প্রতীকী চিত্র।
‘অসুস্থ’ বন্দির সিগারেটে সুখটান দেওয়ার ভিডিয়ো সামনে এসেছে সম্প্রতি। সেই ‘অসুস্থ’ বন্দি আনিসুর রহমান মঙ্গলবার গরহাজির থাকল তৃণমূল নেতা কুরবান শা হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণে। আইনজীবী সূত্রের খবর, ওই মামলার বন্দিদের হাজিরা না হওয়ায় এ দিন পিছিয়ে গিয়েছে সাক্ষ্যগ্রহণ। পাশাপাশি, কুরবানের দাদা আফজল শা অভিযোগ করেছেন, এ দিন হত্যা মামলার দু’জন সাক্ষীকে পাঁশকুড়ার মাইশোরা থেকে আদালতে নিয়ে গিয়েছে আনিসুরের অনুগামীরা। ওই সাক্ষীদের এ ভাবে প্রভাবিত করা হচ্ছে বলে দাবি আফজলের।
এ দিন পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে (৩) কুরবান হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ছিল। নিয়ম অনুযায়ী, সাক্ষ্যগ্রহণের দিন সব অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করাতে হয়। আইনজীবী সূত্রের খবর, এ দিন ওই হত্যা মামলার অভিযুক্তদের সশরীরে আদালতে হাজির করেননি তমলুক উপসংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। ফলে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। আগামী ১০ অগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন বিচারক।
কুরবান শার পরিবারের পক্ষের আইনজীবী অমিতাভ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তমলুক উপ সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ এ দিন অভিযুক্তদের আদালতে হাজির না করানোয় মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। আগামী ১০ অগস্ট পরবর্তী দিন ধার্য হয়েছে। আনিসুর রহমানের চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি পেশ করার জন্যও কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।’’
কেন এ দিন হাজির করা হল না আনিসুরকে? এ ব্যাপারে কারা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘অসুস্থ থাকার জন্য তাঁকে আদালতে হাজির করানো যায়নি। অন্যদের ভার্চুয়াল হাজিরা হয়েছে।’’
উল্লেখ্য, অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে প্রায় ছ’মাস ধরে তমলুক জেলা হাসপাতালে রয়েছেন মামলার মূল অভিযুক্ত আনিসুর রহমান। গত ২ জুলাই কলকাতা হাইকোর্ট রায় দেয় যে, আনিসুরকে কলকাতার কোনও সরকারি হাসপাতালে এনে চিকিৎসা করাতে হবে। কুরবানের পরিবাররে অভিযোগ, হাইকোর্টর রায়কে কার্যত অগ্রাহ্য করে তমলুক উপ সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ আনিসুরকে তমলুক হাসপাতালেই রেখে দিয়েছেন।
সম্প্রতি হাসপাতালে বসে আনিসুরের মোবাইল ব্যবহার ও ধূমপানের ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর এ দিন তমলুক হাসপাতাল আনিসুরকে কলকাতায় স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়। তমলুক হাসপাতাল সূত্রে খবর, এ দিন দুপুর দেড়টার সময় আনিসুরের ডিসচার্জ সার্টিফিকেট প্রস্তুত হয়ে গেলেও তাঁকে রাত পর্যন্ত স্থানান্তর করা যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে আমরা আনিসুর রহমানকে ছেড়ে দিয়েছি। তাঁকে স্থানান্তরের বিষয়টি দেখবে একটি মেডিক্যাল টিম।’’
কুরবানের দাদার অভিযোগ, এদিন সকাল ৯টা নাগাদ আনিসুরের দুই অনুগামী মাইশোরায় এসে মামলার দু’জন সাক্ষীকে গাড়িতে তুলে নিয়ে আদালতের পথে রওনা দেয়। ওই সাক্ষীদের আগে থেকে ভয় এবং টাকার প্রলোভন দেখানো হয়েছিল বলে অভিযোগ আফজলের। তাঁ কথায়, ‘‘আমার গাড়ির চালক এবং ইরমান শা-কে অপহরণের ঘটনায় যাঁরা অভিযুক্ত ছিল, তারাই এ দিন সাক্ষীদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। আনিসুর মামলা প্রভাবিত করছে।’’
আফজল এবং ইমারানের বিরুদদ্ধে সম্প্রতি ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আফজল বলেন, ‘‘আমার ও ইমরানের বিরুদ্ধে যে মহিলা ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন, তাঁকে আনিসুরই টাকার টোপ দিয়ে অভিযোগ করিয়েছে। আইনি লড়াইয়ে না পেরে, ও এভাবে আমাদের ঠেকাতে চাইছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy