সুনসান মেদিনীপুর আদালত চত্বর।—নিজস্ব চিত্র।
কর্মচারীদের আন্দোলনের জেরে বুধবারও মেদিনীপুর আদালতে স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হল। এ দিনও বিচারপ্রার্থীদের অনেকে আদালতে এসে ফিরে যান। তাঁদের জানা ছিল না আদালতের এই অচলাবস্থার কথা। কর্মচারীদের তরফে বিকাশ মজুমদার বলেন, “শুধু মেদিনীপুর নয়, জেলার অন্য আদালতের কর্মীরাও এ দিন থেকে আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। আমরা আদালতে স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত করার পক্ষে নেই। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা দেখে বাধ্য হয়েই এই পথে আন্দোলন করতে হচ্ছে।”
বুধবার দুপুরে আদালতে এসে কর্মচারীদের সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূল প্রভাবিত পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের নেতা সুব্রত সরকার। সুব্রতবাবু কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার আবেদন জানান। একই সঙ্গে জানান, কর্মীদের ন্যায্য দাবিতে তাঁদের সমর্থন রয়েছে। সুব্রতবাবু বলেন, “আমরা কর্মীদের পাশেই আছি। তবে বন্ধ-ধর্মঘট আমরা সমর্থন করি না। এতে মানুষের সমস্যা হয়। তাই কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছি।” অবশ্য সমস্যা সমাধানের ইঙ্গিত এ দিনও মেলেনি। কোনও রাজনৈতিক দলের প্রভাবিত সংগঠন নয়, মেদিনীপুর আদালতের কর্মচারীরা যৌথ মঞ্চ গড়েই আন্দোলন শুরু করেছেন। এ দিনও আদালত চত্বরে মিছিল হয়।
বস্তুত, দিন কয়েক ধরে বেশ কয়েকটি দাবিতে আদালত চত্বরে মিছিলই হচ্ছিল। প্রতীকী কর্মবিরতিও হয়। তবে এরফলে আদালতের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়নি। বিচারপ্রার্থীদেরও ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। ভোগান্তির শুরু মঙ্গলবার থেকে। গত সোমবার এক কর্মচারীর বদলির নির্দেশ ঘিরে ওই দিন পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। মেদিনীপুরের জেলা ও দায়রা বিচারক রাই চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি করেন আন্দোলনরত কর্মচারীরা। বুধবারও প্রায় সব এজলাসে স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়েছে। বিচারকেরা ছিলেন। আইনজীবীরাও ছিলেন। তবে কর্মচারীরা আন্দোলনে সামিল হওয়ায় স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়নি। যৌথ মঞ্চের বক্তব্য, মৃত কর্মচারীদের পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়া, অবসরপ্রাপ্ত যে সব কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে পেনশন পাচ্ছেন না, তাঁদের পেনশনের ব্যবস্থা করে দেওয়া, কর্মরত কর্মচারীদের পদোন্নতির ব্যবস্থা করা সহ নির্দিষ্ট কয়েকটি দাবিতেই আন্দোলন শুরু হয়।
কর্মচারীদের তরফে বিকাশবাবু বলেন, “আন্দোলন চলাকালীন গত সোমবার মদনমোহন সিংহ নামে এক সেরেস্তাদারকে আচমকা মেদিনীপুর থেকে দাঁতন আদালতে বদলি করে দেওয়া হয়। মদনমোহনবাবু আগামী মাসে অবসর নেবেন।” তাঁর কথায়, “যিনি আগামী মাসে অবসর নেবেন, তাঁকে আচমকা বদলি করে দেওয়ার কারন কী? আমরা তো এটাই বুঝতে পারছি না। উনি আমাদের আন্দোলনে ছিলেন। আমাদের ধারণা, এই জন্যই ওঁকে বদলি করা হয়েছে? এর মাধ্যমে কর্মচারীদের একটা বার্তা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। কোনও কর্মচারীর সঙ্গে এই অন্যায় আচরণ আমরা কখনওই মেনে নিতে পারি না। প্রতিবাদ হবেই।” বুধবারের দুপুরের পর থেকে আদালত চত্বর অনেকটা শুনশান হয়ে যায়। আইনজীবী মৃণাল চৌধুরী বলেন, “এদিনও মক্কেলদের অনেকে আদালতে এসে ফিরে গিয়েছেন। কর্মচারীরা আন্দোলনে ছিলেন। তাই আদালতের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যহত হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy