বয়স ১৭ থেকে ২০। কেউ স্কুলছুট, কেউ কলেজ পড়ুয়া। ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন মোড়ে ঠেক মাতিয়ে রাখে এরাই। প্রকাশ্যে মহিলাদের কটূক্তি-কুপ্রস্তাব দেওয়াটা এদের কাছে জলভাত। অপরাধ করে রাজনৈতিক শরণ দাদাদের—সাতখুন মাফ!
২০১৫-র ফেব্রুয়ারিতে শহরের অদূরে ধবনী এলাকায় চিড়িয়াখানার সামনে বচসার জেরে এক খাবার দোকানের কর্মীকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে খুন করা হয়। সেই ঘটনায় অভিযুক্ত সৌম্যদীপ মজুমদার ওরফে ‘রান্টি’ ও তার দলবলই শুক্রবার ননীবালা বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করেছিল বলে অভিযোগ। স্কুল ঘিরে রেখে হুমকি দেয়, বাড়ি ফেরার পথে প্রতিবাদী ছাত্রীদের দুই সহপাঠী ছাত্রকে বেধড়ক মারধরও করে তারা। ঝাড়গ্রাম থানায় বাছুরডোবার বাসিন্দা সৌম্যদীপ মজুমদার-সহ চার জনের নামে এফআইআর করেছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাদের একজনও ধরা পড়েনি। এক নাবালক-সহ অন্য দু’জনকে অবশ্য গ্রেফতার করে রবিবার আদালতে হাজির করে পুলিশ। তাদের নাম কিন্তু এফআইআর-এ নেই। যদিও পুলিশের দাবি, ধৃতরা ইভটিজারদের দলে ছিল।
ধৃত বছর কুড়ির দেবজ্যোতি মাহাতোর বাবা ভবেশ মাহাতো অবশ্য ঝাড়গ্রাম আদালতে দাবি করেন, “আমার ছেলে মানিকপাড়া কলেজে পড়ে। সে ওই ঘটনায় জড়িত নয়।” রবিবারই জামিন পেয়ে যায় দেবজ্যোতি। অপর নাবালককে মেদিনীপুর জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে হাজির করা হলে সেও জামিন পায়।
শনিবার পর্যন্ত সৌম্যদীপ ও তার দলবলকে এলাকায় ঘুরতে দেখা গিয়েছিল। এমনকী শাসকদলের বিভিন্ন নেতার কাছে গিয়ে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপের দরবারও করে তারা। স্কুল কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি মিটিয়ে নিতে বলা হয় বলে জানা গিয়েছে। স্কুল অবশ্য মীমাংসার পথে যায়নি। অভিভাবকদের একাংশের বক্তব্য, “অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লঘু ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। আমাদের মেয়েদের নিরাপত্তা কোথায়?” এক অভিভাবক সরাসরি বলেন, “রান্টি প্রায়ই নিজেকে জেলখাটা খুনের আসামী বলে এলাকায় হুমকি দেয়। পথেঘাটে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। ২ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপিতাই তো ওদের আশ্রয় দিচ্ছেন।” ওই তৃণমূল কাউন্সিলর কল্লোল তপাদার বলেন, “অভিযুক্তরা সপরিবারে পালিয়ে গিয়েছে। ওরা যাতে আত্মসমর্পণ করে সেই চেষ্টা করছি।”
শুধু ননীবালা স্কুল নয়, শহরের মধুবন মোড়, পুরনো এলআইসি’র মতো বেশ কয়েকটি এলাকায় ইভটিজাদের উৎপাত বেড়েছে। সন্ধ্যে হলেই অন্ধকার অলিগলিতে নেশাড়ুদেরও মৌতাত জমে ওঠে। ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজেও বহিরাগত কিছু যুবক নিয়মিত কলেজে আসর বসায় বলে অভিযোগ। পুলিশের অবশ্য দাবি, শহরের বিভিন্ন রাস্তায় পুলিশ ও সিভিক ভলাল্টিয়ারদের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy