ছাত্র সংগঠনের বিরোধের জেরে শুক্রবার সবং কলেজের ছাত্র খুনের ঘটনার রেশ কাটেনি এখনও। তারই মধ্যে ফের কলেজ চত্বরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের জেরে আহত হলেন চারজন ছাত্র। শনিবার সকালে এই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের রবীন্দ্রভারতী মহাবিদ্যালয়ে। আহত ছাত্রদের মধ্যে দু’জনকে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে চালু কোলাঘাট রবীন্দ্র ভারতী মহাবিদ্যালয়ের ক্লাস চলে কোলাঘাট শহররে থাকা কোলা ইউনিয়ন হাইস্কুলের ভবনে। কলেজে এখনও ছাত্র সংসদ গঠন না হলেও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একটি ইউনিট রয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ইউনিটের সদস্যরা কোলাঘাটের তৃণমূল বিধায়ক বিপ্লব রায়চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। গত ২২ জুলাই ওই কলেজের পরিচালন সমিতি গঠনের জন্য নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি হিসেবে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর তরফে দু’জনের নাম প্রস্তাব হওয়ায় ভোটাভুটি হয়। ভোটাভুটিতে কোলাঘাটের বিধায়ক বিপ্লব রায়চৌধুরীর ভাই সন্দীপ রায়চৌধুরী জিতে কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি হন।
কলেজে সভাপতি নির্বাচনে বিপ্লববাবুর অনুগামীদের জয়লাভের পরে কয়েকদিন আগে তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর (সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর) তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সমর্থকরা ওই কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পৃথক ইউনিট খোলার চেষ্টা চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ। কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর বিরোধ ছিলই। তার জেরে শনিবার কলেজ চত্বরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে বলে অভিযোগ।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন কোলাঘাট কলেজের পরিচালন সমিতির বৈঠক চলাকালীন সকাল ৯ টা নাগাদ পাঁশকুড়া বনমালী কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সৈয়দ বেলাল হোসেন নামে এক তৃণমূল কর্মী কলেজ ক্যাম্পাসে মোটরসাইকেল নিয়ে আসেন। এসময় ওই মোটরসাইকেলে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ওই কলেজের এক ছাত্র। তাই নিয়ে ঝগড়া শুরু হলে বেলাল ওই ছাত্রকে চড় মারেন বলে অভিযোগ। ঘটনার পরে বিধায়কের অনুগামী তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সমর্থকদের তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। জখম হন বেলাল ও তাঁর সঙ্গী প্রসেনজিৎ খাঁড়া। সংঘর্ষে বিধায়কের অনুগামী উদয় প্রামাণিক, কার্ত্তিক রাম আহত হয়। আহতদের মধ্যে বেলাল ও প্রসেনজিৎকে প্রথমে কোলাঘাট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁদের দু’জনকে তমলুক জেলা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
তমলুক হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বেলাল বলেন, ‘‘আমাকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। আমাকে মারধরের সময় বাধা দিতে গেলে প্রসেনজিৎকেও মারধর করে।’’ কোলাঘাটের তৃণমূল বিধায়ক বিপ্লব রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘কোলাঘাটের কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিট রয়েছে। অথচ কয়েকদিন ধরে পাঁশকুড়া কলেজের কয়েকজন ছাত্র এখানে এসে ফের তৃণমূল ছাত্র পরিষদে ইউনিট খোলার জন্য চেষ্টা করেছিল বলে জানতে পেরেছি। এ দিন সকালে এরকম কয়েকজন ছাত্র কোলাঘাট কলেজে এসে কয়েকজনকে মারধর করার ফলে গোলমাল হয়।’’ কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি সন্দীপ রায়চৌধুরীর কথায়, ‘‘কয়েকজন ছাত্র আমাদের কাছে অভিযোগ জানাতে এসেছিল। খোঁজ নিয়ে দেখেছি তেমন গুরুতর কিছু ঘটনা ঘটেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy