Advertisement
১০ মে ২০২৪
Mid Day Meal

কেন্দ্রীয় দল জেলায়, বরাত খুলেছে দর্জিদের

মঙ্গলবার থেকে নন্দকুমার-সহ একাধিক ব্লকে একশো দিনের কাজে পরিদর্শন করছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল।

কেন্দ্রীয় দল আসছে বলে আনা হয়েছে অ্যাপরন।

কেন্দ্রীয় দল আসছে বলে আনা হয়েছে অ্যাপরন। — ফাইল চিত্র।

গোপাল পাত্র
এগরা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:৩৬
Share: Save:

মিড-ডে মিল প্রকল্প পরিদর্শনে রাজ্যে এসেছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। জেলায় তাই সচেতন বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে রান্নার কাজ করতে তাই রন্ধন কর্মীদের জন্য কেনা হচ্ছে অ্যাপ্রন, মাস্ক, টুপি, গ্লাভস এবং স্যানিটাইজ়ার। আর রাতারাতি এমন বরাত মেলায় অসময়েও লক্ষ্মীলাভ হচ্ছে দোকান মালিক এবং দর্জিদের।

মঙ্গলবার থেকে নন্দকুমার-সহ একাধিক ব্লকে একশো দিনের কাজে পরিদর্শন করছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। পরে স্কুলে মিড-ডে মিলের গুণমান ও রান্নার পরিকাঠামো খতিয়ে দেখার কথা অন্য একটি দলের। এগরা মহকুমায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের পরিদর্শনে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। মহকুমা প্রশাসন সূত্রের খবর, এগরা মহকুমাপ পাঁচটি ব্লক ও একটি পুরসভায় প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ব্যতীত হাইস্কুল ও প্রাথমিক স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের মিড-ডে মিল পরিবেশনের জন্য একটি করে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের দল নিযুক্ত থাকেন। ওই মহিলাদের জন্য প্রতি ছ'মাস অন্তর ইউনিফর্মের অর্থ স্কুলগুলিকে বরাদ্দ করে কেন্দ্র। সেই অর্থে স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে মিড-ডে মিল পরিবেশনের কাজে মহিলাদের মাথায় টুপি (সার্জিক্যাল বা কাপড়ের), হাতে দস্তানা, মুখে মাস্ক ও গায়ে অ্যাপ্রন কেনা নিয়ম। করোনা পরিস্থিতিতে সেই নিয়মে সংযোজন হয়েছে মুখের মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ারের ব্যবহার। কিন্তু নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিড-ডে মিল পরিবেশনের কাজ করার অভিযোগ ওঠে হামেশাই।

এখন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের কাছে স্কুলগুলি নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখতে রান্নাঘর জুড়ে সাজোসাজো রব। চতুর্দিকে পরিষ্কার করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের মিড-ডে মিলের দায়িত্ব প্রাপ্ত শিক্ষক রন্ধনকর্মীদের ইউনিফর্ম জোগাড় করতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলার জোগাড়। সহজে দোকান থেকে অ্যাপ্রন ও টুপি পাওয়া যায় না। রাতারাতি দর্জিকে বরাত দিয়ে সেই অ্যাপ্রন সংগ্রহ করে রন্ধনকর্মীদের বিতরণ করতে হচ্ছে। দোকান থেকে মাস্ক, দস্তানা, স্যানিটাইজ়ার কিনতে হচ্ছে। এগরার একটি স্কুলের মিড-ডে মিলের দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক বলেন, ‘‘আগে অ্যাপ্রন সহ অনান্য উপকরণ ছিল। সেগুলি ব্যবহারের ফলে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় দল আসার আগে তড়িঘড়ি সেই সকল উপকরণ বরাত দিয়ে সংগ্রহ করতে হয়েছে। চাহিদা বেশি থাকায় অনেক স্কুল বরাত দিয়েও সময়ে সামগ্রী পাচ্ছে না।’’

এগরা মহকুমায় খাতায় কলমে প্রায় আড়াই হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ৩০ হাজার মহিলা স্কুলের মিড-ডে মিল কাজে যুক্ত রয়েছেন। যদিও সেই পরিসংখ্যান অলিখিত ভাবে অনেকটাই বেশি। এদিকে বিপুল পরিমাণ অ্যাপ্রন ও টুপি, মাস্ক, দস্তানা ও স্যানিটাইজার যোগান ছিল না দোকানগুলিতে। তাই দর্জিদের বরাত বাড়ছে। এক একজন দর্জি গড়ে ৩০০ থেকে ৪০০টি অ্যাপ্রন ও টুপি তৈরি করেছেন। সেই অঙ্কটা প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা গিয়ে দাঁড়িয়েছে। পটাশপুরের এক দর্জি সইফুল আলি বলেন, ‘‘এই সপ্তাহে মধ্যে রাঁধুনিদের অ্যাপ্রন ও মাথার টুপি তৈরির বরাত হঠাৎ করে এসেছে। রাতদিন অর্ডারের কাজ করতে হচ্ছে। অসময়ে একটু বেশি উপার্জন হচ্ছে।’’

এগরা-দিঘা মোড়ের এক ওষুধ দোকানের মালিক অমিতাভ প্রহরাজ বলেন, ‘‘মিড-ডে মিলের রন্ধনকর্মীদের জন্য স্কুলগুলি থেকে প্রচুর মাস্ক, দস্তানা ও স্যানিটাইজার নিয়ে যাচ্ছেন। অসময়ে এই সামগ্রীর যোগান না থাকায় অনেকে স্কুলকে জিনিস সরবরাহ করতে পারছি না। অন্য পাইকারি দোকানে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mid Day Meal Central Team Egra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE