেকে মঞ্জুশ্রী, চন্ডীপুর থেকে নন্দীগ্রাম, এগরা থেকে সোলপাট্টা, এগরা-বাজকুল সড়কের এগরা থেকে ভগবানপুর, কাঁথি থেকে ললাট-গোবর্ধনপুর, কাঁথি থেকে মাজনা, খেজুরির হেড়িয়া থেকে বোগা পর্যন্ত সড়ক বেহাল হয়ে গিয়েছে। জেলার বাস চালকদের অভিযোগ, রাস্তার মধ্যে প্রচুর গর্ত থাকার ফলে ওই অংশের উপর বাস চালাতে গিয়ে যে কোন সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে গিয়েছে।

বাস মালিকদের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বাস ব্যবসায়ী কল্যান সমিতির সম্পাদক মহম্মদ সামসের আরেফিন বলেন, ‘‘সড়ক বেহাল হয়ে যাওয়ায় বাস চলাচলে বিপদের ঝুঁকি বেড়ে গিয়েছে। এছাড়া বাসের যন্ত্রপাতি খারাপ হয়েছে। র্সাতগুলো দ্রুত সারালে ভাল হয়।’’ জেলা পূর্ত ( সড়ক ) দফতরের হাতে থাকা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রায় ৪০০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টিতে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন অংশে ছোট-বড় মাপের খানাখন্দ তৈরি হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ বেরা বলেন, ‘‘রাস্তার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে আধিকারিকরা বিভিন্ন রাস্তা পরিদর্শন করছেন। রাস্তা মেরামতির জন্য রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব
পাঠানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

heavy rain ananda mandal haldia tamluk
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE