নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় সবুজসাথীর সাইকেলের আবেদন জানিয়েছিল এক কিশোরী। স্কুল ছেড়ে বর্তমানে কলেজে পাঠরত ওই যুবতীর ভাগ্যে অবশ্য এখনও জোটেনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের ‘সবুজ সাথী’। হাল না ছেড়ে এখনও সাইকেলের আশায় হন্যে হয়ে প্রশাসনের কাছে ছুটে বেড়াচ্ছেন পাপিয়া সামন্ত।
শুধু পাপিয়া একা নন, তাঁর সহপাঠীরাও সাইকেল ‘বঞ্চনা’র শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ। এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই, শোরগোল পড়ে গিয়েছে প্রশাসনিক স্তরে। জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এমন সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন হাজার দুয়েক স্কুলপড়ুয়া। ২০১৪ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত কেন আবেদনকারীদের হাতে পৌছে দেওয়া গেল না সাইকেল, তা নিয়ে সদুত্তর নেই প্রশাসনের কাছেও।
সুতাহাটা ব্লকের বাসুদেবপুরের বাসিন্দা পাপিয়া সামন্ত বর্তমানে হলদিয়া গভর্নমেন্ট কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘সুতাহাটা নারী কল্যাণ হাইস্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় সবুজসাথী প্রকল্পে সাইকেল পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু এখনও পাইনি। বারবার স্কুলে জানিয়েছি। স্কুল পেরিয়ে এখন কলেজে পড়ছি। তাও আসেনি সাইকেল।’’ খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, শুধু পাপিয়া নন, সবুজসাথীর সাইকেল জোটেনি ওই স্কুলের ২০১৪ সালের পঞ্চাশেরও বেশি পড়ুয়ার। এঁদের অনেকেই এখন কলেজে পড়ছেন। কেউ আবার পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে সংসার করছেন।
কিন্তু আবেদন করেও কেন জুটল না ‘সবুজ সাথি’?
ওই স্কুলের তরফে দাবি করা হয়েছে, রাজ্য সরকারের নিয়ম মেনে নবম শ্রেণির পড়ুয়াদের আবেদন পত্র জমা দিয়েছিলাম ব্লক প্রশাসনের কাছে। শিক্ষাবর্ষ পেরিয়ে গেলেও, সাইকেল না আসায় শিক্ষা দফতর এবং ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছি। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, নবম শ্রেণিতে পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের সাইকেল দেওয়া হবে। সেইমত তাদের আবেদন পত্র সংগ্রহ করে জমা দিতে হয় সংশ্লিষ্ট দফতরে। কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ‘সবুজ সাথী’ নিয়ে অনেক জটিলতা ছিল। সেই বছর জেলার বহু পড়ুয়া এখনও সাইকেল পাননি। ওই সময় প্রায় ৩৬ হাজার ছাত্রছাত্রী আবেদন জমা দিয়েছিল। তার মধ্যে এখনও প্রায় আঠারোশো পড়ুয়া সাইকেল পায়নি বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফে বেশ কয়েকবার ‘নবান্ন’তে দরবার করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও শিকে ছেঁড়েনি ‘সবুজসাথী’র।
সুতাহাটার বিডিও সঞ্জয় শিকদার বলেন, ‘‘কিছু সমস্যার জন্য ওই বছর অনেকের সাইকেল আটকে গিয়েছিল। কোন কোন স্কুলের কত জন পড়ুয়া সাইকেল পায়নি, আমরা তার তালিকা বানিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। এখনও তার কোনও খবর নেই।’’
জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হয়েছে। এখনও সাইকেল না মেলায় কাউকে তা দেওয়া যাচ্ছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy