Advertisement
০৫ মে ২০২৪

স্টেশন বাজার লিজ, আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা

ঘটা করে উদ্বোধন হলেও পাঁশকুড়া কিসান মান্ডিতে ব্যবসা জমেনি বলে অভিযোগ। ব্যবসায় লোকসানের জেরে কয়েকজন ইতিমধ্যেই দোকান বন্ধও করে দিয়েছেন। কিসান মান্ডির দু’কিলোমিটার দূরেই রয়েছে ‌পাঁশকুড়া স্টেশন সংলগ্ন জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন সব্জি বাজার।

উদ্বোধনের পরেও সুনসান পাঁশকুড়া কিসান মান্ডি। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

উদ্বোধনের পরেও সুনসান পাঁশকুড়া কিসান মান্ডি। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৩২
Share: Save:

ঘটা করে উদ্বোধন হলেও পাঁশকুড়া কিসান মান্ডিতে ব্যবসা জমেনি বলে অভিযোগ। ব্যবসায় লোকসানের জেরে কয়েকজন ইতিমধ্যেই দোকান বন্ধও করে দিয়েছেন। কিসান মান্ডির দু’কিলোমিটার দূরেই রয়েছে ‌পাঁশকুড়া স্টেশন সংলগ্ন জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন সব্জি বাজার। সম্প্রতি টেন্ডার ডেকে চলতি বছরের জন্য ৪০ লক্ষ ৩১ হাজার টাকায় ওই বাজার লিজ দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, দু’কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে দু’টি সব্জি বাজার চালু থাকলে ব্যবসায় ক্ষতির বহর বাড়বে। কিসান মান্ডির ব্যবসায়ীদের দাবি, জেলা পরিষদের সব্জি বাজারের বিক্রেতাদের কৃষক বাজারে বসার ব্যবস্থা করা হোক।

২০১৫ সালের ৯ অক্টোবর ঘাটাল-পাঁশকুড়া রাস্তার ধারে কনকপুরে কিসান মান্ডির উদ্বোধন করেন তৎকালীন রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়। ফের গত ১৭ অক্টোবর রাজ্যের বর্তমান কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত এই মান্ডির উদ্বোধন করেন। লটারি করে বাজারের ১৮টি স্টল বিলিও করা হয়। যদিও পাঁশকুড়া-ঘাটাল রাজ্য সড়কের ধারে কনকপুর এলাকায় কৃষক বাজারে গিয়ে দেখা গেল, বাজারের অধিকাংশ দোকানই বন্ধ। ছাউনিযুক্ত চাতালেও রয়েছেন হাতে গোনা কয়েকজন ব্যবসায়ী।

এই কিসান মান্ডি উদ্বোধনের সময়ই একাংশ ব্যবসায়ী প্রশ্ন তোলেন, পাঁশকুড়া স্টেশন সংলগ্ন জেলা পরিষদের বাজারে ক্রেতার আনাগোনা বেশি হওয়ায় ব্যবসা ভাল হয়। অন্য দিকে, কিসান মান্ডি স্টেশন থেকে দু’কিলোমিটার দূরে। কিসান মান্ডি যাওয়ার পথে রেললাইনের লেভেল ক্রসিংয়েও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেকেই নতুন কৃষক বাজারে যেতে নিমরাজি ছিলেন।

কিসান মান্ডিতে সব্জির ব্যবসা রয়েছে বিজন মাইতির। তাঁর কথায়, ‘‘বাজার উদ্বোধনের পর কয়েকজন আসতেন। এখন বাজারে চাষি, ব্যবসায়ী কেউই আসেন না। ফলে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে।’’ বাজারের আর এক স্টলের দোকানদার তথা কৃষক বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সম্পাদক তারকনাথ পাত্র বলেন, ‘‘কিসান মান্ডির প্রত্যেককে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। পাঁশকুড়া স্টেশন বাজারের ব্যবসায়ীরা কিসান মান্ডিতে এলে যদি কিছুটা সুরাহা হয়। এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে জানিয়েছি।’’

সরকারি কৃষক বাজারে অচলাবস্থার কথা স্বীকার করছেন বাজার পরিচালন কমিটির সদস্য তথা পাঁশকুড়া পুরসভার পুরপ্রধান জাকিউর রহমান খানও। তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাই পাঁশকুড়া স্টেশন সংলগ্ন সব্জি বাজার সরকারি কৃষক বাজারে স্থানান্তর করা হোক।’’ তাঁর কথায়, ‘‘যদিও স্টেশন সংলগ্ন বাজারের প্রায় সাড়ে ৪০০ জন সব্জি ব্যবসায়ীকে কিসান মান্ডিতে জায়গা দিতে না পারলে তা সম্ভব হবে না। জেলা প্রশাসনকে এ বিষয়ে জানিয়েছি।’’

জেলা রেগুলেটেড মার্কেট কমিটির সচিব জহিরুল ইসলামেরও বক্তব্য, ‘‘কৃষক বাজারে ব্যবসা বাড়াতে পদেক্ষেপ করা হচ্ছে। স্টেশন বাজারের সব্জি ও ফল ব্যবসায়ীরা যাতে কিসান মান্ডিতে এসে ব্যবসা করেন সে জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সম্প্রতি এ বিষয়ে এক বৈঠকে স্টেশন বাজারের ব্যবসায়ীদের থেকে ইতিবাচক সাড়াও মিলেছে। মান্ডিতে আরও নতুন স্টল তৈরির জন্য চেষ্টা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

station market lease
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE