পাশে-আছি: অর্থ সংগ্রহে পথে স্কুলের ছাত্র ও শিক্ষকেরা। নিজস্ব চিত্র
কয়েক দিন ধরে বন্ধুকে স্কুলে দেখতে পাচ্ছিল না সে। বন্ধুর খোঁজ নিতে তার বাড়িতে গিয়েছিল অষ্টম শ্রেণির সন্দীপ। সেখানে গিয়ে জানতে পারে বন্ধু সুদীপ্তর শরীরে বাসা বেঁধেছে ক্যান্সার। চিকিৎসার জন্য চাই অনেক টাকা।
সব জেনে সুদীপ্তকে সুস্থ করে তুলতে তার পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেছে গোটা স্কুল। সুদীপ্তর চিকিৎসায় অর্থ সাহায্যের আবেদন নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা, অশিক্ষক কর্মী থেকে ছাত্রছাত্রী সকলেই।
পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের দেউলিয়া হিরারাম হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সুদীপ্ত সাহু ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। বছর তেরোর সুদীপ্ত’র চিকিৎসা শুরু হয়েছে কলকাতার ঠাকুরপুকুরের একটি হাসপাতালে। বাবা দিলীপ সাহু দিনমজুর। ছেলের চিকিৎসার জন্য টাকা ধার করে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। কিন্তু চিকিৎসায় আরও টাকা লাগবে বলে হাসপাতাল থেকে তাঁকে জানানো হয়েছে। কিন্তু তা আসবে কোথা থেকে তা ভেবেই আকুল সুদীপ্তর বাবা-মা। ছেলের জন্য তার স্কুলের সহপাঠী থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা এগিয়ে এসেছেন শুনে তাঁরা একটু স্বস্তিতে। দু’জনেই জানালেন, ওঁরা যদি টাকার জোগাড় করতে পারেন তা হলে ছেলেটার চিকিৎসা হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌরহরি পাল বলেন, ‘‘সুদীপ্তর অসুস্থতার কথা জেনে আমরা ওর বাড়িতে গিয়েছিলাম। ওদের পরিবার খুবই গরিব। তাই এই কঠিন সময়ে ওঁদের পাশে দাঁড়িয়ে সাধ্যমত সাহায্য করার চেষ্টা চালাচ্ছি। অন্যরাও যাতে এগিয়ে আসেন সেই আবেদন নিয়েই সকলে পথে নেমেছি।’’
হলদিয়ার চকদ্বিপা হাইস্কুলের ক্যান্সারে আক্রান্ত অষ্টম শ্রেণির ছাত্র অর্ণব প্রামাণিকের পাশেও দাঁড়িয়েছে তার স্কুল। ‘বাঁচতে চাই’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করে তার চিকিৎসার জন্য টাকা তোলার চেষ্টাও শুরু হয়েছে। পুদুচেরিতে চিকিৎসা চলছে অর্ণবের। আনন্দবাজার পত্রিকায় তার অসুস্থতার খবর পড়ে সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন হলদিয়ার অরুণচন্দ্র হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীরা।
সম্প্রতি তমলুকে একটি নাট্য প্রতিযোগিতায় সেরা হয় এই স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। সেরার পুরস্কার বাবদ অর্থ তারা তুলে দিয়েছেন অর্ণবের পরিবারের হাতে। যা পেয়ে অর্ণবের পরিবারের বক্তব্য, ‘‘যে ভাবে সবাই এগিয়ে এসেছেন তাতে ভরসা পাচ্ছি। আমরা আর একা নই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy