Advertisement
E-Paper

‘অপমানে’ আত্মঘাতী কিশোরী

পরিবারের অভিযোগ, বাবাকে ‘চোর’ অপবাদ দেওয়ায় অপমানে আত্মঘাতী হয় মেয়ে। যদিও পুলিশের কাছে এই নিয়ে কোনও অভিযোগ জানাননি তাঁরা।

কেশব মান্না

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:২৪
শোকার্ত ঠাকুমা। নিজস্ব চিত্র

শোকার্ত ঠাকুমা। নিজস্ব চিত্র

‘মাছ চোর’ অপবাদে খেজুরিতে গণপিটুনির শিকার হন নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের আস্তবাড়ি এলাকার বাসিন্দা শম্ভু মাঝি। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে হেঁড়িয়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। বুধবার ভোরের ওই ঘটনায় আহত বাবাকে দেখতে পরিবারের সঙ্গে নার্সিংহোমে গিয়েছিল মেয়ে। দুপুর নাগাদ বাড়িতে ফেরার পর সকলে যখন অন্য কাজে ব্যস্ত সেই সময় গলায় কাপড়ের ফাঁস দেওয়া অবস্থায় সোমা মাঝি (১৭) নামে ওই কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের অভিযোগ, বাবাকে ‘চোর’ অপবাদ দেওয়ায় অপমানে আত্মঘাতী হয় মেয়ে। যদিও পুলিশের কাছে এই নিয়ে কোনও অভিযোগ জানাননি তাঁরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শম্ভু ওরফে অমিয় মাঝির জেনারেটর ও সাউন্ড বক্স ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা রয়েছে। বৃহস্পতিবার মৃতার ঠাকুমা সন্ধ্যা দেবী বলেন, ‘‘বাবাকে মারধর ও হাসপাতালে ভর্তির কথা শুনে বুধবার দুপুরে জামাইবাবু ও দাদুর সঙ্গে হেঁড়িয়া গিয়েছিল সোমা। দুপুরে দাদুর সঙ্গে বাড়ি ফিরে আসে। এর পর ওর মা হাসপাতালে যায়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বাড়িতে ফেরার পর মাথায় যন্ত্রণা হচ্ছে বলে সোমা ছাদে উঠে গিয়েছিল। দুপুর আড়াইটা নাগাদ ওর মা বাড়ি ফিরে এসে ছাদে যায়। গিয়ে দেখে গলায় কাপড়ের ফাঁস লাগিয়ে সোমা ঝুলছে।’’

বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে রেয়াপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এ দিন সোমার দাদা বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘বোন বরাবর আবেগপ্রবণ। বাবাকে খুব ভালবাসত। বাবাকে নার্সিংহোমে দেখতে গিয়ে কাঁদছিল। ‘চোর’ অপবাদে বাবাকে এ ভাবে মারধর মানতে পারছিল না। বুঝেছিলাম খুব কষ্ট পেয়েছে ও। কিন্তু বাড়িতে ফিরে যে এমন কাণ্ড করবে ভাবতে পারিনি।’’

প্রসঙ্গত, বুধবার সকালে শম্ভু কয়েক জনকে নিয়ে মোটরবাইকে চেপে খেজুরি যান। স্থানীয়দের অভিযোগ, তিনটি বাইকে চেপে ৬ জন এসেছিল। তারা ভেড়ি থেকে মাছ লুট করছিল। তাড়া করলে ৫ জন পালিয়ে যায়। শম্ভু ধরা পড়ায় তাঁকে বেধড়ক পেটানো হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হেঁড়িয়ায় একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করে।

ঘটনার কথা স্বীকার করে নন্দীগ্রাম-২ ব্লক তৃণমূল কার্যকরী সভাপতি নাড়ুগোপাল জানার দাবি, ‘‘বাবা চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে মার খাওয়ায় ‘অসম্মানিত’ বোধ করাতেই মেয়ে এমন কাজ করেছে।’’ পুলিশের দাবি, পারিবারিক বিবাদের জেরে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করেছে। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ইন্দ্রজিৎ বসু জানান, ওই পরিবারকে লিখিত অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হত। কিন্তু রেয়াপাড়া ফাঁড়ি জানিয়েছে, রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।

Death Teenager Girl Suicide
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy