—নিজস্ব চিত্র।
সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল গড়ে গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়নে জোর দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রকেও গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নীত করা হচ্ছে। যদিও চিকিৎসক সঙ্কটে সবং গ্রামীণ হাসপাতালের পরিষেবা তলানিতে ঠেকেছে বলে অভিযোগ। হাসপাতালের রোগী ও তাঁর পরিজনের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগও উঠছে।
অনেক দিন আগেই ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে উন্নীত হয়েছে সবং গ্রামীণ হাসপাতাল। যদিও চিকিৎসা পরিষেবার মানোন্নয়ন হয়নি বলে অভিযোগ। হাসপাতালে আট জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও রয়েছেন ৫ জন। তিনজন থাকার কথা, অথচ নেই কোনও ‘পাবলিক হেলথ্ নার্স’। সাফাই কর্মী ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর সংখ্যাও প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত। সাফাই কর্মীর অভাবে হাসপাতাল চত্বরের পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর বলে অভিযোগ।
শুধু তাই নয়, হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে প্রায়ই রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগও উঠছে। গত ১৭ অক্টোবর হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয় সবংয়ের চাঁদকুড়ির বাসিন্দা বছর বত্রিশের কাজল জানার। তাঁর স্বামী সুনীল জানার অভিযোগ, “সঠিক ভাবে অবশ না করে স্ত্রীর অস্ত্রোপচার করায় যন্ত্রণা হচ্ছিল। সেই সময় কর্তব্যরত চিকিৎসকের সামনে নার্স আমার স্ত্রীকে মারধর করেন। এটা আমি মানতে পারছি না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘প্রায়ই রোগীরা দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করছেন। আমি চাই না, আর কারও সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা ঘটুক।”
পরিষেবা নিয়েও অভিযোগ রয়েছে বিস্তর। রোগীদের অভিযোগ, প্রায় দিনই বহির্বিভাগে চিকিৎসক আসতে দেরি করেন। রাতেও অধিকাংশ সময় জরুরি বিভাগে চিকিৎসক থাকেন না। এক রোগীর পরিজনের অভিযোগ, ‘‘শয্যার তুলনায় বেশি রোগী ভর্তি থাকায় অনেকেরই মেঝেতে ঠাঁই হয়। চিকিৎসকেরা নিয়মিত থাকেন না। নার্সরাও উদাসীন।’’ স্কুল শিক্ষক অরিজিৎ দাসঅধিকারীর অভিযোগ, “হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা অমানবিক হয়ে উঠেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে পরিষেবা প্রদানের কাজে খামতি নেই। তবে চিকিৎসকেরা বাইরে প্র্যাকটিস করার জন্য হাসপাতালে সময় দিতে পারছেন না। এই অবস্থার বদল প্রয়োজন।”
হাসপাতালে অব্যবস্থার অভিযোগ প্রসঙ্গে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুভাষ কাণ্ডার বলেন, ‘‘হাসপাতালে রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার বা চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগের কথা আমার জানা নেই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘হাসপাতালে চিকিৎসক ও কর্মীর অভাব রয়েছে। যদিও হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে সাফাইকর্মী কম থাকায় সমস্যা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে কর্মী-চিকিৎসকের অভাবের কথা জানিয়েছি।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “দুর্ব্যবহার করার ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। রোগীদের সঙ্গে নার্সরা যাতে ভাল ব্যবহার করেন সে জন্য আলাদা ক্লাস নেওয়া হবে।’’ এ বিষয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “দুর্ব্যবহারের অভিযোগ বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আমি খোঁজ নেব। হাসপাতালে চিকিৎসকের অভাব থাকলেও চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। চিকিৎসক পাওয়া গেলে দেওয়া হবে। বিষয়টি দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy