Advertisement
০৫ মে ২০২৪

কাজ দেখে খুশি নয় স্ট্যান্ডিং কমিটি

বিধানসভার পূর্ত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের স্ট্যান্ডিং কমিটি বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে বৈঠক করে। মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে ওই বৈঠক হয়। ছিলেন জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা সহ জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা।

বৈঠক: কমিটির প্রতিনিধিদের আলোচনা। নিজস্ব চিত্র

বৈঠক: কমিটির প্রতিনিধিদের আলোচনা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩৩
Share: Save:

জেলায় এসে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কাজকর্ম দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করল বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটি। কমিটির চেয়ারম্যান তথা মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হকের কথায়, “জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কাজ নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট নই।” চেয়ারম্যানের এই কথায় অস্বস্তিতে পড়েন জেলা প্রশাসনিক আধিকারিক, ওই দফতরের আধিকারিক এবং শাসক দলের বিধায়কেরা। যদিও শাসক দলের এক বিধায়কের স্বীকারোক্তি, “চেয়ারম্যানের পর্যালোচনা ভুল নয়। ওই দফতরের কাজে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে।”

বিধানসভার পূর্ত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের স্ট্যান্ডিং কমিটি বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে বৈঠক করে। মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে ওই বৈঠক হয়। ছিলেন জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা সহ জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা। ছিলেন জেলার বিধায়কেরাও। কমিটির পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধি দল এদিনই পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে পূর্ব মেদিনীপুর চলে গিয়েছে। বৈঠক শেষে কমিটির চেয়ারম্যান মইনুল হক বলেন, “জঙ্গলমহলে কাজের চেষ্টা আছে। সরকারের বাড়তি কিছু করার চেষ্টা প্রথম থেকেই আছে। তবে সমস্যা হচ্ছে দফতরের কিছু লোক ঠিক মতো কাজ করছেন না। বিশেষ করে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের।” তাঁর কথায়, “অভিযোগটা বেশির ভাগ পাচ্ছি এই দফতরের বিরুদ্ধে। ওদের গাফিলতির জন্য মানুষ গ্রামে গ্রামে পরিস্রুত জল পাবে, সেটা পাচ্ছে না। এদের গাফিলতির জন্য অনেক জায়গায় প্রকল্প আটকে আছে।” তিনি বলেন, “আমরা এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। কাজগুলোকে দ্রুত গতিতে শেষ করার কথা বলেছি। বিশেষ করে যে প্রকল্পগুলো মঞ্জুর হয়ে গিয়েছে।”

চেয়ারম্যান বলেন, “নির্দেশ আছে, প্রকল্পের কাজ শেষ হলে তা প্রধানদের হস্তান্তর করতে হবে। ট্যাপকল নষ্ট হলে প্রধান লাগিয়ে দেবেন। কিন্তু পাম্প নষ্ট হলে, পাইপ লাইন নষ্ট হলে প্রধান কি করবেন? এগুলো বড় কাজ। দফতর যদি অর্থ না- দেয় তাহলে প্রধানরা কাজটা কি ভাবে করবেন?” তাঁর কথায়, “এই জেলায় বড় প্রকল্প সেই ভাবে হয়নি। সবং, পিংলায় প্রচুর প্রকল্প হয়েছে। কিন্তু মানুষ জল পাচ্ছে না। কেননা পাইপগুলো ফুটো হয়ে গিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের লোক রাগে পাইপগুলো ফুটো করেছে। কারণ, ওখানে ট্যাপকল দিতে হবে তো। তা দেওয়া হয়নি। কে ট্যাপ বসাবে? দফতর বসাবে। বসায়নি বলে মানুষ ফুটো করেছে।” পূর্ত দফতরের কাজ নিয়েও খানিক অসন্তোষ প্রকাশ করেন চেয়ারম্যান। তাঁর কথায়, “সবংয়ের কাঁটাখালিতে সেতু হওয়ার কথা। ৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ২০১২ সালে সরকার কাজের অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত ওই কাজের কোনও কিছুই হয়নি। এটা কী করে মানা যায়?” তাঁর কথায়, “এখন নতুন করে এস্টিমেট করতে গেলে আরও দশ কোটি টাকা বেড়ে যাবে। এর খেসারত কে দেবে?”

চেয়ারম্যান বলেন, “পিচকে এত হিট করছেন সেটা জল হয়ে যাচ্ছে। এই পিচের রোড কতদিন টিকবে? ঠিকাদারের সুবিধের জন্য পিচকে হিট দিয়ে জল করা হচ্ছে। এই কারণেই রাস্তা খারাপ হচ্ছে। আমরা বলেছি, কাজ ফেলে রাখবেন না। সময়ের কাজ সময় করুন।” জেলার সার্বিক উন্নয়নের কথা অবশ্য মেনেছেন চেয়ারম্যান। তাঁর কথায়, “আমি কংগ্রেসের বিধায়ক, সরকার দলের বিধায়ক নয়। তাও বলছি, এই কয়েক বছরে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কুড়ি বছর আগেও মেদিনীপুরে এসেছিলাম। সেই মেদিনীপুর আর আজকের মেদিনীপুরের আকাশ- জমিন ফারাক। এটা অস্বীকার করা যাবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Meeting Standing Committee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE