Advertisement
০৩ মে ২০২৪

পায়ে পায়ে শহর দেখার ফাঁকে ঐতিহ্যের খোঁজ

ছাত্রছাত্রীরা খুশি। তাঁরা বলছেন, এই দিনটার কথা তাঁদের অনেক দিন মনে থাকবে। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ ছিলেন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র। তিনিও বলেন, ‘‘এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। অনেক ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। এ সব সংরক্ষণ করা দরকার।’’

মেদিনীপুরের পথে দাঁতনের ভট্টর কলেজের পড়ুয়ারা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

মেদিনীপুরের পথে দাঁতনের ভট্টর কলেজের পড়ুয়ারা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:১০
Share: Save:

পায়ে হেঁটে মেদিনীপুরের ঐতিহ্যশালী এলাকাগুলে ঘুরে দেখলেন একদল ছাত্রছাত্রী। নতুন করে চিনলেন এই শহরকে।

ছাত্রছাত্রীরা খুশি। তাঁরা বলছেন, এই দিনটার কথা তাঁদের অনেক দিন মনে থাকবে। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ ছিলেন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র। তিনিও বলেন, ‘‘এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। অনেক ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। এ সব সংরক্ষণ করা দরকার।’’

মেদিনীপুরের ইতিহাস, ঐতিহ্য চেনাতে-জানাতেই সোমবার ‘হেরিটেজ ওয়াক’-এ বেরোন পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন ভট্টর কলেজের একদল ছাত্রছাত্রী। সকালেই দলটি শহরে চলে আসে। দিনভর হেঁটে হেঁটে চলে শহর দেখা। কলকাতার মতো মহানগরে ‘হেরিটেজ ওয়াক’ নতুন নয়। কিন্তু মেদিনীপুরের মতো শহরে একেবারে নতুন। শ্যামপদ মানছেন, ‘‘মেদিনীপুরে এর আগে এমন কর্মসূচি হয়েছে বলে মনে পড়ছে না।’’ কলেজের ইতিহাস আর ভূগোল বিভাগের উদ্যোগে এই কর্মসূচি। কলেজের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক প্রণব বর্মনের কথায়, ‘‘আমরা ছাত্রছাত্রীদের কাছে মেদিনীপুরের ইতিহাসকে তুলে ধরতে চেয়েছিলাম। এখানকার ঐতিহ্য জানাতে চেয়েছিলাম।’’ ভট্টর কলেজের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক উদয় চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলো সংরক্ষণ করতে সচেতন করাও এই কর্মসূচির অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল। সব দেখে পড়ুয়ারা আপ্লুত। এটাই প্রাপ্তি।’’

রুটম্যাপ করা হয়েছিল আগেই। সেই মতোই শহরের একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্তে ঘুরেছে দলটি। গিয়েছে কালেক্টরেটের রেকর্ড রুমে, মিউজিয়ামে। পরে মেদিনীপুর কলেজ, মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল (বালক), বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ (বালক), মেদিনীপুর টাউন স্কুলে (বালক)। প্রতিটি জায়গার খুঁটিনাটি অধ্যাপকেরা ছাত্রছাত্রীদের জানিয়েছেন। দাঁতন ভট্টর কলেজের অধ্যক্ষ পবিত্রকুমার মিশ্রের কথায়, ‘‘আমরা মেদিনীপুরের ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলোর সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের পরিচিতি করাতে চেয়েছিলাম। এ সব সংরক্ষণ করা যে জরুরি তাও বোঝাতে চেয়েছিলাম। পাশাপাশি, এ নিয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে চেয়েছিলাম।’’

শহর মেদিনীপুরের তস্য গলির মধ্যেও রয়েছে নানান ইতিহাস। শহরের পরতে পরতে লুকিয়ে রয়েছে ইতিহাসের এমন সব কাহিনি যার অনেক কিছুই অজানা রয়ে গিয়েছে এ প্রজন্মের কাছে। পায়ে হেঁটে শহরের অলিগলিতে ঘুরে ঐতিহ্য জানতে পেরে খুশি ছাত্রছাত্রীরাও। স্নাতকের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অর্চনা পড়্যার কথায়, ‘‘খুব ভাল লাগল। অনেক কিছু জানলাম।’’ স্নাতকোত্তরের প্রথম বর্ষের ছাত্রী রীতা বেরাও বলছেন, ‘‘ মেদিনীপুরে অনেক ঐতিহ্যশালী এলাকা রয়েছে। সেগুলো সকলে মিলে ঘুরে দেখেছি। দারুণ অভিজ্ঞতা।’’

দলে ছিলেন স্নাতকের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র স্বপন দাস। স্বপনের একটি চোখ দৃষ্টিহীন। তাতেও মোবাইলে শহরের ছবি বন্দি করেছেন তিনি। স্বপনের কথায়, ‘‘এ এক অন্য রকম অনুভূতি।’’

রীতারা বলছেন, ‘‘আবার এ ভাবে মেদিনীপুরে আসতে চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cllege Students Heritage Walk
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE