কংক্রিটের আস্তরণ খসে গিয়েছে। বেরিয়ে পড়েছে বীরেন্দ্র সেতুর রেলিংয়ের রড। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
সেতুর উপর জটলা করে কথা বলছেন কয়েকজন। মাঝে মাঝে খুঁটিয়ে দেখছেন সেতুর বিভিন্ন অংশ। তুলে রাখছেন ছবিও।
বুধবার বেলা গড়াতেই এমন ছবি দেখা গেল কংসাবতীর উপর থাকা মেদিনীপুরের বীরেন্দ্র সেতুতে। তবে কি কলকাতার মাঝেরহাটে সেতু বিপর্যয়ের জেরে পর্যবেক্ষণ? স্থানীয় সূত্র থেকে অবশ্য এমনই ইঙ্গিত মিলেছে। স্থানীয়দের বক্তব্য, এ দিনই জাতীয় সড়কের ইঞ্জিনিয়ারেরা সেতুটি পরিদর্শন করেছেন। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ দিন সেতু পরিদর্শনের বিষয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পল্লব বিশ্বাস শুধু বলেছেন, “নিয়মিতই দেখভাল হয়। কিছু মেরামতের প্রয়োজন থাকলে মেরামতও করা হয়।” জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, যদি ছ’মাস অন্তর বীরেন্দ্র সেতুর হাল খুঁটিয়ে দেখা হয়। শেষবার তা হয়েছিল চারমাস আগে। মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পর যে বীরেন্দ্র সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে আলাপ আলোচনা এবং তৎপরতা শুরু হয়েছে তা মানছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আধিকারিকদের একাংশ।
মেদিনীপুর- খড়্গপুর সড়ক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম বীরেন্দ্র সেতুর এখন বিপজ্জনক পরিস্থিতি। সেতু জুড়ে অজস্র ছোট বড় গর্ত, ফাটল। ভারী লরি উঠলে দুলে ওঠে সেতু। আশঙ্কায় থাকেন স্থানীয়েরাও। সেতুর পাশেই বাড়ি মিহির চন্দের। মিহির বলছিলেন, “সেতুটি পুরনো। অবিলম্বে মেরামতের প্রয়োজন।” তাঁর কথায়, “এক সময় এক-একটা লরিতে ৫- ৬ টন মাল থাকত। এখন সেখানে ২০- ২২ টন মাল থাকছে। রোজ বহু মালবাহী লরি এই সেতুর উপর দিয়ে যায়।” তাঁর কথায়, “ভারী লরি গেলে সেতু যেন দোলে, নড়ে ওঠে। ভয়ও লাগে।” সেতুটি তৈরি হয়েছিল ১৯৭২ সালে। দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের নামে সেতুটির নামকরণ হয় ‘বীরেন্দ্র সেতু’।
সেতুর উপর দিয়ে গিয়েছে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। সেতুটি ৪৩৫ মিটার লম্বা, ৯ মিটার চওড়া সেতু দিয়ে গড়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে। সেতুর মধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটে। সেতু জুড়ে অসংখ্য ছোটবড় গর্ত। এক সময় গর্ত মেরামত করা হয়েছিল। জল জমে ফের গর্ত তৈরি
হয়েছে আশেপাশে।
পাঁচকাহন
• সেতুটি তৈরি হয় ১৯৭২ সালে।
• মেদিনীপুর-খড়্গপুর সড়ক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম।
• সেতু জুড়ে ছোটবড় গর্ত, ফাটল।
• রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের।
• শেষ পর্যবেক্ষণ চার মাস আগে।
(* তথ্য মেদিনীপুরের বীরেন্দ্র সেতুর)
জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি বলেন, “জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সেতুটি মেরামত করার কথা। দেখভাল করার কথা। তাঁদের সঙ্গে কথা বলব।” জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের আশ্বাস, “আমাদের কোনও সাহায্য লাগলে তা করা হবে।” জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক ইঞ্জিনিয়ারের আশ্বাস, “আগেও সেতুর পরিদর্শন হয়েছে। উদ্বেগের কিছু নেই। কিছু অংশ সারানোর প্রয়োজন থাকতে পারে। সেই সব অংশ সারানোর ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy