ঝাড়গ্রাম শহরের বিদ্যাসাগর পল্লির এখানেই তৈরি হবে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ। সবে কাজ শুরু হয়েছে। শেষ হতে বছর তিনেক লাগবে। নিজস্ব চিত্র।
আগামী শিক্ষাবর্ষে রাজ্যের পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজে পাঠদান শুরু হবে অস্থায়ী ভবনেই। তার মধ্যে ঝাড়গ্রাম জেলার মেডিক্যাল কলেজটিও রয়েছে। পঠনপাঠনের জন্য জায়গা খোঁজার কাজ শুরু হয়েছে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল সার্ভিসেস কর্পোরেশন (ডব্লিউবিএমএসসিএল) সূত্রের খবর, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঝাড়গ্রাম-সহ রাজ্যের পাঁচটি নতুন মেডিক্যাল কলেজে পঠনপাঠন শুরু হবে। সে জন্য গত ৮ জুলাই পাঁচ জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে অস্থায়ী ভাবে জায়গা খোঁজার জন্য অনুরোধ করেছেন ডব্লিউবিএমএসসিএল কর্তৃপক্ষ। ঝাড়গ্রাম ছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক, হাওড়ার উলুবেড়িয়া, হুগলির আরামবাগ ও উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত মেডিক্যাল কলেজগুলিতেও আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে অস্থায়ীভাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের স্নাতকস্তরের পঠনপাঠন শুরু হয়ে যাবে।
জেলা হাসপাতালের কাছাকাছি চার হাজার বর্গফুট এলাকায় অস্থায়ী ভবন খোঁজার জন্য জেলা প্রশাসনকেই দায়িত্ব দিয়েছেন ডব্লিউবিএমএসসিএল কর্তৃপক্ষ। ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজে পড়ুয়াদের আসন সংখ্যা একশো। আগামী শিক্ষাবর্ষে ৫০ জন ছাত্র ও ৫০ জন ছাত্রী ভর্তি হতে পারবেন। পাঠদানের জন্য প্রয়োজন চার হাজার বর্গফুট এলাকার মধ্যে দু’টি লেকচার হল, তিনটি ল্যাবরেটরি, তিনটি ডেমোনস্ট্রেশন রুম, লাইব্রেরি, অধ্যক্ষের অফিস ঘর, ফ্যাকাল্টি রুম, শব ব্যবচ্ছেদ হল ও শবাগার। এছাড়া অধ্যাপক, শিক্ষাকর্মীদের থাকার জায়গা, ডাইনিং হল ও রান্না ঘর-সহ ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাসের জন্য ভবনও প্রয়োজন। ডব্লিউবিএমএসসিএলের তরফে জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে চলতি মাসেই অস্থায়ী পরিকাঠামো পরিদর্শনে আসবেন স্বাস্থ্য দফতরের প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টশন কমিটির সদস্যরা। তাই জোর কদমে উপযুক্ত ভবন খোঁজা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, কিছুদিন আগে ডব্লিউবিএমএসসিএল-এর এক প্রতিনিধি দল জেলা সুপার স্পেশালিটির পাঁচ তলাটি অস্থায়ী মেডিক্যাল কলেজের জন্য পরিদর্শন করে গিয়েছেন। তবে সেখানে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় বিকল্প জায়গা দেখার জন্য জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করা হয়েছে।
ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক জয়সি দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘হাসপাতাল চত্বরে ভবন দেখা হচ্ছে। বিষয়টি জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা দেখছেন।’’
ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজের স্থায়ী ভবন তৈরির কাজ সবে শুরু হয়েছে। ২০১৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তারকেশ্বরের এক প্রশাসনিক সভা থেকে ওই কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই মেডিক্যাল কলেজ তৈরির জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যৌথভাবে ২৫৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। অরণ্যশহরের বিদ্যাসাগর পল্লি এলাকায় ১৬ একর জমিতে তৈরি হচ্ছে সেটি। ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল সার্ভিসেস কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে কাজটি করছে ‘সিমপ্লেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচর লিমিটেড’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা।
২০১৯-এর এপ্রিলে সংস্থাটি কাজ শুরু করলেও শুরুতেই জমি জট দেখা যায়। কাজও বন্ধ হয়ে যায়। ওই জমিটির বেশ কিছু অংশ সংরক্ষিত বনভূমি দাবি করে ন্যাশন্যাল গ্রিন ট্যাইবুন্যালের দ্বারস্থ হন পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত। তবে জনস্বাস্থ্য পরিষেবার স্বার্থে মেডিক্যাল কলেজ তৈরির পক্ষে রায় দেয় গ্রিন বেঞ্চ। মামলা হেরে যান সুভাষ। পরিবেশ আদালতের ছাড়পত্র মেলায় চলতি বছরে কাজ শুরু হয়েছে। ওয়েস্টবেঙ্গল মেডিক্যাল সার্ভিসেস কর্পোরেশন সূত্রে জানা গিয়েছ, ওই মেডিক্যাল কলেজের স্থায়ী পরিকাঠামো গড়তে বছর তিনেক সময় লাগবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy