পঞ্চায়েত ভোটের আগে ঘুরে দাঁড়িয়ে সংগঠন মজবুত করতে চাইছে বামেরা। পশ্চিম মেদিনীপুর সফরে এসে তেমনই বার্তা দিয়ে গেলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।
রবিবার ঝাড়গ্রাম শহরে এক কর্মিসভায় এসে সূর্যবাবু নতুন জেলায় সংগঠন সাজানোর ক্ষেত্রে আদিবাসী সম্প্রদায়কে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন। জেলার মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ আদিবাসী, সে কথা মাথায় রেখই তিনি বলেন, “ঝাড়গ্রামে দলের জেলা কমিটি গঠিত হলে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ আদিবাসী সদস্য থাকবেন। বুথস্তরে মানুষের কাছে গিয়ে তাঁদের সমস্যার কথা জেনে আন্দোলন করতে হবে।’’
দলীয় সূত্রের খবর, আগামী মে মাসের মধ্যে দলীয় গঠনতন্ত্র ও পদ্ধতি অনুযায়ী ঝাড়গ্রাম জেলা কমিটি গঠন করা হবে। জেলা কমিটি এবং জেলার অন্তর্গত জোনাল, লোকাল, ব্রাঞ্চ কমিটিগুলিতে মোট সদস্যের ৩০ শতাংশ আদিবাসী সদস্য রাখার পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্য সম্পাদক। এ ছাড়া তপশিলি জাতি (এসসি) এবং অনগ্রসর শ্রেণি ও মহিলা সদস্যদেরও উল্লেখযোগ্য ভাবে দলের সাংগঠনিক কমিটি গুলিতে ঠাঁই দিতে চাইছেন সূর্যবাবু।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, ঝাড়গ্রামে দলের পালে হাওয়া টানতে গেলে আদিবাসী-মূলবাসীদের সমর্থন যে জরুরি, সেটা বিলক্ষণ জানেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। তার উপর উন্নয়নের নানা বিষয় নিয়ে আদিবাসী সমাজের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসকদল ও পঞ্চায়েতগুলির বিরুদ্ধে ওঠা নানা দুর্নীতির অভিযোগ জনগণের সামনে এনে দফায় দফায় আন্দোলন কর্মসূচি গড়ে তুলতে চায় সিপিএম।
তবে এ দিন হঠকারী রাজনীতি করতে বারবার নিষেধ করে সূর্যবাবু। তাঁর পরামর্শ, “আজ থেকেই গোলমাল করবেন না। মানুষের কাছে তাঁদের সমস্যা ও অভিযোগ শুনে তালিকা তৈরি করুন।”
২২ মে বামপন্থী কৃষক সংগঠনগুলির ডাকে নবান্ন অভিযান কর্মসূচি রয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলার অভাব-অভিযোগ, দাবি ও বঞ্চনা নিয়ে কর্মীদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন সূর্যবাবু। জানা গিয়েছে, এ দিন কর্মিসভায় আসার জন্য ঝাড়গ্রাম জেলার ২,৭০০ কর্মী ও বিভিন্ন বুথভিত্তিক নেতাদের চিঠি দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। পুলিশের হিসেবে সকালে সিপিএমের মিছিল ও কর্মসূচিতে এ দিন লোক হয়েছিল প্রায় হাজার তিনেক। সভায় ছিলেন রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য মদন ঘোষ, দীপক সরকার, জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য ডহরেশ্বর সেন, প্রদীপ সরকার, পুলিনবিহারী বাস্কে, জেলা সম্পাদক তরুণ রায় প্রমুখ।
প্রায় একই ভাবে দলীয় সংগঠনকে চাঙ্গা করার বার্তা দিয়েছেন ঘাটালের সভা থেকেও। অরবিন্দ স্টেডিয়ামে দলীয় সদস্যদের তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল-বিজেপিকে ভয় পেলে চলবে না। দলকে প্রাধান্য দিয়ে পার্টির কাজে মন দিন। ঘরে বসে না থেকে বন্ধ পার্টি অফিসগুলি খোলা যায় কী করে দেখুন। দল আপানাদের পাশে আছে।’’