Advertisement
E-Paper

সুদ ফেরাতে হিমশিম বহু স্কুল

স্কুলের উন্নয়নে সর্বশিক্ষা মিশন অর্থ বরাদ্দ করছে গত ১৫ বছর ধরে। এত দিনে সুদের টাকা ফেরত চেয়েছে তারা। সেই চিঠি পেয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের বহু স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের মাথায় হাত। কারণ, সুদের টাকায় কেউ টেলিফোন বিল মিটিয়েছেন, কেউ বিদ্যুৎ বিল, কেউ বা আবার চক-ডাস্টারের মতো শিক্ষা সামগ্রী কিনেছেন।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:২৫

স্কুলের উন্নয়নে সর্বশিক্ষা মিশন অর্থ বরাদ্দ করছে গত ১৫ বছর ধরে। এত দিনে সুদের টাকা ফেরত চেয়েছে তারা। সেই চিঠি পেয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের বহু স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের মাথায় হাত। কারণ, সুদের টাকায় কেউ টেলিফোন বিল মিটিয়েছেন, কেউ বিদ্যুৎ বিল, কেউ বা আবার চক-ডাস্টারের মতো শিক্ষা সামগ্রী কিনেছেন।

সর্বশিক্ষা মিশন অবশ্য সাফ জানিয়েছে, সুদের টাকা অন্য খাতে খরচ হলে তার দায় স্কুলকেই নিতে হবে। সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পের জেলা আধিকারিক তাপস মহান্তি বলেন, ‘‘রাজ্য থেকে নির্দেশ এসেছে। সেই মতোই স্কুলগুলোকে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।’’

পশ্চিম মেদিনীপুরে চার হাজারেরও বেশি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। আর হাইস্কুল এক হাজারেরও বেশি। ২০০০-’০১ অর্থবর্ষ থেকে সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্প শুরুর পরে বেশিরভাগ স্কুলই অর্থ সাহায্য পেয়েছে। কোথাও ক্লাসঘর তৈরির জন্য, কোথাও সীমানা পাঁচিল নির্মাণে, কোনও স্কুলে মিড ডে মিলের রান্নাঘর, কোথাও আবার শৌচাগার নির্মাণে টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এমন নয় যে স্কুলগুলি টাকা খরচ করতে পারেনি বলে বেশি সুদ জমা হয়েছে। স্কুলগুলোর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোনও বিশেষ কাজের জন্য টাকা এলে স্বাভাবিকভাবেই বছর শেষে সুদ জমা হয়। কারণ, একটা কাজ বেশ কিছু দিন ধরে চলে। সেই সুদই ফেরাতে হবে। ফেরতযোগ্য টাকার পরিমাণ নেহাত কম নয়। জেলা শিক্ষা ভবনের এক কর্তার অনুমান, “প্রাথমিক স্কুলগুলো থেকে গড়ে ৪-৫ হাজার টাকা এবং হাইস্কুলগুলো থেকে গড়ে ২০-৩০ হাজার টাকা ফেরত পাওয়া যেতে পারে।’’ কেশপুরের তোড়িয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক উৎপল গুড়ে বলেন, “হিসেব করে দেখেছি, স্কুলকে প্রায় ২৪ হাজার টাকা ফেরত দিতে হবে।’’ শালবনির মৌপাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসূনকুমার পড়িয়ার কথায়, “প্রায় ১৬ হাজার টাকা ফেরত দিতে হবে।’’

উপায়ান্তর না দেখে বহু স্কুল নিজস্ব তহবিল থেকে টাকা মেটাচ্ছে। আর তাতে যে বিস্তর সমস্যা হচ্ছে, তা মানছে শিক্ষক সংগঠনগুলিও। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক উত্তম সাঁতরা বলেন, “হঠাৎ করে কেন এই টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলা হয়েছে বুঝতে পারছি না। এতে স্কুলগুলো বিপাকে পড়েছে।’’ উত্তমবাবুর ব্যাখ্যা, স্কুলগুলোর নিজস্ব কিছু খরচ থাকে। যে টাকা অন্য কোনও খাত থেকে বরাদ্দ হয় না। সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থের সুদের টাকা স্কুলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই জমা থাকত। স্কুলগুলো এখান থেকে প্রয়োজনীয় খরচ করতে পারত। ফলে, কিছুটা সুরাহা হত। তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি চন্দন সাহাও বলেন, “এই নির্দেশে অনেক স্কুল সমস্যায় পড়েছে। সর্বশিক্ষা মিশনের বরাদ্দ টাকার সুদ অন্য খাতে খরচ করা যায় না ঠিকই। তবে এতদিন তো সুদের টাকা ফেরত চাওয়া হয়নি। ফলে, যে সব স্কুল সুদের টাকা অন্য খাতে খরচ করে দিয়েছে তাদের সমস্যা হবেই।’’

গত ১৫ বছর ধরে সুদের টাকা ফেরত চাওয়া হয়নি। ফলে, স্কুলগুলিও এ নিয়ে গা করেনি। এখন একসঙ্গে সব সুদ ফেরত চাওয়া সমস্যা বেধেছে। নগদে নয়, টাকা ফেরত দিতে হবে চেকে। স্কুলের তরফে সংশ্লিষ্ট এসআই অফিসে চেক জমা পড়বে। এসআই অফিস থেকে চেক যাবে জেলায়। তবে এই টাকা জোগাড়েই এখন হিমশিম দশা স্কুলগুলির।

Sarva Shiksha Mission School student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy