প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিশু শিক্ষা কেন্দ্র ও মাদ্রাসা শিক্ষা কেন্দ্রের যে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হয়, তাতে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য কয়েকটি খেলা আয়োজনের সরকারি নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় শুরু হওয়া চলতি বছরের প্রাথমিক পড়ুয়াদের চক্র স্তরের ক্রীড়ায় সেই ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ।
বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পাঠরত বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন (প্রতিবন্ধী) শিশুদের এই প্রতিযোগিতায় যোগাদানে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে একাধিক প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন। তবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি মানস কুমার দাসের দাবি, ‘‘প্রাথমিক পড়ুয়াদের জন্য বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য আলাদা কোনও প্রতিযোগিতার নির্দেশ নেই। তাই অন্য শিশুদের সঙ্গে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের যোগদানের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন চক্রে এই প্রতিযোগিতা করা হচ্ছে।’’
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ ও সর্ব শিক্ষা মিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’বছর আগেও প্রাথমিক পড়ুয়াদের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় চক্রস্তরে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য ডিসকাস থ্রো, ৫০ মিটার দৌড়, স্মৃতি দৌড়, আলু দৌড়-এমন নানা আয়োজন ছিল। এর জন্য সর্বশিক্ষা মিশন থেকে প্রতিটি চক্রকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হত। কিন্তু গত বছর থেকে সেই অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে না। তাই প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা হচ্ছে না বলেই অভিযোগ।
শনিবার তমলুক উত্তর চক্রে প্রাথমিক পড়ুয়ায়দের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ছিল। কিন্তু সেখানে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের যোগদানের কোনও সুযোগ ছিল না। ওই চক্রের মধ্যে থাকা চিয়াড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির হুজাইফা খানের পায়ের অস্থি সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে। দু’বছর আগে সে স্মৃতি দৌড়ে পুরস্কার পেয়েছিল। কিন্তু এখন খেলায় যোগ দিতে পারেনি সে। হুজাইফা বলে, ‘‘গত বছর আমি খেলতে চাইলেও খেলার ব্যবস্থা ছিল না। এ বছরও একই হল। এমনকী খেলা দেখতে যেতেও পারিনি।’’
চক্রের প্রাথমিক ক্রীড়া আয়োজক কমিটির সদস্য তথা প্রাথমিক শিক্ষক জয়দেব বর্মণ বলেন, ‘‘চক্র স্তরের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের আলাদা ইভেন্ট থাকা উচিত ছিল। গত বছর থেকে কী কারণে বন্ধ, জানা নেই।’’ বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক সতীশ সাহু বলেন, ‘‘প্রতিবন্ধী শিশুদের বঞ্চনা করা হচ্ছে। সংসদ এবং প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’’
হুজাইফা বলে, ‘‘দু’ বছর ধরে আর খেলার সুযোগ পাই না।, বন্ধুদের থেকে একটু আলাদা বলে কি খেলার সুযোগটুকুও পাব না?’’ উত্তর কবে মিলবে, জানে শুধু সংসদ আর প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy