Advertisement
১৯ মে ২০২৪
নোট বাতিলের জের

মন্দা কাটেনি, বিক্রি কমেছে সোনা-গয়নায়

শহরের কৌশল্যা, ইন্দা, মালঞ্চ এলাকায় রয়েছে একাধিক সোনা দোকান। গোলবাজারের ভাণ্ডারিচক সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ৯টি সোনার গয়নার শো-রুম।

মন্দা: বিক্রি কমেছে। ফাঁকা সোনার দোকান। খড়্গপুরের গোলবাজারে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

মন্দা: বিক্রি কমেছে। ফাঁকা সোনার দোকান। খড়্গপুরের গোলবাজারে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

দেবমাল্য বাগচী
শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৩২
Share: Save:

ধনতেরস আলো দেখালেও মন্দা ঘোচেনি স্বর্ণশিল্পে। নোটবন্দির পর থেকে বিক্রিতে ভাটা পড়ায় ক্ষতির আশঙ্কায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন খড়্গপুর শহরের সোনা দোকানের মালিকরা।

শহরের কৌশল্যা, ইন্দা, মালঞ্চ এলাকায় রয়েছে একাধিক সোনা দোকান। গোলবাজারের ভাণ্ডারিচক সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ৯টি সোনার গয়নার শো-রুম। ছোট থেকে বড়, অধিকাংশ দোকানের মালিকই বলছেন, ‘‘পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের ঘোষণার পর থেকে আর সে ভাবে স্বর্ণশিল্প ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। মানুষের হাতে নগদের জোগান কমায় খুব প্রয়োজন না হলে অনেকেই সোনার গয়না কেনার পথে হাঁটছেন না।’’

আর এক সোনার ব্যবসায়ী বলছেন, ‘‘৫০ হাজার টাকার সোনার গয়না কিনলেই প্যান কার্ড দেখানোর নিয়ম থাকায় ধনতেরসের আগে ব্যবসায় ধস নেমেছিল। পরে এই টাকার ঊর্ধ্বসীমা ৫০ হাজার থেকে বাড়িয়ে দু’লক্ষ টাকা করা হয়। তারপরে ধনতেরসে বিক্রিবাটা একটু বাড়লেই উৎসবের মরসুম শেষ হতেই অবস্থা আবার যে কে সেই।’’ আগে যেখানে কোনও উৎসব ছাড়াই অনেকে গয়না কিনতেন, এখন অনুষ্ঠান বাড়ি ছাড়া গয়না কেনার প্রবণতা কমছে, মত আর এক ব্যবসায়ীর।

কেন সোনা কেনায় অনীহা বাড়ছে? খড়্গপুরের ইন্দার বধূ মৌসুমী দাস বলেন, “আমি গৃহশিক্ষকতা করি। এতদিন বাড়িতে টাকা জমিয়ে রাখতাম। সেই টাকা দিয়েই সোনার গয়না কিনতাম। কিন্তু এখন তো টাকা ব্যাঙ্কে রাখতে হচ্ছে। তাই নোটবন্দির পরে সোনা কেনায় ঝোঁক কমে গিয়েছে।” একই বক্তব্য মালঞ্চর বাসিন্দা পাপিয়া সেনেরও। তাঁর কথায়, “সোনার গয়নার প্রতি একটা আকর্ষণ তো আছেই। যদিও নোটবন্দির পরে গয়না কেনার ঝোঁক কমেছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সত্যি বলতে কী, বাড়িতে টাকা জমিয়ে রাখতে এখন ভয় হয়। কখন আবার কোন নোট বাতিল হয়ে যায়। তাই হাতে টাকা না থাকায় গত একবছরে সোনার গয়না কেনা হয়নি।”

আর এখানেই আশঙ্কার মেঘ ঘনিয়েছে স্বর্ণশিল্পে। গোলবাজারের সোনা ব্যবসায়ী বিক্রম রাও বলেন, “গত একবছরে ব্যবসা ঘুরে দাঁড়ায়নি। ধনতেরসে বাজার কিছুটা চাঙ্গা হলেও আবার বিক্রিবাটায় মন্দা। মানুষের হাতে টাকা না থাকলে সোনা কিনবে কী ভাবে!’’ তাঁর কথায়, ‘‘ব্যাঙ্কে থেকে টাকা তুলে সোনা কেনাকাটায় অনেকেরই অনীহা। তার ওপরে ৩ শতাংশ জিএসটি চালু হওয়ায় মানুষ সোনা কেনা থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন।” ইন্দার একটি গয়নার শোরুমের ম্যানেজার সুজয় নাথও বলছেন, “নোটবন্দি আর সোনার ওপর ৩ শতাংশ জিএসটি, এই জোড়া কারণে গত এক বছরে সোনার গয়না কেনার হার কমেছে। কবে এই পরিস্থিতি কবে কাটবে জানিনা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jewellery Demonetisation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE